সিঙ্গাপুরে কাজ
৬ মার্চ ২০১২১৯ বছরের এক ইন্দোনেশীয় মেয়ে এখন সিঙ্গাপুরের কারাগারে জেল খাটছে৷ কারণ সে তার সিঙ্গাপুরীয় গৃহকর্ত্রীকে খুন করেছে৷ জানা গেছে, ঐ গৃহকর্ত্রী প্রায়ই বকাঝকা বা নির্যাতন করতো৷ ফলে একসময় ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে একেবারে খুনই করে ফেলা হয় তাকে৷
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, গৃহপরিচারিকাদের একটানা ছুটিবিহীন কাজ করতে হয়৷ ফলে একসময় তারা হতাশা বা অবসাদে ভুগতে শুরু করে৷ একাকিত্ব ভর করে তাদের৷ ফলে খুনের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়৷ এর থেকে মুক্তির উপায় হলো সাপ্তাহিক ছুটি৷
সিঙ্গাপুরে সম্প্রতি একটি জরিপ পরিচালিত হয়৷ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও এতে অর্থ বরাদ্দ দেয়৷ তাতে দেখা যায়, একেক গৃহকর্মী প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা কাজ করে৷ এবং মাত্র ১২ শতাংশ পরিচারিকা সপ্তাহে একদিন ছুটি পায়৷
এবার সরকারের পক্ষ থেকে গৃহকর্মীদের জন্য একদিন সাপ্তাহিক ছুটির ঘোষণা দেয়া হয়েছে৷ তবে কোনো মালিক চাইলে ছুটির দিনে ওভারটাইম বা অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে কাজ করিয়ে নিতে পারবেন৷ আগামী বছর থেকে এই আইন কার্যকর হবে৷
নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এইচআরডাব্লিউ সহ সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন সংস্থা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে৷ তবে এইচআরডাব্লিউ বলছে, শ্রমিকদের সুরক্ষায় এটা একটা মাত্র ভাল পদক্ষেপ৷ তবে আরও অনেক কিছু করতে হবে৷
তবে মালিকপক্ষ সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন৷ যেমন ব্যাংকার জ্যাকলিন এনজি৷ তিনি বলছেন, মাত্র ক'দিন আগে তার ইন্দোনেশীয় গৃহকর্মীকে দেশে ফেরত পাঠাতে হয়েছে৷ কেননা সে যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিল৷ এনজি বলছেন, কোনো ছুটি না পেয়েই তারা এ ধরনের কাজ করতে পারে৷ তাহলে ছুটি পেলে কী হবে? – প্রশ্ন করেন এনজি৷
উল্লেখ্য, সিঙ্গাপুরে দুজনই চাকরি করেন এমন দম্পতির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে৷ ফলে ঘর পরিচালনায় প্রয়োজন পড়ছে গৃহকর্মীর৷ এ মুহূর্তে সেখানে গৃহকর্মীর সংখ্যা দুই লাখের উপরে৷ যার বেশিরভাগ এসেছে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনস, শ্রীলঙ্কা ও ভারত থেকে৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন