পরিবেশ আন্দোলন
৩১ আগস্ট ২০১২বিগত ২০০৭ সালে সুমেরু অঞ্চলের বরফ গলে সবচেয়ে ছোট আকার ধারণ করেছিলো৷ পাঁচ বছর পর সেটাও ছাড়িয়ে গেলো৷ মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসার প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে উত্তর মেরুর সমুদ্রে জমে থাকা বরফের আকার গত কয়েক বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে ছোট৷ তার অর্থ বরফ আরও গলেছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিশ্ব উষ্ণায়নের জোরালো লক্ষণ৷
নাসার আইস ডাটা সেন্টার থেকে বলা হয়েছে সুমেরুর বরফের সমুদ্রের আয়তন এখন ৪২ লাখ বর্গকিলোমিটার৷ ২০০৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার বরফ গলে পানি হয়ে গেছে৷ আয়তনটা বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক! এত দ্রুত সুমেরুর বরফ গলে যাওয়া বিজ্ঞানীরা হতবাক হয়ে গেছেন৷ যুক্তরাষ্ট্রের পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির আর্থ সিস্টেম সায়েন্স সেন্টারের পরিচালক মাইকেল ই. ম্যান এই ব্যাপারে বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে যা ধারণা করা হয়েছিলো তার চেয়ে অনেক দ্রুত এবং বেশি পরিমাণে জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে৷ কারণ এখন যা দেখা যাচ্ছে হিসেব অনুযায়ী সেটা আগামী কয়েক দশকের মধ্যে ঘটার কথা ছিলো না৷''
উল্লেখ্য, প্রতি বছর সুমেরু অঞ্চলের বরফের আয়তন কমছে গড়ে এক লাখ ৫৫ হাজার বর্গকিলোমিটার করে, আয়তনে যেটি প্রায় বাংলাদেশের সমান৷ এটিকে ঠেকানোর জন্য এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে, এমন মত দিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ড. এম এ মতিন৷
বিশ্ব উষ্ণায়নের এই ভয়াবহ চালচিত্র সত্ত্বেও কার্বন নির্গমন হ্রাসে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না উন্নত দেশগুলোর মধ্যে৷ আর চীন, ভারত সহ দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলো তো এই কার্বন নির্গমন বাড়িয়েই যাচ্ছে৷ তাই বিশ্ব উষ্ণায়নের দায়ভার এখন তৃতীয় বিশ্বের ওপরও পড়ে, এমনটি বললেন পরিবেশ আন্দোলন কর্মী এম এ মতিন৷ তার ভাষায়, ‘‘ উন্নত বিশ্বের পথ ধরে উন্নয়নশীল দেশগুলোও যদি কোন বাছ বিচার না করে শিল্প কারখানা স্থাপন করতে থাকে তাহলে উন্নত দেশগুলোকে দোষ দেওয়ার কি আছে? তাহলে তো আমরাই বেশি দোষী, কারণ আগে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিক কেউ জানতো না৷''
বিশ্ব উষ্ণায়ন হ্রাস নিয়ে এখন পর্যন্ত আশাব্যঞ্জক কিছু দেখা না গেলেও এম এ মতিনের মতে, এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য পরিবেশ আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে৷ কারণ উন্নত ও অনুন্নত দেশগুলোতে জনগণকে সাথে নিয়ে সরকারগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোই৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন