রানার সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ
২২ মে ২০১৩কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাঈন উদ্দিন খন্দকার বলেন, রানা প্লাজার জমি বাজেয়াপ্ত করে ওই ঘটনায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার সুপারিশও তৈরি করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি৷ এই সুপারিশে ভবনের অন্যতম মালিক সোহেল রানা ছাড়াও ভবনে থাকা পাঁচ পোশাক কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন অথবা ১০ বছরের কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের সুপারিশও করা হচ্ছে৷ তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি সোহেল রানার বিরুদ্ধে যে ধরণের অভিযোগ পেয়েছে তাতে তার সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে কোন অসুবিধা নেই৷ তার বিরুদ্ধে সরাসরি হত্যার অভিযোগ আছে৷
মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে ভবন ধসের ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী সাভার পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীসহ অন্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হচ্ছে৷ এসব সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করারও কথা তারা বলবেন৷ কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে তার দিকনির্দেশনাও থাকবে রিপোর্টে৷
মাঈন উদ্দিন খন্দকার বলেন, পোশাক খাত টিকিয়ে রাখতে কমিটি সরকারকে কিছু স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী সুপারিশ করবে৷ তাদের সুপারিশে ওই জমি বাজেয়াপ্ত করে তার সমপরিমাণ অর্থ হতাহতের পরিবারকে সহায়তা হিসেবে দেয়ার জন্য প্রতিবেদনে জোর সুপারিশ করেছে৷ প্রয়োজনে সরকার জমিটি বিক্রি করে সেই অর্থও হতাহতদের পরিবারের সদস্যদের দিতে পারে৷ তিনি জানান, রানা প্লাজার মত ঘটনা এড়াতে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে পোশাক কারখানার জন্য একটি অধিদপ্তর করারও সুপারিশ রাখা হচ্ছে৷ অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞরা সব কারখানাকে সনদ দেবে৷ যা প্রতিটি পোষাক কারখানায় টাঙানো থাকবে৷ আর এই ধরনের দেখলে শ্রমিকরা নির্ভয়ে ওই কারখানায় কাজ করতে যেতে পারবেন৷
প্রসঙ্গত, গত ২৪ এপ্রিল সাভারের নয় তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়ে৷ ঘটনার আগের দিনই ভবনটিতে ফাটল দেখা যায়৷ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওই দিন ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও পরদিন ২৪ এপ্রিল ভবনের অন্যতম মালিক সোহেল রানা গার্মেন্টস শ্রমিকদের ভবনে কাজে যেতে বাধ্য করেন৷ সকাল সাড়ে ৮টায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়ার পর ৯টার দিকে ভবনটি ধসে পড়ে৷ এই ঘটনায় এক হাজার ১২৭ জন ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়৷ জীবিত উদ্ধার করা হয় ৩ হাজার ৪৩৮ জনকে৷ সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যান অনেকে৷ ঘটনার দিনই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাঈন উদ্দিন খন্দকারকে আহ্বায়ক করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়৷ পরে কমিটিতে আরো একজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷ ঘটনার এক মাস পর বৃহস্পতিবার রিপোর্ট দিচ্ছে কমিটি৷