সাদ্দামের মৃত্যুর এত বছর পরও ইরাকে গুম-আতঙ্ক
সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুর ১৭ বছর পরও তার শাসনামলের আতঙ্ক তাড়া করে ফেরে ইরাকের কয়েক লাখ স্বজনহারা মানুষকে৷ এখনো এক গণকবর থেকে আরেক গণকবরে পরম আপনদের খোঁজেন তারা৷ দেখুন ছবিঘরে...
ভাইয়ের অপেক্ষায় ২২ বছর
প্রকৌশলী হাজেম মোহাম্মদ এবং তার ভাইকে গুলি করা হয়েছিল ১৯৯১-এ সাদ্দামবিরোধী আন্দোলনের উত্তাল সময়টায়৷ ভাইকে মেরে গণকবরে মাটিচাপা দেয় সাদ্দামের বাহিনী৷ কিন্তু দুটি গুলি খেয়েও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান হাজেম৷ ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাকে অভিযান শুরু করার পর হাজেমের মনে হয় সাদ্দাম ক্ষমতাচ্যুত হলে ভাইয়ের লাশ গণকবর থেকে তোলা যাবে৷ সাদ্দামের মৃত্যুর ১৭ বছর হয়ে গেল, এখনো আশা পূরণ হয়নি হাজেমের৷
সাদ্দাম যায়, আল কায়েদা, আইএস আসে
সাদ্দামের শাসনামলে নিহতদের মৃতদেহ এবং পরিচয় উদ্ধারের কাজ শুরু হয়৷ তবে খুব মন্থর গতিতে চলছিল সেই কাজ৷ তাই হাজেম মোহাম্মদের মতো অনেকেই চিরতরে হারানো স্বজনদের খোঁজ পাওয়ার আশা হারাতে বসেন৷ তারপর বিভিন্ন সময় আল কায়েদা, ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং শিয়া মুসলমানদের নানা আধা সামরিক বাহিনীও হত্যালীলা চালালে হাজেম মোহাম্মদদের মন থেকে মুছে যেতে থাকে শহিদ স্বজনদের খোঁজ পাওয়ার আশা৷
২৬০টিরও বেশি গণকবর
ইরাকের মার্টায়ার্স ফাউন্ডেশন জানাচ্ছে, এ পর্যন্ত ২৬০টিরও বেশি গণকবরের সন্ধান পেয়েছে তারা৷ আরো গণকবর এবং গণকবরে শায়িত শহিদদের দেহাবশেষ উদ্ধারের কাজ করে যাচ্ছে তারা৷ সংগঠনটির প্রধান ইয়াসমিন সিদ্দিক জানান, এ মুহূর্তে আইএস-এর বর্বরতার শিকারদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করাকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে৷ সম্প্রতি ক্যাম্প স্পাইসারে বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছেন তারা৷ সেখানে অন্তত ২০০০ জনকে হত্যা করেছিল আইএস৷
মার্টায়ার্সের ১০০ ‘যোদ্ধা’
গণকবর থেকে শহিদদের দেহাবশেষ উদ্ধার ও তাদের পরিচয় জানার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মার্টায়ার্স ফাউন্ডেশনের ১০০ জনের একটি দল৷ ছবিতে তাদের কর্মমুখর একটি মুহূর্ত৷
বাড়ছে শহিদের সংখ্যা
মার্টায়ার্স ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মেহেদি ইব্রাহিম জানান, এ পর্যন্ত তারা প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে৷ সংখ্যাটা দ্রুত বাড়ছে, কারণ, প্রতি সপ্তাহে নতুন করে অন্তত ২০০ জনের সম্পর্কে জানতে পারছেন তারা৷