মমতার বিরুদ্ধে রায়
২২ জুন ২০১২সিঙ্গুরে টাটা শিল্পগোষ্ঠীর ছোট গাড়ির কারখানার জন্য বরাদ্দ কৃষিজমি টাটাদের থেকে নিয়ে ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকদের ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার৷ যে কারণে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরই পাস করা হয়েছিল সিঙ্গুর জমি পুনর্বাসন ও উন্নয়ন আইন৷ কিন্তু শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২০১১ সালের এই আইনকে অবৈধ এবং অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দিল৷ এর আগে এই আইনকে বৈধতা দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ, যার বিরুদ্ধে আপিল করে টাটারা৷ সরকারপক্ষের আইনজীবী, হুগলির তৃণমূল বিধায়ক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান, এবার সুপ্রিম কোর্টে যাবে সরকার৷ অন্যদিকে টাটা গোষ্ঠী ক্যাভিয়ট দাখিল করার কথা ভাবছে৷
কিন্তু এই আইনি জটিলতার বাইরে যেটা দাঁড়াল, সিঙ্গুরে অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা আরও দূরবর্তী হয়ে পড়ল যেহেতু ভবিষ্যৎ আইনি প্রক্রিয়া নিঃসন্দেহে আরও দীর্ঘায়িত হতে যাচ্ছে৷ এর পাশাপাশি, কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় তৃণমূল কংগ্রেস তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেও এক বড় ধাক্কা৷ মমতা এদিন নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফেসবুকে৷ বলেছেন, আদালতের রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না৷ তবে কৃষকদের স্বার্থে তাঁর লড়াই জারি থাকবে৷
বামফ্রন্টের তরফে রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, আদালতের এই রায় সারা দেশের শিল্পমহলে এই বার্তাও পাঠাল যে বর্তমান রাজ্য সরকার অন্যায় করেছিল একটি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে, যেটা রাজ্যের শিল্পসম্ভাবনার পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে৷ অন্যদিকে হতাশ সিঙ্গুর, বিশেষত সেই কৃষকরা, যাঁরা জমি ফেরত পাবেন ভেবেছিলেন৷
এদিন সরকার পক্ষের অন্যতম আইনজীবী তপন বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতের রায় প্রসঙ্গে একটি মন্তব্য করেছেন, যা অত্যন্ত প্রণিধানযোগ্য৷ বিচারপতি এদিন রায় ঘোষণার পর তাঁদের দিকে তাকিয়ে বলেছেন, তাঁর হৃদয় ওদের দিকে থাকলেও, আইনের কিছু ব্যাখ্যায় তিনি আটকে যাচ্ছেন৷
অর্থাৎ আবেগ সায় দিলেও, সিঙ্গুরের জমি ফেরত দেওয়াতে আইন সায় দিচ্ছে না৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা
সম্পাদনা: জাহিদুল হক