সামাজিক নেটওয়ার্কের উপযোগিতা নিয়ে দ্বিমত
২ জুলাই ২০১১ইন্টারনেটের সুবাদে গোটা বিশ্ব যেন আজ একটি গ্লোবাল ভিলেজ৷ সীমান্ত আর ভাষার বাধন ছিন্ন করে কোটি কোটি মানুষকে একই বিন্দুতে দাঁড় করিয়েছে এই নেটওয়ার্ক৷ কিন্তু কেবল দেশ বিদেশের নানা মতের আর পথের মিলনই কী এই ইন্টারনেটের সুফল? স্বৈরশাসক কিংবা গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে যে কোন তথ্য এখন মুহুর্তে চলে যাচ্ছে এই গ্রহের আনাচে কানাচে৷ তিউনিসিয়া ও মিশরের বিপ্লব কিংবা ইরানের নির্বাচন পরবর্তী প্রতিবাদ এসবই ইন্টারনেট যুগের তাজা উদাহরণ৷
কিন্তু যুগে যুগে দেখা গেছে, আধুনিকতম প্রযুক্তিটি ব্যবহৃত হয় শাসককুলের হাতিয়ার হিসেবে৷ মাত্র কয়েকদিন আগে এক বক্তব্যে সেটি মনে করিয়ে দিয়েছেন উইকিলিক্স এর প্রধান জুলিয়ান আসাঞ্জ৷ এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ইন্টারনেটে প্রতারণা৷ সর্বশেষ দেখা গেল যেমন, দুইজন সমকামী নারী ব্লগারের পরিচয় উদঘাটিত হওয়ার পর জানা গেল তারা আসলে দুইজন পুরুষ৷ তাই এখন প্রশ্ন উঠছে, এই ইন্টারনেট বা সামাজিক নেটওয়ার্ক সমাজে পরিবর্তন আনতে কতটুকু সহায়ক?
এক্ষেত্রে অনেকে খুব আশাবাদী নন৷ তাদের মতে তিউনিসিয়া এবং মিশর ব্যতিক্রমী উদাহরণ৷ তাই ইন্টারনেট দিয়েই রাতারাতি সব পরিবর্তন আনা যাবে সেটা ভাবা ঠিক হবে না৷ যেমন নামকরা ব্লগ Netzpolitik.org এর সম্পাদক মার্কুস বেকেনডার৷ তিনি চীনের উদাহরণ দিয়ে জানান, সেদেশে এত ইন্টারনেট ব্যবহারকারী থাকা সত্ত্বেও সরকারের কড়া নজরদারী রয়েছে৷ অন্যদিকে ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর পেটার ক্রুস বলেন, ফেসবুকের গ্রুপে একটি ক্লিক করে প্রতিবাদ জানানোর অর্থ এই নয় যে তারা রাজপথে গিয়েও প্রতিবাদ জানাবে৷ তবে এইভাবে প্রতিবাদী জনতাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তোলা যায়, বলেন প্রফেসর পেটার ক্রুস৷
এরপরও অনেকে আশাবাদী, তারা মনে করেন ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটি জনমত খুব দ্রুত গড়ে তোলা সম্ভব৷ যেমন ম্যুন্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ ম্যোলার৷ তিনি বলেন, সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশের একটি অংশ জানতে পারে অন্য অংশের মানুষ কী চাইছে৷ এছাড়া এতে ঝুঁকিও কম৷ কারণ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানালে গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, ইন্টারনেটে ঝুঁকি অনেক কম৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক