সারাবিশ্বে বাড়ির দাম পড়ছে
সারাবিশ্বে রিয়েল এস্টেটের বাজার হঠাৎ করে পড়তির দিকে৷ অস্ট্রেলিয়া, এশিয়ার কয়েকটি দেশ ও উত্তর অ্যামেরিকার শেয়ার বাজারে দাম সংশোধিত হচ্ছে৷
অস্ট্রেলিয়াতে কঠিন পতন
গত ১৫ বছরে অস্ট্রেলিয়াতে এতটা পড়েনি রিয়েল এস্টেটের বাজার৷ সিডনিতে এক বছরেই পড়েছে ১০ ভাগ৷ অথচ অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক অগ্রগতির কারণে গত এক দশকে সিডনিতে বাড়ির দাম দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল৷ বলা হচ্ছে, বাড়ি মর্টগেজ রেখে ধার নেয়ার শর্তগুলো কঠিন করে রাখা দাম পড়ার একটা বড় কারণ৷
ব্যাংককেও শীতল ভবনের বাজার
গত পাঁচ বছরে চীনা বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কারণে ব্যাংককের কনডোমিনিয়ামগুলোর দাম বছরপ্রতি ৫ থেকে ১০ ভাগ বেড়েছিল৷ এতে করে হিড়িক পড়ে যায় বহুতল ভবন নির্মাণের৷ কিন্তু দেখা গেছে, গত বছরে বিক্রি হয়নি ৪০ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট৷ এ বছর সেখানে আরো ৫৩ হাজার নতুন অ্যাপার্টমেন্ট যুক্ত হচ্ছে৷ তাই ঠান্ডা হাওয়া বইছে সেখানেও৷
ব্রেক্সিটের দরকষাকষিতে লন্ডন
চীনা, রাশিয়ান ও মধ্যপ্রাচ্যের ধনীদের বিনিয়োগের একসময়কার নিরাপদ স্বর্গ ছিল ব্রিটিশ রাজধানী৷ কিন্তু ব্রেক্সিটের অনিশ্চয়তায় তাতে ভাটা পড়েছে৷ দেশটির বাজারে তাই মন্দাভাব চলছে টানা দ্বিতীয় বছর৷ লন্ডনে অনেক নতুন নতুন অ্যাপার্টমেন্ট খালি পড়ে আছে৷ এ বছর দেশটিতে আরো ৫০০ নতুন ভবন তৈরি হবে৷ তাই বাজার আরো নিম্নগামী হবে বলেই মনে হচ্ছে৷
চীনেও দাম কমছে
চীনেরও অনেকগুলো শহরে ভূসম্পত্তির দাম কমছে৷ এ কারণে গত বছর বেশ কয়েকটি রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের অফিসের বাইরে বিক্ষোভও হয়েছে৷ তবে বেইজিং ও সাংহাইতে অ্যাপার্টমেন্ট বা ভূমির দাম বাড়ছে হু হু করে৷ এতে শঙ্কিত অনেকেই৷ কারণ, এমন দাম বৃদ্ধি হলে বাজারে ধসের আশঙ্কা থাকে৷ অন্যদিকে, অনেক শহরে সুলভে ভবন বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি করা হচ্ছে৷ সেগুলো বিক্রিও হচ্ছে দেদারসে৷
ভ্যানকুভারের বাজারে ব্যাপক সংশোধন
১৫ বছর ধরে ক্যানাডিয়ান রিয়েল এস্টেটের যে ‘বাবল’ তৈরি হয়েছিল, তাতে দাম বেড়েছে ৩৩৭ শতাংশ৷ তবে ক্রমবর্ধমান এই দরবৃদ্ধির ইতি ঘটেছে৷ শুধু ভ্যানকুভারেই ২০১৮ সালে তিনভাগের একভাগ বিক্রি কমে গেছে৷ দাম কমেছে ১০ ভাগ৷ তবে টরন্টোতে এখনো মন্দাভাব সেভাবে স্পর্শ করেনি৷ কারণ, সেখানে শুধু স্থানীয় নয়, আন্তর্জাতিক চাহিদাও রয়েছে৷
ইস্তানবুলে দরকষাকষি
তুরস্কে মুদ্রার দরপতন ও সুদের হার নিয়ে জটিলতার কারণে এর বাজার থমকে গেছে৷ মার্কিন ডলারের বিপরীতে লিরার দাম কমেছে ৪০ ভাগ এবং সুদের হার বেড়েছে ২৪ ভাগ৷ তাই মর্টগেজ দেয়ার হার কমে গেছে ৮০ ভাগ৷ ইস্তানবুলে বেশ অনেক বছর ধরেই ভূ-সম্পত্তির জোগান বেশি৷
সিঙ্গাপুরেও শীতল হাওয়া
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৯ সালে সিঙ্গাপুরে প্রপার্টির দাম ৫ ভাগ পর্যন্ত কমে যেতে পারে৷ এর কারণ, গত চার বছরে দরবৃদ্ধির পর এ বছর সরকারই চাইছে বাজার কিছুটা শীতল থাকুক৷
হংকংয়ে মূল্য সাশ্রয়
হংকংয়ের প্রপার্টি মার্কেটেও কিছুটা সংশোধন আসছে৷ গত গ্রীষ্মের পর থেকে ৭ ভাগ কমেছে দাম৷ ২০১৯ সালে আরো ১৫ ভাগ পর্যন্ত দাম কমবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা৷