সৌদি মাতালেন মেসি, এমবাপে, নেইমার ও রোনাল্ডো
সৌদির মাঠ মাতালেন মেসি, এমবাপে, নেইমার, রোনাল্ডোরা। তাদের সৌজন্যে একটা নিছক প্রদর্শনী ম্যাচ অন্য মাত্রা পেল।
এক ম্যাচে এতজন সুপারস্টার
একটি ম্যাচে একদিকে খেলছেন মেসি, এমবাপে, নেইমার এবং অন্যদিকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ফলে সেই ম্যাচ আর নিছক প্রদর্শনী থাকে না, সেখানে নাছোড় লড়াই থাকে, গোল করার মরিয়া প্রয়াস থাকে, আর সবার উপরে থাকে স্কিল ও পাওয়ারের বিচ্ছুরণ। রিয়াধের মাঠে পিএসজি বনাম রিয়াধ অল-স্টারের খেলায় সে সবই ছিল।
নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ
এই প্রথমবার সৌদির কোনো দলের হয়ে খেললেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। বিশ্বকাপের পর তিনি সৌদির আল নাসের দলে বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে যোগ দিয়েছেন। ইউরোপের ক্লাব তাকে দলে নেয়ার উৎসাহ দেখায়নি। ফলে এই ম্যাচ ছিল রোনাল্ডোর নিজেকে প্রমাণ করার জায়গা। তিনি যে ফুরিয়ে যাননি, সেটা বোঝাবার ক্ষেত্র।
দুই গোল করলেন
বিপক্ষে খেলছেন মেসি, এমবাপে ও নেইমার। তাই এখানে যে রোনাল্ডো নিজেকে মেলে ধরতে চাইবেন, সেটা স্বাভাবিক। রোনাল্ডোও দেখিয়ে দিলেন, তাকে বিশ্বকাপে খেলানো বা না খেলানো নিয়ে যত বিতর্কই হোক না কেন, মাঠে, বিশেষ করে বিপক্ষ বক্সের ভিতর তিনি কতটা ভয়ংকর। রোনাল্ডো প্রথম গোল করলেন পেনাল্টি থেকে। দ্বিতীয় গোল ডিফেন্সের ভুলকে কাজে লাগিয়ে।
রোনাল্ডোর হিসাব
মোট ৭০ মিনিট মাঠে ছিলেন রোনাল্ডো। তার মধ্যে ৮৫ শতাংশ নিখুঁত পাস বাড়িয়েছেন, ৪০ বার ওয়ান টাচে খেলেছেন, চারবার বিপক্ষের একাধিক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন, গোলে ছয়টা শট মেরেছেন, দুটি গোল করেছেন, একটা সুযোগ তৈরি করেছেন। রোনাল্ডো বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি এখনো কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন।
গোলের জন্য
পিএসজি-তে খেলছিলেন মেসি, এমবাপে, নেইমার। আর রিয়াধ অল স্টারকে টানছিলেন মূলত রোনাল্ডো। মাঠে বারবার দেখা যাচ্ছিল, তার সেই গোলক্ষুধা আগের মতোই আছে। বারবার গোলের জন্য ঝাঁপাচ্ছেন। পুরো দলকে খেলাচ্ছেন। রোনাল্ডোকে সৌদির মাঠে পুরনো চেহারায় দেখা গেল।
মেসির গোল
খেলা তখন সবে তিন মিনিট গড়িয়েছে। বক্সের বাইরে থেকে বল বাড়িয়েছিলেন নেইমার। সেই বল ধরে নিখুঁতভাবে গোলে ঠেললেন মেসি। মনে হচ্ছিল, বিশ্বকাপে যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই শুরু করলেন তিনি। এরপরেও কয়েকবার মেসির পায়ের জাদু দেখা গেছে। তবে নিজে আর গোল করতে পারেননি। সহযোগীদের জন্য গোলের রাস্তা অবশ্য খুলে দিয়েছিলেন।
নেমারের পেনাল্টি মিস
নেমারকে বক্সে ফাউল করার জন্য পেনাল্টি পায় পিএসজে। নেইমারই পেনাল্টি মারতে যান। কিন্তু তার শট ধরে ফেলেন অল-স্টারের গোলকিপার।
এমবাপের চেষ্টা
গোল করার জন্য বারবার চেষ্টা করছিলেন এমবাপে। বাম প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন। মেসির পাস থেকে একবার গোল করেছিলেন। অফসাইডের জন্য সেই গোল বাতিল হয়। তবে বক্সের মধ্যে সৌদির এক প্লেয়ারের হাতে বল লাগায় পেনাল্টি পায় পিএসজে। এবার এমবাপে শট নিতে যান এবং অনায়াসে গোল করেন।
গোলের ঠিকানা লেখা
এমবাপের পাস থেকেই গোল করে যান মারকুইনোস। বক্সের মধ্যে গতি বাড়িয়ে বিপক্ষের ডিফান্ডারদের ধোঁকা দিয়ে বল সাজিয়ে দেন এমবাপে। সেই গোল করতে মারকুইনোসের অসুবিধা হয়নি।
লাল কার্ড
প্রদর্শনী খেলা হলে কী হবে, এই ম্যাচ ছিল উত্তেজনায় ভরপুর। এমনকী পিএসজির জুয়ান বার্নেসকে মারাত্মক ফাউল করার জন্য লাল কার্ড দেখান রেফারি। খেলার ৩৮ মিনিটে এই ঘটনা ঘটে। তারপর ১০ জনে খেলে পিএসজি। তা সত্ত্বেও তারা ৫-৪ গোলে ম্যাচ জেতে।
৭০ মিনিট পর
ম্যাচের ৭০ মিনিটে শুধু রোনাল্ডো নন, মেসি, এমবাপে, নেইমার সবাইকেই তুলে নেন কোচেরা। তাদের জায়গায় নামেন অন্যরা। কিন্তু যতক্ষণ তারা মাঠে ছিলেন, ততক্ষণ এক অসাধারণ ফুটবলের সাক্ষী থাকেন মাঠে উপস্থিত দর্শকরা।
৭০ হাজার দর্শক
মাঠে ছিলেন অমিতাভ বচ্চন। খেলার আগে দুই টিমের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলাপ করেন তিনি। মেসি, রোনাল্ডো ও এমবাপের সঙ্গে তাকে বেশি কথা বলতে দেখা যায়। পুরো মাঠ ছিল দর্শকে ঠাসা। মোট ৭০ হাজার দর্শক খেলা দেখেছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।