সিএনজি’র দাম আবার বেড়ে গেল
১২ মে ২০১১প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম বেড়েছে ৮ টাকা ২৫ পয়সা৷ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন অবশ্য স্বীকার করেছেন, সিএনজির দাম বৃদ্ধির ফলে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়বে৷ তবে কি পরিমাণ বাড়বে তা তিনি বলতে পারেননি৷
সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস সংক্ষেপে সিএনজি'র দাম ৪৯ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে৷ প্রতি ঘনমিটার ১৬ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৫ টাকা করা হয়েছে৷ এতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম বেড়েছে ৮ টাকা ২৫ পয়সা৷ বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে এই মূল্য বৃদ্ধি কার্যকর হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়৷ কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলেন, যারা সমাজে আর্থিকভাবে সচ্ছল বা বিত্তশালী তারা কম দামে এই গ্যাস পাচ্ছে৷ তাদেরকে ভর্তুকি দিয়ে এই গ্যাস দেয়ার কোনো কারণ নেই৷ তাছাড়া সিএনজি গ্যাসের দাম কম হওয়ার কারণে গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে৷ এতে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে৷
সাংবাদিক সম্মেলনে কমিশনের দু'জন সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ ও মো. ইমদাদুল হক উপস্থিত ছিলেন৷ সিএনজির দাম বাড়ানোতে গণপরিবহনে কতটা প্রভাব পড়বে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ ইউসুফ হোসেন জানান, সিএনজির মূল্য বৃদ্ধিতে বাস-ট্রাকের ভাড়া বাড়বে৷ তবে কি পরিমাণ বাড়বে এর কোনো পর্যালোচনা কমিশন করেনি৷
দাম বৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, যখন কোনো জ্বালানি পণ্যের ব্যবহার অন্য কোনো জ্বালানি পণ্য দ্বারা পরিবর্তিত হয় তখন আন্তর্জাতিক নিয়ম হলো দু'টোর মূল্যের মধ্যে সমন্বয় করা৷ কিন্তু আমাদের দেশে সিএনজির মূল্য অন্যান্য জ্বালানি তেলের চেয়ে অনেক কম৷ মূল্য বৃদ্ধির পরও ডিজেলের চেয়ে সিএনজির মূল্য ৪৭ শতাংশ কম৷ আর অকটেনের চেয়ে ৭১ শতাংশ৷ যেখানে ভারতে ডিজেলের চেয়ে সিএনজির মূল্য ২৮ শতাংশ কম৷
তবে সিএনজি ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন নয়ন বলেন, পেট্রোবাংলার প্রস্তাব অনুযায়ীই কমিশন সিএনজির দাম বাড়িয়েছে৷ গণশুনানি বা ভোক্তাদের মতামতের কোনো গুরুত্ব দেয়নি৷ অ্যাসোসিয়েশন অফ বাস কোম্পানিজের সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে প্রতি কিলোমিটার বাস ভাড়া ১ টাকা ২০ পয়সা৷ সিএনজির মূল্য বৃদ্ধির ফলে বাস ভাড়া বাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই৷ তিনি বলেন, কিলোমিটার প্রতি বাস ভাড়া ২ টাকা ৫৫ পয়সা পর্যন্ত বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের কাছে দাবি জানানো হবে৷
সিএনজির দাম বাড়ানোতে সরকারের বছরে এক হাজার ১২১ কোটি টাকা বাড়তি আয় হবে৷ দাম বাড়ানোর আগে বছরে এই খাত থেকে এক হাজার ১২৯ কোটি টাকা আয় হতো৷ এখন মোট দুই হাজার ২৫০ কোটি টাকা আয় হবে৷
দাম বাড়ানোর সাথে সাথে সিএনজি স্টেশন মালিকদের কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে৷ এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে প্রত্যেক স্টেশনে এখন থেকে শব্দ দূষণ গ্রহণযোগ্য মাত্রায় আনতে হবে৷ স্টেশনের যন্ত্রাংশ প্রত্যেক মাসে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে৷ বিক্রি করা সিএনজির পরিমাপ সঠিক হতে হবে৷ মাপ সঠিক না হলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে। অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে৷
প্রতিবেদন: সমীর কুমার দে, ঢাকা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক