সিরিয়ার গভীরে তুরস্কের অভিযান
২৯ আগস্ট ২০১৬সিরিয়াকে ঘিরে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলির স্বার্থের সংঘাত আবার প্রকাশ্যে চলে এলো৷ তুরস্ক সমর্থিত সিরীয় বিদ্রোহীরা তথাকথিত ইসলামিক স্টেট-এর দখল থেকে জারাবালুস শহর মুক্ত করেই ক্ষান্ত হলো না৷ কুর্দিদের নেতৃত্বে ডিএফএস জোটের হাত থেকে একের পর এক এলাকা ছিনিয়ে নিচ্ছে তারা৷
অথচ এই জোটের মূল সমর্থক অ্যামেরিকা, যে দেশ আবার তুরস্কের সহযোগী৷ আইএস-এর বিরুদ্ধে সংগ্রামে ডিএফএস যথেষ্ট সাফল্য দেখিয়ে আসছে৷ সামরিক জোট ন্যাটোর কাঠামোর মধ্যে সিরিয়ায় তুরস্কের পারস্পরিক সহযোগিতা করার কথা৷ বর্তমান অবস্থায় অ্যামেরিকা অবশ্য কুর্দি বিদ্রোহীদের ইউফ্রেটিস নদীর ওপারে চলে যাবার পরামর্শ দিয়েছে৷
আইএস বিদায় নেবার পর সিরিয়ার উত্তরে কুর্দি বিদ্রোহীরা যাতে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে, তুরস্কের সামরিক অভিযান সম্ভবত সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ ফলে কোণঠাসা কুর্দি যোদ্ধারা মানবিজ শহরের উপকণ্ঠে পিছিয়ে এসেছে৷ তুরস্কের আন্দালু সংবাদ সংস্থার সূত্র অনুযায়ী, সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ জন কুর্দি যোদ্ধা নিহত হয়েছে৷ সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস-এর দাবি, তুরস্কের সামরিক অভিযানের ফলে শুধু রবিবারই ৩৫ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ তুরস্ক অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি৷
গোটা এলাকার কৌশলগত গুরুত্ব বর্তমান সংঘর্ষের মূল কারণ বলে ধরে নিচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা৷ দীর্ঘদিন ধরে অভিযান চালিয়ে কুর্দি বিদ্রোহীরা সীমান্ত এলাকা ও মানবিজ শহর দখল করতে পেরেছিল৷ মার্কিন বোমারু বিমান এ কাজে তাদের সাহায্য করেছে৷ তুরস্কের ভূখণ্ড থেকে আইএস-এর রসদ সংগ্রহের পথ বন্ধ করাই ছিল এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য৷
অন্যদিকে তুরস্ক ও তাদের সমর্থিত সিরীয় বিদ্রোহীদের কাছে কুর্দিদের এই সাফল্য আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ মানবিজের পর আল-বাব শহর দখল করতে পারলে কুর্দিরা নিজস্ব এলাকাগুলির মধ্যে এক করিডোর বা সংযোগ পথ তৈরি করতে পারতো৷ সে ক্ষেত্রে সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে কুর্দিদের আধিপত্য জোরালো হয়ে উঠতো৷ সে ক্ষেত্রে তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রয়াস তুরস্কের মধ্যে কুর্দিদের উদ্বুদ্ধ করতে পারতো৷ সিরীয় বিদ্রোহীরা কুর্দিদের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগও করে থাকে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)