জার্মান দূতাবাসে হামলা
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২সুদানের রাজধানী খার্তুমে শুক্রবার জার্মান এবং ব্রিটিশ দূতাবাস লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে প্রতিবাদকারীরা৷ এরপর পুলিশের বাধা টপকে জার্মান দূতাবাসের মূল ফটকের মধ্যে ঢুকে পড়ে কিছু বিক্ষোভকারী৷ এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, প্রতিবাদকারীরা দূতাবাসের সামনের অংশে হামলা চালায় এবং জার্মান পতাকা ছিঁড়ে ফেলে৷ এরপর তারা সেখানে একটি কালো ইসলামি পতাকা উড়ায় এবং দূতাবাস ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়৷
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে শুক্রবার দূতাবাস ভবনে হামলার খবর নিশ্চিত করেছেন৷ তবে তিনি বলেছেন, দূতাবাসের সকল কর্মী নিরাপদে রয়েছেন৷
ভেস্টারভেলে আরো জানিয়েছেন, বার্লিনে অবস্থানরত সুদানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছে এবং সুদানে অবস্থিত কূটনৈতিক স্থাপনাগুলো রক্ষায় সেদেশের সরকারের দায়িত্ব সম্পর্কে তাঁকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
জার্মানি অবশ্য শুক্রবার থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত দেশটির দূতাবাসগুলোতে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে৷ কয়েকটি দেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে প্রতিবাদকারীদের হামলার প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নেয় জার্মান সরকার৷
উল্লেখ্য, ব্যক্তিগতভাবে তৈরি একটি সিনেমাকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে হামলার ঘটনা ঘটছে৷ ছবিটিতে ইসলামের মানহানি করা হয়েছে এবং এটির অংশবিশেষ আরবি ভাষায় ভাষান্তর করে ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়েছে৷ ‘ইনোসেন্স অফ মুসলিমস' শিরোনামের এই ছবিটিতে মুসলিম নবী মোহাম্মদকে একজন মেয়েবাজ, সমকামী এবং শিশু নিগ্রহকারী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে৷ এটি আরবি ভাষায় প্রকাশের পর মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ এই ছবির নির্মাতা ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন এবং বর্তমানে আত্মগোপন করে রয়েছেন৷
ইসলাম বিরোধী এই ছবি নিয়ে সৃষ্ট সহিংসতায় শুক্রবার টিউনিশিয়ায় কমপক্ষে তিন ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে৷ বিক্ষোভকারীরা সেদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে হামলার চেষ্টা করে৷ এসময় দূতাবাসের নিরাপত্তায় নিয়োজিত টিউনিশীয় নিরাপত্তা সদস্যরা প্রতিবাদকারীদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে৷ এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে৷
এছাড়া শুক্রবার আফগানিস্তানে হেলমান্দ প্রদেশে বিদেশি সেনাদের একটি ঘাঁটিতে হামলায় দুই মার্কিন সেনা প্রাণ হারিয়েছে৷ তালেবান জঙ্গিরা দাবি করেছে, নবী-বিরোধী ছবি প্রকাশের প্রতিশোধ নিতে এই হামলা চালিয়েছে তারা৷
প্রসঙ্গত, ইসলাম বিরোধী এই ছবি নিয়ে বিক্ষোভের জেরে গত সপ্তাহে নিহত হয়েছেন লিবিয়ায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সহ চারজন মার্কিন নাগরিক৷ এই ঘটনায় লিবিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে৷
এআই / এএইচ (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)