নিহত জঙ্গিদের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র
২৭ আগস্ট ২০১৬পুলিশের আইজি বলেছেন, অভিযানের সময় জঙ্গিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়লে পুলিশ তাদের স্নাইপার রাইফেল দিয়ে গুলি করলে তারা নিহত হয়৷ পুলিশ নিহতদের যে ছবি প্রকাশ করেছে তাতে এক জঙ্গির মরদেহের বুকের ওপর একটি আগ্নেয়াস্ত্র স্পষ্ট৷
পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়া এলাকার একটি বাড়ির তিন তলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছিল৷ ভোর থেকেই পুলিশের সোয়াট এবং কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে রাখে৷ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা এক ঘণ্টার অভিযানে তিন জঙ্গি নিহত হয়৷ পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক জানান, অভিযানের পর তামিম চৌধুরীর ছবির সঙ্গে একটি মরদেহের হুবহু মিল পাওয়া যায়৷ আমরা নিশ্চিত যে ওটাই তামিম চৌধুরী৷ বাকি দু'জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে৷
তিনি বলেন, ‘‘অভিযানের শুরুতে জঙ্গিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়ে৷ তখন পুলিশ স্নাইপার রাইফলে দিয়ে গুলি করলে জঙ্গিরা নিহত হয়৷''
এক সাংবাদিক আইজিপিকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি নিশ্চত তারা পুলিশের গুলিতেই নিহত হয়েছে? জবাবে আইজিপি বলেন, ‘‘জঙ্গিদের গুলি করেছে পুলিশ, তারা কি আপনার গুলিতে নিহত হবে?''
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘গুলশান হামলার মাস্টার মাইন্ড তামিম চৌধুরী নিহত হয়েছে৷ তামিম চৌধুরী চ্যাপ্টার শেষ৷ আমরা আশা করছি বাকি জঙ্গিরাও শিগগিরই গ্রেপ্তার হবে৷''
প্রসঙ্গত, গত পহেলা জুলাই গুলশান হামলার পর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ক্যানাডিয়ান নাগরিক তামিম চৌধুরীর নাম গুলশান হামলার ‘মাস্টার মাইন্ড' হিসেবে আলোচনায় আসে৷ পুলিশ এও জানায় যে সে বাংলাদেশেই অবস্থান করছে৷ এরপর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর পুলিশ জানায়, তামিম চৌধুরী ওই আস্তানায় নিয়মিত যেতো৷ এরপর পুলিশ তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে৷
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ছানোয়ার হোসেন জানান, অভিযানের পর আস্তানায় একে-২২ রাইফেলসহ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে৷ তবে তারা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আগেই পুড়িয়ে ফেলেছে৷
অভিযানের পর পুলিশ নিহত জঙ্গিদের মরদেহ এবং বাড়ির ভেতরের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে৷ আর তাদের দেখা যায় নিহত এক জঙ্গির মরদেহের বুকের ওপর একটি একে-২২ রাইফেল৷ এছাড়া আরেকটি ছবিতে কিছু বই, একটি দূরবীন, একটি চশমা, কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ এদিক-ওদিক পড়ে থাকতে দেখা যায়৷
পুলিশ জানায়, ক্রাইম সিনের কাজ শেষ হলে তিন জঙ্গির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হবে৷
তারা জানায়, জঙ্গিরা ওষুধ ব্যবসায়ী পরিচয়ে এই বাড়ির তিন তলা জুলাই মাসে ভাড়া নিয়েছিল৷
উল্লেখ্য, গত পহেলা জুলাই গুলশান হামলায় ১৭ জন বিদেশি নাগরিকসহ মোট ২০ জন নিহত হন৷ অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা৷ আর অভিযানে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন৷
এরপর ২৬ জুলাই ঢাকার কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হয়৷ সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ অভিযানে নিহত হল আরো তিন জঙ্গি৷