স্পিকারের বিদেশ সফরে ট্রাম্পের বাধা
১৮ জানুয়ারি ২০১৯বৃ্হস্পতিবার ন্যান্সি পেলোসির ব্রাসেলস ও আফগানিস্তান সফরে যাওয়ার কথা ছিল৷ এর আগে মঙ্গলবার স্টেট অব দ্য ইউনিয়নে ট্রাম্পের ভাষণ দেওয়া স্থগিতের অনুরোধ করেন ন্যান্সি৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, তারই পাল্টা ব্যবস্থা নিলেন ট্রাম্প৷ বছরের শুরুতে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে প্রেসিডেন্টের স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের ভাষণ দেওয়া এক রকক নিয়মের মধ্যেই পড়ে৷
সরকারি সামরিক বাহিনীর বিমানে সফর কথা ছিল ন্যান্সির৷ শেষ মুহূর্তে ট্রাম্পের নির্দেশে সেই যাত্রা ভণ্ডুল করা হয়৷ হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ হুকাবি স্যান্ডার্স টুইটার বার্তায় পেলোসির সফর নিয়ে ট্রাম্পের নির্দেশনা সম্বলিত চিঠি প্রকাশ করেন৷ সেই চিঠিতে ট্রাম্প বলেন, সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ নিয়ে আলোচনা ও অচলাবস্থা নিরসনে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের দেশে থাকাই ভালো হবে৷ তিনি আরো বলেন, যদি একান্তই স্পিকার যেতে চান, তাহলে তিনি বেসামরিক বিমানে ভ্রমণ করতে পারেন৷ সরকারি সামরিক বিমান উড্ডয়নই কেবল স্থগিত করা হয়েছে, পেলোসির যাত্রা নয়৷
এদিকে প্রেসিডেন্টের এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পেলোসির মুখপাত্র ড্রিউ হ্যামিল৷ অপর এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, এই সফর আফগানিস্তানের উদ্দেশ্যেই ছিল৷ পথে ব্রাসেলসে থামার উদ্দেশ্য ছিল দুটো৷ এক, চালককে বিশ্রাম দেওয়া, দুই, ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদর দফতরে যাওয়া, সেখানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ আস্থা আছে সেটা পুনঃপ্রকাশ করা৷
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে ড্রিউ হ্যামিল বলেন, প্রেসিডেন্ট যে অচলাবস্থার কথা বলে পেলোসির সফর বাতিল করলেন, সেই অবস্থা চলাকালে তিনি পুরো দল নিয়ে ইরাক সফর করে এসেছেন৷ একইসঙ্গে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের আয়োজনেও প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন৷ ড্রিউ হ্যামিলের এই সমালোচনার জের ধরে পরে এক বিবৃতিতে দাভোস প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে হোয়াইট হাউস৷
উল্লেখ্য, মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল নির্মাণের জের ধরে চলমান অচলাবস্থার ২৭ দিন কেটে গেছে৷ চলমান শাটডাউনে সরকারি কর্মীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বেতন নেননি ১০২ জন কংগ্রেস সদস্য৷ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম প্রায় ৮ লাখ সরকারি কর্মী এত দীর্ঘ সময় বেতনহীন কাটাচ্ছে৷
মেক্সিকোর সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের যে প্রতিশ্রুতি ট্রাম্প দিয়েছিলেন তা বাস্তবায়নের অর্থ বরাদ্দ নিয়েই বিবাদের শুরু৷ প্রথমে মেক্সিকো সরকার এই অর্থ দিতে চাইলেও পরে অস্বীকৃতি জানায়৷ ট্রাম্প তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণে কংগ্রেসের কাছে ৫৭০ কোটি ডলার দাবি করেন৷ কিন্তু জনগণের করের টাকায় এই ‘অহেতুক আবদার’ পূরণে অস্বীকৃ্তি জানায় কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্র্যাট৷
এদিকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের তিন চতুর্থাংশ কার্যক্রম পরিচালনার অর্থ বরাদ্দ করা আছে৷ বাকি এক চতুর্থাংশের বাজেট ফুরিয়ে যাওয়ায় অচলাবস্থা ঠেকাতে গত ২১ ডিসেম্বর নতুন অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দ ছিল অপরিহার্য৷ সেসময় ট্রাম্প ঘোষণা দেন দেয়াল নির্মাণের বরাদ্দ ছাড়া তিনি কোনো বাজেট বিলে স্বাক্ষর করবেন না৷ দুই পক্ষের অনড় অবস্থানে বাজেট অনুমোদিত না হওয়ায় ডিসেম্বরের ২২ তারিখ থেকে মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকারের এক চতুর্থাংশ বিভাগ ও সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়৷
এফএ/এসিবি (এপি,ডিপিএ, রয়টার্স)