1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সামুদ্রিক শুশুক

ভানেসা ফিশার/এসি২৭ মে ২০১৫

ডুগং কিংবা মান্টা রে: একটি সামুদ্রিক শুশুক; অন্যটি সুবিশাল এক মাছ, যা পাখা মেলে – না, ওড়ে না, বরং সাঁতার কাটে! আফ্রিকার মোজাম্বিকের উপকূলে আজও এদের দেখা যাবে – কিন্তু আর কতোদিন?

https://p.dw.com/p/1FWNQ
Delphin im Delfinarium in Moskau
ছবি: picture-alliance/dpa/Alexandra Mudrats

ডুগং কিংবা মান্টা রে: একটি সামুদ্রিক শুশুক; অন্যটি সুবিশাল এক মাছ, যা পাখা মেলে – না, ওড়ে না, বরং সাঁতার কাটে! আফ্রিকার মোজাম্বিকের উপকূলে আজও এদের দেখা যাবে – কিন্তু আর কতোদিন?

ডুবুরিদের ডুগং জাতীয় শুশুকদের কাছে যেতে হয় অতি সন্তর্পণে, প্রায় দম বন্ধ করে৷ কেননা ডুগং-রা অতি ভীরু, সাবধানী জীব৷ মেরিন মেগাফনা ফাউন্ডেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা আন্দ্রেয়া মার্শাল সে কথা জানেন, ‘‘এই সংরক্ষিত এলাকাটি মেগাফুনা গোত্রের প্রজাতিগুলির পক্ষে বিশেষভাবে জরুরি, বিশেষ করে মান্টা রে ও ডুগং-দের জন্য৷ বলতে কি, আফ্রিকায় ডুগং-দের এটাই শেষ বাসস্থান৷ এখানকার উপকূল অঞ্চলে যে ডুগং-রা বাস করে, তাদের মধ্যে এরাই হল শেষ গোষ্ঠী, যারা স্বাধীনভাবে টিকে থাকতে সমর্থ৷ মান্টা রে-র জন্যও এটা একটা আশ্চর্য স্থান; বিশ্বের আর কোথাও আমি এ রকম একটা জায়গা দেখিনি, যেখানে উভয় প্রজাতির মান্টা রে দেখতে পাওয়া যায়৷ কাজেই এটা মান্টা রে-দের পক্ষে একটি অতীব জরুরি হ্যাবিট্যাট৷ যে কারণে আমি দক্ষিণ মোজাম্বিকে গবেষণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷''

Neugeborener Delfin mit Mutter
ছবি: picture alliance/dpa

জীববিজ্ঞানী আন্দ্রেয়া গত ১৩ বছর ধরে এখানে গবেষণা চালাচ্ছেন – বলতে কি, জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে৷ নানা ধরনের মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীরা এখানে বংশবৃদ্ধি করে৷ তবে সংরক্ষিত এলাকা হওয়া সত্ত্বেও মাছের সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে৷

রেঞ্জার

টোমাস মানাসে-র জন্ম এখানেই৷ আজ তিনি এই ন্যাশনাল পার্কের ২৩ জন রেঞ্জারের প্রধান৷ তবে এখানে কাজ এতো বেশি যে, আরো কর্মীর প্রয়োজন, জানালেন টোমাস৷

রেঞ্জাররা টহলদারি করেন, তথ্য সংগ্রহ করেন, সেই তথ্য মিলিয়ে দেখেন৷ দ্বীপগুলিতে কৃষিকাজ সীমিত করার প্রয়োজন আছে কি? কোথায় মাছ ধরা কমাতে হবে, কোথায় তা একেবারেই নিষিদ্ধ করতে হবে৷ টোমাস ও তাঁর ভাইরা হলেন তাঁদের পরিবারের প্রথম প্রজন্ম, মৎস্যশিকার যাদের জীবিকা নয়৷ শুধু এ ভাবেই এ অঞ্চলকে বাঁচানো সম্ভব, বলে টোমাস মনে করেন৷

কিন্তু মাছ ধরার কোনো বিকল্প আছে কি? পর্যটন? আন্দ্রেয়া মার্শাল ও তাঁর দল ১০ জন পার্ক রেঞ্জারকে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য ডেকে পাঠিয়েছেন৷ এটাই হবে এ বিষয়ে তাদের প্রথম প্রশিক্ষণ৷

বাজারুতো ন্যাশনাল পার্কের অধ্যক্ষা রিকার্ডিনা মাটুসে সদ্য দায়িত্ব নিয়েছেন৷ সে যাবৎ সকলেই খুব উৎসাহ নিয়ে কাজ করছেন৷ রেঞ্জাররা মানচিত্রে দেখাচ্ছেন, তাঁরা ঠিক কোথায় কোন প্রাণীগুলিকে দেখেছেন; তারপর সেই তথ্য গবেষকদের সঙ্গে মিলিয়ে দেখছেন৷ মাটুসে জানালেন প্রশিক্ষণ থেকে তাঁর আশার কথা, ‘‘পন্থাটা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ আমার মনে হয়, এটা সহযোগিতার সূচনা৷ এর পরে আরো অনেক কিছু আসবে৷ শেষমেষ আমরা নিজেরাই ডুবুরি হয়ে টুরিস্টদের এই সব সামুদ্রিক মাছ ও প্রাণী দেখাতে পারব৷''

Fisch Dorsch
ছবি: by-nc-sa/Joachim S. Müller

জলে না নামিলে কেহ...

মাটি ছেড়ে জলে নামতেই ভয়! সকলে যে সাঁতার জানে, এমনও নয়৷ বহু জেলে কোনোদিন সাঁতার শেখেনি৷ কিন্তু আজ অনেকেই বলছে: আমরা প্রবালদ্বীপে নামব কী করে আর বিপদের মুখে সাগরের প্রাণীদেরই বা বাঁচাব কী করে, যদি আমরা জলে না নামি?

ট্রেনিং-এর শেষে সকলেই এই প্রথমবার সাগরের জলে সাঁতার কাটবেন৷ আন্দ্রেয়া মার্শাল-কে এই সব রেঞ্জারদের উপরেই নির্ভর করতে হবে৷

প্রত্যেকবার ডুবুরিরা ফেরার পর আন্দ্রেয়া মার্শাল তাদের তোলা ছবিগুলো খুঁটিয়ে দেখেন৷ প্রত্যেক মান্টা রে-র কতোগুলো বিশেষ চিহ্ন আছে, যা দিয়ে তাদের চেনা যায়৷ এছাড়া ডিএনএ-র নমুনাগুলোও ডাটা ব্যাংকের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা চলে৷ আন্দ্রেয়া জানালেন, ‘‘মোজাম্বিকের পক্ষে মান্টা রে-গুলো একটা বড় রোজগারের পথ৷ বিশ্বের যে সব দেশ আজ মান্টা রে টুরিজম থেকে অর্থোপার্জন করছে, তাদের মধ্যে মোজাম্বিক চতুর্থ স্থানে৷ ডাইভিং করে মান্টা রে দেখার যে টুরিজম, তা থেকে আজ মোজাম্বিকের আয় বছরে ৭০ থেকে ৮০ লাখ ডলার৷ কাজেই সরকার হয়তো একদিন বলতে বাধ্য হবে: এই প্রাণীটিকে বাঁচিয়ে রাখলে আমাদের যতো লাভ, মেরে ফেললে ততোটা লাভ নেই৷ গত আট থেকে দশ বছরে এখানকার মান্টা রে পপুলেশনের প্রায় ৮৮ ভাগ উধাও হয়েছে৷ মান্টা রে এ অঞ্চল থেকে পুরোপুরি লুপ্ত হওয়ার আগে তাদের সংখ্যা আরো বাড়ানোর জন্য আমাদের হাতে বিশেষ সময় নেই৷''

অথচ এই মান্টা রে-ই কিন্তু মোজাম্বিকের আইনে সংরক্ষিত প্রজাতি নয়!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান