আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন জার্মানির মানুষ
৩০ মার্চ ২০২০করোনা সংকটের ফলে সাধারণ মানুষের আর্থিক অনিশ্চয়তা কাটাতে জার্মানির ফেডারেল ও রাজ্য সরকারগুলি রোববার এক বোঝাপড়ায় এসেছে৷ এর আওতায় প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ইউরো অবিলম্বে ভুক্তভোগীদের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা শুরু হবে৷ সোমবার থেকেই রাজ্য সরকারগুলি বিশেষ তহবিল থেকে সেই সব মানুষ ও ছোট প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ হস্তান্তর করবে, করোনা সংকটের ফলে যাদের আয় কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে৷
করোনা সংকটের জের ধরে বিশ্বের অন্যান্য অনেক প্রান্তের মতো জার্মানিতেও জনজীবন প্রায় স্তব্ধ হয়ে গেছে৷ দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন৷ সব বড় অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে শিল্পী, কলাকুশলী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে৷ ছোট আকারের কোম্পানি ও স্বনির্ভর মানুষও দিশাহারা হয়ে পড়েছে৷ খুব কম মানুষ অসুস্থতা বা অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ার কারণে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন৷
যে সব মানুষের পক্ষে ধারদেনা করে অথবা অন্য কোনোভাবে অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব নয়, মূলত তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে জার্মান সরকার৷ যে সব ছোট আকারের কোম্পানির সর্বোচ্চ পাঁচ জন পর্যন্ত কর্মী রয়েছে, সেগুলি আপাতত তিন মাস পর্যন্ত ৯,০০০ ইউরো সাহায্য পাবে৷ ১০ জন কর্মী থাকলে ১৫,০০০ ইউরো পর্যন্ত সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে৷ তবে তার জন্য বর্তমান সংকটের আগে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল, এম প্রমাণ দিতে হবে৷ জার্মানির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী পেটার আল্টমায়ার বলেন, চাষিরাও এই সহায়তা পাবেন৷
জার্মানির সরকার বড় আকারের কোম্পানিগুলিকে সাহায্য করতে জন্য সহজ শর্তে ঋণ, সরকারি মালিকানার সুযোগ ইত্যাদি পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে৷ কিন্তু কিছু কোম্পানির আচরণে সরকার অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে পড়ছে৷ আডিডাস ও এইচঅ্যান্ডএম-এর মতো বহুজাতিক কোম্পানি একতরফাভাবে দোকানের ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেবে বলে জানিয়েছে৷ করোনা সংকটের ফলে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে দোকান থেকে কোনো আয় হচ্ছে না, এই যুক্তি দেখিয়েছে কোম্পানিগুলি৷ জার্মানির অর্থমন্ত্রী ওলাফ শলৎস এমন বেপরোয়া পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়েছেন৷ তাঁর মতে, এর ফলে সম্পত্তির মালিকদের ক্ষতি হবে৷ তার বদলে মালিক ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র খোঁজার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ উল্লেখ্য, সরকার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ভাড়ার সংকটের সমস্যা মেটাতেও সাময়িক সহায়তা করছে৷
আইনমন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট এই সুযোগের অপব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, বিশেষ করে যথেষ্ট আর্থিক বলশালী কোম্পানি এমন সংকটের সময়ে ভাড়া দেওয়া বন্ধ রাখলে তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ উল্লেখ্য, আডিডাস ২০১৯ সালে ২০০ কোটি ইউরো মুনাফা করেছিল৷ আত্মপক্ষ সমর্থনে সেই কোম্পানির এক মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-কে জানিয়েছেন, যে দোকানের মালিকদের জানিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ তাদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানসূত্রেরও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)