1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সুপারবাগ’ ছড়াতে পারে পরিযায়ী পাখিরা

২২ সেপ্টেম্বর ২০১০

পরিযায়ী পাখিদের কারণে দুরোরোগ্য, এমনকি অনারোগ্য রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে, বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমন আশংকাই প্রকাশ করেছেন৷

https://p.dw.com/p/PI7j
গাঙচিলের কারণে দুরোরোগ্য রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে!ছবি: AP

জানা গেছে, অ্যান্টিবায়োটিক অগ্রাহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে এমন ধরণের ব্যাকটিরিয়া নাকি এই পরিযায়ী পাখিদের কারণে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ অন্তত বিজ্ঞানীরা সি-গাল বা গাঙচিলদের পর্যবেক্ষণ করে এমন তথ্যই জানতে পেরেছেন৷

পৃথিবী জুড়েই পরিযায়ী পাখিদের দেখতে ভীড় করেন পর্যটকরা৷ সুনীল আকাশে, কোনো উপকূলে, হ্রদ কিংবা জলাশয়ে ঝাঁক বেধে ওড়া, ঝাঁকে ভেসে বেড়ানো এইসব পাখিদের চমৎকারই দেখায়৷ কিন্তু তাদের এই সৌন্দর্যের আড়ালে মানুষের জন্য নাকি লুকিয়ে রয়েছে মারাত্মক সংক্রমণের বিপদ! অন্তত বিজ্ঞানীরা তেমনটিই আশংকা করছেন৷

সম্প্রতি পর্তুগিজ গবেষকরা কাস্পিয়ান গাঙচিলের শরীর থেকে ঝরে পড়া ৫৭ রকমের নমুনা সংগ্রহ করে এক গবেষণা করেছিলেন৷ গবেষণায় দেখা গেছে, এই নমুনার ১০টির মধ্যে একটি ব্যাকটিরিয়া, ভেনকোমাইসিন নামে প্রচলিত একধরণের অ্যান্টিবায়োটিক অগ্রাহ্য করে টিঁকে থাকতে পারে৷ এর মানেই হচ্ছে - বিপদ!

এই গবেষকরা একটি বিজ্ঞান সাময়িকীকে জানিয়েছেন, সম্ভবত এই পরিযায়ী পাখিরা, বিশেষ করে গাঙচিল, মানুষের ফেলা এঁটো-কাঁটা, আবর্জনা খুঁটে খায়৷ আর নানা ধরণের ব্যাকটিরিয়া সঙ্গে করে নিয়ে আসে৷ যুক্তরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু অংশে প্রায়শই এইসব সাদা এবং ধুসর গাঙচিলদের মানুষের ফেলে রাখা আবর্জনা-স্তূপে উড়ে বসতে দেখা যায়৷ আর সেখান থেকে তারা তাদের অজান্তেই বহন করে নিয়ে যায় মানুষের জন্য বিপদ৷

এই পর্তুগিজ গবেষক দলের প্রধান গবেষক হিসেবে কাজ করছেন গিলবার্তো ইগরেজাস৷ তিনি জানিয়েছেন, প্রোটিন নিয়ে করা প্রোটেমিকস নামের এক ধরণের গবেষণা কৌশলের সহায়তা নিয়েছিলেন তারা৷ তারা গাঙচিল থেকে সংগৃহীত নমুনায় প্রচুর এনটারোকক্কাস ব্যাকটিরিয়া দেখতে পেয়েছেন, যা কিনা ভেনকোমাইসিন নামের প্রচলিত একধরণের অ্যান্টিবায়োটিক অগ্রাহ্য করে টিঁকে থাকতে পারে৷

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন গাঙচিলের মতো পরিযায়ী পাখিরা স্থানান্তরে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারে এই মারাত্মক ব্যাকটিরিয়া৷ গবেষক গিলবার্তো ইগরেজাস জানিয়েছেন, এ'সমস্ত পরিযায়ী পাখি দূর-দূরান্তরে উড়ে যায়৷ একদেশ থেকে অন্যদেশে উড়ে আসে৷ তারা অজান্তেই মানুষের জন্য বিপজ্জনক এইসব ব্যাকটিরিয়ার বাহক হিসেবে কাজ করে৷ এমনকি এই সুন্দর পাখিগুলো তাদের অজান্তেই এক অর্থে মহামারীর দূত হিসেবে কাজ করে থাকে৷

অবশ্য অ্যান্টিবায়োটিক অগ্রাহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে এমন ধরণের ব্যাকটিরিয়া সচরাচর সুস্থ-সবল মানুষদের কাবু করতে পারে না৷ কিন্তু যারা দুর্বল এবং শারীরিকভাবে অশক্ত, তাদের জন্য এইসব ব্যাকটিরিয়ার সংক্রমণ ভয়াবহ হতে পারে৷ এমনকি এই ব্যাকটিরিয়ার সংক্রমণ তাদের মৃত্যুর কারণও হতে পারে৷ যদিও এই ব্যাকটিরিয়ার সংক্রমণ অন্যান্য অ্যান্টিবায়োটিকের সহায়তায় ঠেকানো যেতে পারে, কিন্তু আরেকটি বিষয় বেশ আশংকাজনক: সেটি হচ্ছে এই ব্যাকটিরিয়া যদি সেসব অ্যান্টিবায়োটিক এড়িয়ে যায়, সেক্ষেত্রে সংক্রমণ রোধ করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে৷

প্রতিবেদনঃ হুমায়ূন রেজা

সম্পাদনাঃ অরুণ শঙ্কর চৌধুরী