1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে বিদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

২৬ অক্টোবর ২০১৭

ভারতের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ফতেহপুর সিক্রিতে দুষ্কৃতিকারীদের হামলার শিকার হয়েছেন দুই সুইস তরুণ-তরুণী৷ মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন তরুণ এবং হাত ভেঙে গেছে তরুণীর৷ তাঁরা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷

https://p.dw.com/p/2mXdb
প্রতীকী ছবিছবি: picture-alliance/dpa/D.Solanki

পুলিশ জানিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের লুজানের অধিবাসী ২৪ বছরের কোয়েন্টিন জেরেমি ক্লার্ক এবং তাঁর বান্ধবী মারি ড্রক্সজ গত ৩০শে সেপ্টেম্বর আগ্রায় বেড়াতে গিয়েছিলেন৷ গত শনিবার তাজমহল দেখে পরের দিন ফতেহপুর সিক্রিতে ঘুরতে যান ওই জুটি৷ ফতেহপুর সিক্রি দিল্লির কাছে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র৷ ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া'কে ঐ তরুণ-তরুণী জানিয়েছেন, হামলাকারীরা তাদের পথ রোধ করে এবং তরুণীর সঙ্গে জোর করে সেলফি তোলার চেষ্টা করে৷ এরপর তাঁরা রাজি না হলে লাঠি আর পাথর নিয়ে হামলে পড়ে তাঁদের উপর৷ লাঠির বাড়ি মাথায় পড়লে তরুণটি মাটিতে পড়ে যায়৷ 

ফতেহপুর সিক্রির রেলস্টেশনের কাছে গত রবিবার ঘটেছে এই ঘটনা৷ পথচারীরা মোবাইল ফোনে ঘটনার ভিডিও ধারণ করেছেন, যেখানে আহত ঐ জুটিকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে৷

টাইমস অফ ইন্ডিয়া'র প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, হামলার পর তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ কিন্তু পরে তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়৷ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, যুবকটির মাথার খুলি ফেটে গেছে৷ তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত জমেছে৷ আর তরুণীটির হাত ভেঙে গিয়েছে৷

এরইমধ্যে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সরকারের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ৷ টুইটারে লিখেছেন, ‘‘আমি এই প্রতিবেদনটি এইমাত্র দেখেছি৷ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি৷''

এর পরের টুইটে তিনি জানিয়েছেন, আহত ঐ যুগলের খোঁজ-খবর নিতে রওনা হয়েছেন তাঁর কর্মকর্তারা৷ রাজ্য পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলার পেছনে চারজন ব্যক্তির হাত রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা৷

রাজ্যের সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা অমিত পাঠক সংবাদ সংস্থা এএফপিকে ফোনে জানিয়েছেন, আগ্রার পুলিশ হামলাকারীদের কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছে৷ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘এদের মধ্যে কয়েকজন অপ্রাপ্তবয়স্ক৷ আমরা তদন্ত করছি৷ তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক হলেও আইন অনুযায়ী, তাদের কিশোর আদালতে পাঠানো হবে৷'' অন্য এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার পরে জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছেন তাঁরা৷ 

তবে ঠিক কী কারণে সুইস যুগলের উপর হামলা চালানো হলো, সেটা এখনও পরিষ্কার নয়৷

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে যৌন সহিংসতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এবং অনেক পশ্চিমা দেশ ভারত সফরের সময় হামলার ঝুঁকি আছে বলে পর্যটকদের সতর্কও করে দিয়েছে৷

সুইস দূতাবাসের ওয়েবসাইটে পর্যটকদের ভারতে ‘ভয়ংকর' সব অপরাধের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, বিশেষ করে জনপ্রিয় স্থানগুলোতে৷

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে৷ অনেকেই পর্যটকদের যথার্থ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সমালোচনা করেছেন৷ বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টির এক নেতা মিলিন্দ দেওরা টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে কী ভয়াবহ অবনতি হয়েছে, এটা তারই লজ্জাজনক একটি উদাহরণ৷ যোগী আদিত্যনাথ কী শুনতে পাচ্ছেন?''

ভারতে বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে৷ ২০১৩ সালেই বিদেশি নারী পর্যটকদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের বেশ কিছু ঘটনা ঘটে৷ সে বছরের জানুয়ারিতে মধ্যপ্রদেশে ধর্ষিতা হন এক কোরীয় নারী৷ এছাড়া কলকাতায় এক আইরিশ নারী, মানালিতে অ্যামেরিকান নারী , মধ্যপ্রদেশের দাতিয়া জেলায় এক সুইস মহিলা ধর্ষণের শিকার হন৷ এর আগে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দিল্লিতে এক বিদেশিনীকে ধর্ষণ করা হয়৷    

এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ)