স্কুলে ইসলামশিক্ষা চলবেই
১০ নভেম্বর ২০১৭জার্মানির বেশিরভাগ স্কুলে ধর্মশিক্ষার প্রচলন রয়েছে৷ বহুকাল ধরে মূলত ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্ট সম্প্রদায় সাধারণ স্কুলের ক্লাসে এই শিক্ষা দিয়ে এসেছে৷ তবে জার্মান সংবিধানে রাষ্ট্র ও ধর্ম পৃথক রাখার যে বিধান রয়েছে, তার ফলে এখনো পর্যন্ত একমাত্র খ্রিষ্টান গির্জার সংগঠন নিজ নিজ সম্প্রদায়ের জন্য স্কুলে ধর্মশিক্ষা দিয়ে এসেছে৷ রাষ্ট্র বা কোনো রাজনৈতিক ভাবধারার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই৷ সাম্প্রতিক কালে ইসলাম ধর্মশিক্ষার নানা বিচ্ছিন্ন উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে৷ তবে শিক্ষা রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারে পড়ে বলে গোটা জার্মানি জুড়ে ধর্মশিক্ষার কোনো একক মানদণ্ড বা ব্যবস্থা নেই৷
জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যেও স্কুলে ইসলাম ধর্মশিক্ষার এক পরীক্ষামূলক উদ্যোগ চলছে৷ ২০১২ সাল থেকে এই মডেল প্রকল্প শুরু হয়েছে৷ চলবে ২০১৯ পর্যন্ত৷ একটি পরিষদ এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধান করছে, যার অর্ধেক সদস্য মুসলিম৷ রাজ্যের স্কুল মন্ত্রণালয় বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের সঙ্গে পরামর্শ করে তাঁদের বাছাই করেছে৷
মডেল প্রকল্প শেষ হলে রাজ্যের স্কুলগুলিতে নিয়মিত ইসলাম শিক্ষা চালু করা হবে, এমনটাই ধরে নেওয়া হয়েছে৷ প্রায় ৪০ হাজার মুসলিম স্কুল পড়ুয়ার জন্য এই শিক্ষা চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার৷ কিন্তু সেই দায়িত্ব সরাসরি নিজেদের হাতে তুলে নিতে চেয়েছিল জার্মানির দুই প্রধান ইসলামি সংগঠন৷ জার্মানির কেন্দ্রীয় মুসলিম পরিষদ ও ইসলাম পরিষদ যৌথভাবে এই দায়িত্ব দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল৷ কিন্তু রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে৷ বিচারকদের মতে, সংবিধান অনুযায়ী এই দুই সংগঠন মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নয়৷ তাই তারা ধর্মশিক্ষার দায়িত্ব পেতে পারে না৷
বলা বাহুল্য, আবেদনকারী দুই সংগঠন এই রায়ের ফলে হতাশা প্রকাশ করেছে৷ তারা নিজেদের ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্ট গির্জা সংগঠনের মতো মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবেই গণ্য করে৷ ২০০৫ সালে জার্মানির সর্বোচ্চ আদালত অবশ্য এক রায়ে তাদের সেই স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছিল৷ কারণ ইসলাম ধর্মের উপর তাদের কর্তৃত্ব মসজিদ স্তর পর্যন্ত সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়৷ সমালোচকরাও তাদের শুধু ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে – ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করার মতো কর্তৃত্ব তাদের নেই৷ তাছাড়া তাদের উপর বিদেশি রাষ্ট্রের জোরালো প্রভাবও দেখা যায় বলে অভিযোগ রয়েছে৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, ইপিডি)
বন্ধু, প্রতিবেদনটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানতে চাই আমরা৷ তাই লিখুন নীচের ঘরে৷