সোচিতে ম্যার্কেল-পুটিন সাক্ষাৎ
২ মে ২০১৭আগামী জুলাই মাসে হামবুর্গে জি-টোয়েন্টির শীর্ষবৈঠক, তারই প্রস্তুতি হিসেবে এই সাক্ষাৎ৷ এবং মূল আলোচ্য বিষয় যে ইউক্রেন ও সিরিয়া হবে, ম্যার্কেলের মুখপাত্র স্টেফেন সাইবার্ট তা আগেই বলে দিয়েছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, ‘‘এই দু’টি বিষয় অবশ্যই (রুশ-জার্মান) সম্পর্কের উপর চাপ ফেলছে৷’’
নয়তো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এই ম্যার্কেল-পুটিন সাক্ষাতে বার্লিন ও মস্কোর মধ্যে নতুন সংলাপের সূচনা হিসেবেই দেখছে৷ এবং তার গুরুত্ব মূলত এই কারণে যে, ঠাণ্ডা লড়াই সমাপ্ত হবার পরে রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্ক আর কখনো এত নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছয়নি৷
২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রাইমিয়া ছিনিয়ে নেওয়ার পরম্যার্কেল স্বয়ং মস্কোর বিরুদ্ধে ইইউ’র শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপের জোরদার সমর্থক ছিলেন৷ অপরদিকে মস্কো সেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া হিসেবে পশ্চিম থেকে কৃষিপণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে৷
কূটনীতি
গত সপ্তাহে ইইউ'র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিনিধি ফেদেরিকা মোঘেরিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, উভয় পক্ষের সম্পর্ক ‘স্থগিত নেই’, কিন্তু ইউক্রেন ও সিরিয়ার মতো বিষয়ে গভীর মতানৈক্যের ফলে সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে না৷
রুশ-জার্মান সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুটিন গত মার্চ মাসে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েলের মস্কো সফর উপলক্ষ্যে উভয় দেশের সম্পর্ক ‘পুরোপুরি স্বাভাবিক করার’ ডাক দেন৷
ম্যার্কেল শেষবার রাশিয়া যাত্রা করেছিলেন ২০১৫ সালের মে মাসে এবং পুটিনের সঙ্গে মস্কোয় তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল৷ কিন্তু অপরাপর পশ্চিমি নেতার মতো ম্যার্কেলও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার জয়ের ৭০তম বার্ষিকীতে রেড স্কোয়ারের কুচকাওয়াজে যাননি৷
ম্যার্কেলের ভূমিকা
ইউক্রেন সংকটে ম্যার্কেলই পুটিনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখ্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব নিয়েছেন৷ অপরদিকে মিনস্ক শান্তি পরিকল্পনা কার্যকরি হওয়ার আগে তিনি মস্কোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বজায় রাখার সবচেয়ে জোরালো প্রবক্তাদের মধ্যে একজন৷
ম্যার্কেল ও পুটিন একাধিক চারতরফা বৈঠকে অংশ নিয়েছেন – শেষবার গত অক্টোবর মাসে৷ বৈঠকে বাকি দুই অংশগ্রহণকারী ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ৷ এই চারটি দেশ ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যে শান্তি পরিকল্পনা সম্পর্কে একমত হয়, তার বাস্তবায়ন নিয়েই সমস্যা৷
গতমাসে এক ফোনালাপে এই চার নেতা শান্তি পরিকল্পনার বাস্তবায়নকে ত্বরাণ্বিত করার সিদ্ধান্ত নেন৷ এ কারণে ম্যার্কেলের মুখপাত্র সাইবার্ট এবার যোগ করেছেন, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য হলো রাশিয়াকে বিভিন্ন গঠনমূলক চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট করা৷’’
পুটিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর উভয়ের যুগ্ম সাংবাদিক সম্মেলনে ম্যার্কেল বলেন যে, (ইউক্রেন প্রসঙ্গে) দু’পক্ষের এখনও বুনিয়াদি মতপার্থক্য আছে৷ তবে জার্মানি, রাশিয়া, ইউক্রেন ও ফ্রান্সের চারতরফা বৈঠকের ফলশ্রুতি সম্পর্কে তিনি সন্তুষ্ট না হলেও, পূর্ব ইউক্রেনের পরিস্থিতি সম্পর্কে আলাপ-আলোচনার সেরা ফোরাম এখনও এই ‘‘নরম্যান্ডি ফরম্যাট’’৷
এসি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ, এপি)