1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মার্কিন নির্বাচন

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১২

মার্কিন মুলুকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিতর্ক যেন এবার আর সব বিষয় ছেড়ে একটি বিষয়ে এসে ঠেকেছে: একদিকে অতি রক্ষণশীল মিট রমনি, অন্যদিকে ক্রমেই আরো উদারপন্থি বারাক ওবামা৷

https://p.dw.com/p/16DRE
ছবি: Getty Images

মিট রমনি এককালে সহকর্মীদের সমকামিতা নিয়ে বিশেষ উত্তেজিত হয়ে পড়তেন না৷ ম্যাসাচুসেটসের গভর্নর নির্বাচনে প্রার্থী হবার সময় রমনি বলেছিলেন, এই রাজ্যে মহিলাদের যে গর্ভপাতের অধিকার আছে, গভর্নর হলে তিনি সে আইনের কোনো রদবদল করবেন না৷

ইত্যবসরে রমনি কিন্তু আরো ডানঘেঁষা হয়ে পড়েছেন৷ বিবাহের সংজ্ঞা তাঁর কাছে হয়ে দাঁড়িয়েছে: ‘‘একজন পুরুষ আর একজন মহিলার মধ্যে বন্ধন''৷ এমনকি তিনি মার্কিন সংবিধানেও এই সংজ্ঞা দেখতে চান৷ তিনি এখন গর্ভপাতের বিরোধী এবং ১৯৭৩ সালে আদালতের যে রায়ে মহিলাদের গর্ভপাতের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, আদালত সে রায় প্রত্যাহার করুক, এই হল রমনির দাবি৷

রমনি এখন তাঁর দলের রক্ষণশীল তৃণমূলের সমর্থন পেতে সচেষ্ট৷ ‘‘দৃশ্যত তাঁর কোনো স্থায়ী, বুনিয়াদি মূল্যবোধ বা অবস্থান নেই,'' রাষ্ট্রবিজ্ঞানী টোমাস মান ডয়চে ভেলে'কে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন৷ অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনের পর রমনির তাঁর উদারপন্থি অবস্থানগুলোয় ফেরার কোনো পথ থাকবে না৷ নয়তো তাঁর কোনো পক্ষেই কোনো সমর্থন থাকবে না৷

Mitt Romney Replace Obamacare
মিট রমনিছবি: picture alliance/ZUMAPRESS.com

তবে রমনির প্রতিদ্বন্দ্বী ওবামাও তাঁর অবস্থান বদলেছেন, যেমন সমকামীদের বিবাহের ব্যাপারে৷ গত মে মাসে তাঁকে বলতে শোনা যায়, নারী-নারী কিংবা পুরুষ-পুরুষ বিবাহ সম্ভব হওয়া উচিত৷ এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, অ্যামেরিকায় জনমত সম্প্রতি এ'ধরণের সমকামী বিবাহের দিকে ঝুঁকেছে, বিশেষ করে ওবামার ডেমক্র্যাট দলে উদারপন্থি হাওয়া লাগার ফলে৷ সেই সঙ্গে রয়েছে তরুণ ভোটাররা এবং নিরপেক্ষ ভোটাররা৷ কাজেই ওবামাও সেই হাওয়াতেই পাল ভাসিয়েছেন৷

গর্ভপাতের ক্ষেত্রেও হাওয়া বদলাচ্ছে, কিন্তু বইছে উল্টোদিকে৷ সমকামী বিবাহের চেয়ে এখানে লোকে অনেক বেশি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে, মাথা গরম করে৷ গর্ভপাত বিরোধীরা গত কয়েক বছরে অ্যামেরিকার জনগণের একটা সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশকে তাদের দিকে টানতে পেরেছে৷ ওবামা কিন্তু গোড়া থেকেই মহিলাদের গর্ভপাতের অধিকারের সপক্ষে৷

অভিবাসন নীতির ক্ষেত্রেও দুই প্রার্থীর দু'রকম মনোভাব৷ অ্যামেরিকায় যে আনুমানিক এক কোটি দশ লক্ষ অভিবাসী-বহিরাগত বেআইনিভাবে বাস করছে, ওবামা তাদের বৈধতা দিতে চান৷ ওদিকে রিপাবলিকানরা সে আইন রুখে আসছে৷ ওবামা স্বয়ং ডিক্রি জারি করে তরুণ অভিবাসীদের কিছুটা থাকার সুযোগ দিলেও, তাঁর প্রশাসন কিন্তু কড়া হাতে বেআইনি অধিবাসীদের বহিষ্কার করে আসছে৷ রমনি আবার কোনো অভিবাসীর অতীতের ভুলত্রুটি ক্ষমা করতে রাজি নন৷ তিনি যাবতীয় রাজক্ষমার বিরোধী৷ এবং তিনি মেক্সিকো সীমান্তে একটি হাই-টেক বেড়া তোলার সপক্ষে৷

এই তিনটি ‘সামাজিক' বিষয়ের মধ্যে অভিবাসনকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী টোমাস মান, কেননা দেশে লাতিনোদের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে৷ এবং তাদের কাছে এই অভিবাসন নীতির ব্যাপারটার একটা উচ্চ প্রতীকি মূল্য আছে, এমনকি তারা নিজে সরাসরি তার আওতায় না পড়লেও৷ বুশের আমল থেকেই এই লাতিনো গোষ্ঠী ডেমক্র্যাট এবং ওবামার দিকে ঝুঁকছে৷

তবে দুই প্রার্থীর প্রচার অভিযান যে শুধু গর্ভপাত, অভিবাসন অথবা সমকামী বিবাহ নিয়ে, এটা ভাবলে ভুল হবে৷ অর্থনীতির গুরুত্ব পূর্বাপর থেকে যাচ্ছে৷ তবে দীর্ঘমেয়াদি সূত্রে অভিবাসন এবং সমকামী বিবাহ সম্পর্কে দুই তরফের মনোভাব এই নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করতে পারে, বলে টোমাস মানের ধারণা৷ বিশেষ করে যদি অভিবাসন প্রসঙ্গে লাতিনো ভোটাররা এবং সমকামী বিবাহ প্রসঙ্গে তরুণ ভোটাররা ওবামার দিকে ঝোঁকে৷

প্রতিবেদন: ক্রিস্টিনা ব্যার্গমান / এসি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য