সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হলো ইইউ অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলন
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ইউরোপীয় ইউনিয়নের একের পর এক দেশ দেউলিয়াত্বের সম্মুখীন হওয়ায় এখন ইউরোর ভবিষ্যত নিয়ে গভীর শঙ্কা দানা বেঁধে উঠছে৷ অন্যদিকে এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারগুলো যেসব আর্থিক কাট-ছাঁটের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তার ফলে জনরোষও বাড়ছে৷ এই দ্বিমুখী সঙ্কট সামনে নিয়েই গত দুইদিন ধরে পোল্যান্ডের ব্রতসোয়াফ শহরে হয়ে গেল ইইউর অর্থমন্ত্রীদের দুই দিনের সম্মেলন৷
ইইউর বর্তমান সভাপতি দেশ পোল্যান্ডের আমন্ত্রণে এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী টিমোথি গাইথনার৷ কিন্তু সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্পষ্ট দ্বিমত দেখা দেয় ইইউর একাধিক সদস্যের৷ মার্কিন অর্থমন্ত্রী গাইথনার পরামর্শ দেন, ইইউর আর্থিক মন্দায় পড়া দেশগুলোর জন্য ৪৪০ বিলিয়ন ইউরোর উদ্ধার তহবিলকে আরও জোরদার করতে৷ কিন্তু তার এই প্রস্তাবের বিরোধীতা করে জার্মান অর্থমন্ত্রী ভোল্ফগাং শ্যোয়েবলার পাল্টা আহ্বান জানান, বিশ্ব বাজারে আর্থিক লেনদেনের ওপর করারোপের যে প্রস্তাবের বিরোধীতা করছে যুক্তরাষ্ট্র, তারা সেটি প্রত্যাহার করে নিক৷ এই সময় জার্মানির পাশাপাশি বেলজিয়ামও মনে করিয়ে দেয় যে, বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ঋণের ভার বহন করছে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই৷
তবে বিশ্ব বাজারে আর্থিক লেনদেনের ওপর করারোপের প্রস্তাব নিয়ে খোদ ইইউ সদস্য দেশগুলোর মধ্যেই ভিন্নমত রয়েছে৷ বেলজিয়ামের অর্থমন্ত্রী দিদিয়ের রাইনদাস স্বীকার করেন যে, এই নিয়ে এখনই কোন ঐকমত্য হচ্ছে না৷ তবে এটি যদি ইইউর মধ্যে সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত ইউরো জোনের মধ্যে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷ জানা গেছে, আর্থিক লেনদেনের ওপর করারোপের প্রস্তাবে এখনও গররাজি ব্রিটেন৷
এদিকে ব্রতসোয়াফে সম্মেলনস্থলের বাইরে হাজার হাজার মানুষ আজ বিক্ষোভ করেছে৷ তারা যে কোন ধরণের আর্থিক কাট ছাঁটের বিরোধীতা করেছে৷ বার্তা সংস্থাগুলো জানায়, গোটা ইউরোপের নানা দেশ থেকে অন্তত ১২ হাজার মানুষ এই প্রতিবাদে অংশ নেয়৷ তারা অব্যাহত বেকারত্ব বৃদ্ধি ও করারোপের প্রতিবাদ জানায়৷
তবে এই দুইদিনের সম্মেলনে কোন ধরণের অগ্রগতি হয়েছে কী? এই প্রশ্ন করা হলে ফিনল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী ইউটা উরপিলেইনেন বলেন, ‘‘নতুন কিছুই নেই''৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক