সিঙ্গুরে জমি বণ্টনের ওপর সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ
২৯ জুন ২০১১সিঙ্গুরে অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় জোর ধাক্কা খেল মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার৷ টাটা মোটরর্স'এর আবেদনে জমি বণ্টন প্রক্রিয়ার ওপর আজ অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট৷ বলা হয়, কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার চূড়ান্ত রায় সাপেক্ষে স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে৷ অর্থাৎ, কথিত অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি বণ্টন সে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে৷ তবে এই রকম একটি জরুরি মামলার রায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালতে ঝুলে থাকতে পারেনা৷ তাই একমাসের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টকে রায় জানাতে হবে মামলার মেরিট বা গুণগত ভিত্তিতে৷ মামলার মেরিট ইস্যুতে শীর্ষ আদালত হস্তক্ষেপ করবেনা৷
উল্লেখ্য, টাটা মোটরর্স কলকাতা হাইকোর্টে দুটি বিশেষ লিভ পিটিশন দায়ের করেছিল৷ একটিতে জমি বণ্টনের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে এবং অপরটিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে আইনের বলে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের দেওয়া জমি ফেরৎ নিয়েছে, তাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে চ্যালেঞ্জ করা হয়৷ টাটার বক্তব্য, আইনসঙ্গতভাবে জমি অধিগ্রহণের পর সে জমি ফেরৎ নিতে পারেনা সরকার৷ ন্যানো গাড়ি তৈরির জন্য টাটা মোটরর্সকে দেওয়া হয়েছিল প্রায় হাজার একর জমি৷ অথচ টাটার উভয় আর্জিই খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷ তারপর টাটা মোটরর্স যায় সুপ্রিম কোর্টে৷
রাজ্য সরকারের কৌঁশলির বক্তব্য, সরকার জমি বণ্টন করেনি৷ সিঙ্গুরে জমি বণ্টনের নতুন আইনের ভিত্তিতে রাজ্য সরকার পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া শুরু করেছে মাত্র৷ তাতে প্রতীকী বণ্টন হিসেবে সাড়ে এগারো একর জমি ১২ জন অনিচ্ছুক কৃষককে ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার৷ সরকারি কৌঁশলির বক্তব্য, রাজ্যের মানুষ ভোট দিয়ে সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে৷ আর মানুষের প্রত্যাশা পূরণের দায়বদ্ধতা থেকেই সিঙ্গুর পুনর্বাসন ও উন্নয়ন আইন ২০১১ পাশ করেছে সরকার৷ তাই এই আইন সংবিধান বিরোধী নয়৷ সিঙ্গুর-নন্দিগ্রামের জমি আন্দোলন জাতীয় স্তরে এক ঐতিহাসিক ঘটনা মন্তব্য করে সরকারি আইনজীবী বলেন, যেসব অনিচ্ছুক কৃষকের জমি জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল - তা তাঁদের ফেরৎ দিতে বর্তমান সরকার অঙ্গিকারবদ্ধ৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ