সুদানে সামরিক-আধাসামরিক বাহিনীর সংঘাত, নিহত অর্ধশতাধিক
১৬ এপ্রিল ২০২৩শনিবার সুদান আর্মড ফোর্সেস (এসএএফ) এবং আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে৷ ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ওমর হাসান আল বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর এটি দুইপক্ষের মধ্যে প্রথম এমন বড় লড়াইয়ের ঘটনা৷
বার্তা সংস্থা রয়টার্স সুদানিজ ডক্টর্স ইউনিয়নের বরাতে জানিয়েছে, সেনা ছাড়াও সংঘাতে অন্তত ৫৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন৷ আহত হয়েছেন প্রায় ৬০০ জন৷
শুধু রাজধানী খার্তুম নয়, নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই বাহিনীর লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে দেশের অন্য এলাকাগুলোতেও৷ দুই পক্ষই বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দাবি করেছে৷ মানুষকে নিজেদের ঘরবাড়িতে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে সামরিক বাহিনী৷
জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল বুরহানের নিয়ন্ত্রণে থাকা সেনা ইউনিট ও উপনেতা মোহামেদ হামদান দাগালোর আরএসএফ এর বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল৷
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস তাদের দুইজনের প্রতি অনতিবিলম্বে সংঘাত থামিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন৷
দীর্ঘদিন সুদানের ক্ষমতা দখলে রাখা ওমর আল বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করেন বুরহান৷ ১৮ মাস পর দ্বিতীয় ক্যু ঘটিয়ে দেশটির গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রচেষ্টার অবসান ঘটায় সামরিক বাহিনী ও আরএসএফ৷ কিন্তু আরএসএফকে নিয়মিত সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে বুরহান ও দাগালোর মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, যা এখন প্রকাশ্য সংঘাতে রূপ নিল৷
সামরিক বাহিনী তাদের ফেসবুক পেইজে আরএসএফকে বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং দাগালোকে ‘ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল' বলে ঘোষণা দিয়েছে৷ বাহিনীটি বিলুপ্তির আগে কোন ধরনের আলোচনা করা হবে না বলেও জানিয়েছে তারা৷
এদিকে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে লড়াই শুরুর জন্য বুরহানকে দায়ী করেছেন দাগালো৷ তাকে ‘অপরাধী ও মিথ্যবাদি' বলে অভিহিত করেছেন তিনি৷
এদিকে আরএসএফ এক ভিডিওতে সরকারি সেনার পাশাপাশি ‘আত্মসমর্পণ করা' মিশরের সেনাদের গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে৷ মিশরের সেনা বাহিনী দাবি করেছে সুদানের সঙ্গে সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে দেশটিতে তাদের সেনাসদস্যরা রয়েছেন৷ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি সমন্বয় করা হচ্ছে বলে শনিবার বিবৃতিতে জানিয়েছেন মিশরের এক সেনা মুখপাত্র৷
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, মিশর, সৌদি আরব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আফ্রিকান ইউনিয়নের পক্ষ থেকে শত্রুতা বন্ধে দুই পক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে৷
শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই বিষয়ে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন৷ সৌদি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে নেয়া সমঝোতা মেনে চলতে সুদানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাত৷
এফএস/এডিসি (এপি, এফপি, রয়টার্স)