সোনালি আঁশের দেশে সোনালি ব্যাগ
১৫ জানুয়ারি ২০২০বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উপকন্ঠে বনশ্রীতে রয়েছে একটি কাঁচাবাজার৷ স্বাভাবিকভাবেই ব্যস্ততম অংশটি মাছের বাজার৷ দোকানিরা যেমন জমিয়ে নানান মাছের পসার বসান, তেমনি বাজার জুড়ে ছড়াছড়ি আরেকটি বস্তুর৷ স্থানীয়ভাবে বস্তুটি পরিচিত পলিথিন ব্যাগ হিসেবে৷ কোথায় নেই তা!
এই পলিথিন ব্যাগগুলো পরিবেশের জন্য কতটা ভয়াবহ তা বোঝা যাবে বাজারের ঠিক উল্টো পাশের খালটি দেখলে, যেন পাহাড় জমেছে পলিথিনের৷ পলিথিনে দূষিত এই খালটি থেকে বের হচ্ছে পচা গন্ধ৷
বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ৷ কিন্তু এর ব্যবহার বন্ধ করতে পারেনি সরকার৷ অনেকেই মনে করেন পলিথিনের মতো হালকা ও সস্তা অথচ পরিবেশবান্ধব বিকল্প না থাকাই এর কারণ৷
বাংলাদেশ বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ পাট উৎপাদন করে৷ বাজারে পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যাগও পাওয়া যায়৷ কিন্তু এর ব্যবহার অনেক কম৷ এ অবস্থায় পরমাণু বিজ্ঞানী মুবারক আহমেদ খান ভাবছেন ভিন্নভাবে৷ কয়েক বছর কঠিন সাধনা করে তিনি পাটের আঁশ দিয়ে পরিবেশবান্ধব পলিব্যাগ তৈরি করেছেন৷
নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে মুবারক তাঁর সহযোগীদের নিয়ে ব্যাগটি তৈরি করেছেন৷ পলিথিন পোড়ালে তা গলে গলে পড়ে৷ কিন্তু সোনালী ব্যাগ পোড়ে কাগজের মতো৷
শুকনো পাট বা এর ক্যাডিজ থেকেই মূলত পলিথিনের মতো দেখতে এই ব্যাগ তৈরি করা হয়৷ কাসাভা নামের শস্য থেকে কিংবা আখের ছোবড়া থেকে এ ধরনের ব্যাগ আগে তৈরি করা হয়েছে৷ কিন্তু মুবারকের দাবি, তাঁর ব্যাগই কেবল শতভাগ প্রাকৃতিক৷
প্রাথমিকভাবে এটি বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হলো, এই ব্যাগ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির নকশা ও বাণিজ্যিক উৎপাদনের খরচ৷ বাংলাদেশ সরকার এতে বিদেশি বিনিয়োগ আশা করছেন বলে জানান মুবারক৷