অনঢ় মুরসি
২ জুলাই ২০১৩দেশের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে এক বছর পূর্তির দিনেই মোহাম্মদ মুরসিকে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভরতদের সামলানোয়৷ সামলাতে পারেননি৷ বরং তাঁর দল মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ১৬ জন প্রাণ হারানোয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ারই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ সে অবস্থাতেই মিশরের সেনাবাহিনী দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে৷ এ নিয়ে বিরোধীদের মাঝে উল্লাস দেখা গেলেও অতীতের অভিজ্ঞতা দুশ্চিন্তাতে রেখেছে তাঁদের৷
বেশি দূরের অতীত নয়৷ গণবিক্ষোভের মুখে হোসনি মুবারক ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার প্রবণতা দেখা গিয়েছিল সেনাবাহিনীর কাজে৷ মুসলিম ব্রাদারহুডের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওায়া, মুরসির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া – এসবের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরুর আগের সেই সময়টা বিরোধীরা ভোলেন কী করে!
কিন্তু ক্ষমতায় এসে মুরসিই তা অনেকটা ভুলিয়ে দিয়েছেন৷ ছয় মাসের মধ্যেই এক ডিক্রি জারি করে হারিয়ে বসেন বিরোধীদের আস্থা৷ আস্থায় ফেরার কোনো উদ্যোগ আর দেখা যায়নি৷ বরং ‘প্রগতিশীল' এবং অসাম্প্রদায়িক শক্তি মুরসি সরকারের প্রতিটি উদ্যোগেই দেখেছে শুধু কট্টরপন্থী মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রয়াস৷ এমন প্রয়াস আর চলতে না দেয়ার প্রত্যয় থেকেই গত রোববার গণতান্ত্রিক সরকারের বর্ষপূর্তির দিনেই মুরসির পতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে মুরসিবিরোধীরা৷
দেশের চরম অশান্ত পরিস্থিতিতে সোমবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সেনাবাহিনীর এক বার্তা পড়ে শোনানো হয়৷ মুরসিকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়া ওই বিবৃতিকে সরকার সমর্থকরা সেনাবাহিনীর কৌশলে ক্ষমতা গ্রহণের পূর্বলক্ষণ হিসেবে দেখছেন৷ মুরসি জানিয়েছেন, এই বিবৃতির আহ্বানে তিনি সাড়া দেবেন না৷ সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র দাবি করেছেন, বিবৃতিটি শুধু সরকার এবং বিরোধীপক্ষকে দেশের স্বার্থে পরস্পরের কাছাকাছি এসে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করার তাগিদ মাত্র৷
এদিকে বারাক ওবামাও একই কথা বলেছেন মুরসিকে৷ মুরসির সঙ্গে ফোনে সরাসরি কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট৷ সেখানে ওবামা মিশরের প্রেসিডেন্টকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে সংকট নিরসনের চেষ্টা করার অনুরোধ জানিয়েছেন৷
এসিবি/ডিজি (এপি, ডিপিএ, রয়টার্স)