‘সার্ক’এর পরিচয় এখনো রাজনৈতিক মাত্রা পায় নি’
১৪ নভেম্বর ২০১১সার্ক'এর বর্তমান অবস্থার মূল্যায়ন করেছেন ভারতের রাজনীতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অশ্বিনী কুমার রায়৷ তাঁর মতে, এই রাষ্ট্রজোট একেবারে কৃত্রিম এক সৃষ্টি৷ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের শেষে ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে আজকের রাষ্ট্রগুলির জন্ম হয়েছে৷ শুধু আফগানিস্তানের মতো দেশকে আলাদা করে সার্ক'এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ এই দেশগুলিরও জাতীয় পরিচয় এখনো তৈরি হয় নি বলে মনে করেন অধ্যাপক রায়৷ বিশেষ করে ভারত সম্পর্কে তাদের দুশ্চিন্তা ও সন্দেহ রয়ে গেছে৷ ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কও গোটা অঞ্চলের দুশ্চিন্তার আরেকটি কারণ৷ এবারের সম্মেলন জুড়েও ছিল দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়াটি৷ সার্ক'এর কাঠামোয় দ্বিপাক্ষিক বিষয় আলোচনা করার বিধান নেই৷ তাই সম্মেলনের পাশাপাশি এমন বৈঠক হয়ে থাকে৷ ফলে সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়, সাফ গেমস সহ কিছু ছোটখাটো উদ্যোগ ছাড়া সার্ক এখনো উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখাতে পারে নি৷ বিশেষ করে অর্থনৈতিক ইউনিয়নের ধারেকাছে যেতে পারে নি সার্ক৷
এই অবস্থায় বিভিন্ন দেশের মধ্যে ‘ট্র্যাক টু' বা সমান্তরাল সহযোগিতার প্রবণতা বেড়ে চলেছে৷ ভারতের সঙ্গে আঞ্চলিক দেশগুলির বোঝাপড়া যেমন হচ্ছে, তাদের নিজেদের মধ্যেও এমন সম্পর্ক বাড়ছে৷ সুশীল সমাজের মধ্যে সংলাপও এই ‘ট্র্যাক টু' কুটনীতির অঙ্গ৷
বর্তমান বিশ্বে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকটের ফলে চাপে পড়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক নির্ভরতার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ সার্ক স্তরেও কি এর সুফল দেখা যাবে? এই প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক রায় বললেন, দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে এই চাপ শুরু থেকেই ছিল৷ আঞ্চলিক স্তরে অর্থনৈতিক সুফলের কথা জানা সত্ত্বেও কার্যক্ষেত্রে তেমন কিছু হয় নি৷
সাক্ষাৎকার: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক