স্পেনে করোনায় মৃতের সংখ্যার হিসেবে গরমিল
১৭ এপ্রিল ২০২০করোনা সংকটের ক্ষেত্রে একটি বিষয় নিয়ে সংশয় দূর করা কঠিন৷ যে কোনো দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বা মৃত মানুষের সংখ্যা কতটা নির্ভরযোগ্য, সে বিষয়ে সন্দেহের যথেষ্ট কারণ রয়েছে৷ প্রথমত, যথেষ্ট সংখ্যক মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পরীক্ষা করলে তবেই প্রকৃত চিত্র পাওয়া সম্ভব৷ পরীক্ষার মান, কোন পর্যায়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে, এমন সব বিষয়ও বিচার করা জরুরি৷ মৃতের সংখ্যার ক্ষেত্রেও নানা কারণে এমন অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে৷ ঠিক সময়ে শনাক্ত না করতে সংক্রমণের হার যে মারাত্মক হারে বেড়ে যেতে পারে, ইউরোপে ইটালি ও স্পেনের মতো দেশে তা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাচ্ছে৷
স্পেনের সরকার এ ক্ষেত্রে ভুলত্রুটি এড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে৷ ফেডারেল ও রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে ক্ষমতার বণ্টনের প্রেক্ষাপটে এতকাল দেশজুড়ে মৃতদের সংখ্যা নির্ধারণের কোনো নির্দিষ্ট মানদণ্ড ছিল না৷ শুক্রবার ফেডারেল সরকারের এক গেজেটের মাধ্যমে দেশের ১৭টি স্বশাসিত অঞ্চলের কর্তৃপক্ষকে করোনা মহামারির কারণে মৃত মানুষের সংখ্যা গণনার সাধারণ মানদণ্ড চালু করার নির্দেশ দিয়েছে৷
স্পেনের ফেডারেল সরকার জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুসরণ করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ তাই যে সব মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, একমাত্র তাদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে সরকারি তালিকায় হিসেব রাখা হবে৷ মৃত্যুর আগে কোনো মানুষের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা গিয়েছিল কিনা, সেটা বিবেচ্য বিষয় হতে পারে না৷
বৃহস্পতিবার স্পেনে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১৯,০০০ ছাড়িয়ে গেছে৷ করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এক লাখ ৮২,০০০-এরও বেশি৷ মৃত্যুর আগে যেসব মানুষের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা গেলেও পরীক্ষা করা হয় নি, তাদের সংখ্যা ধরলে মৃতের সংখ্যা আরও বেড়ে যেতে বাধ্য৷
যেমন স্পেনের উত্তর পূর্বে কাটালুনিয়া অঞ্চলে চলতি সপ্তাহের শুরুতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩,৭০০৷ তবে একমাত্র হাসপাতালে পরীক্ষা চালিয়ে তাদের শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছিল৷ বৃদ্ধাশ্রম বা বাসায় পরীক্ষা করে করোনা ধরা পড়লে সরকারি হিসেবের তালিকায় মৃতদের স্থান হয়নি৷ ফলে অন্তেষ্ট্যির সময় হিসেব মেলেনি৷ একই সময়কালে আরও প্রায় ৩,২০০ মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সন্দেহ থেকে গেছে৷
স্পেনের হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা নিয়েও বিভ্রান্তি কাটছে না৷ রাজ্য সরকারগুলির হিসেব অনুযায়ী এগারো হাজারের বেশি মানুষ হয় করোনা ভাইরাস বা তার উপসর্গের কারণে মারা গেছেন৷ কিন্তু প্রত্যেকটি রাজ্যে হিসেবের মানদণ্ড ভিন্ন হওয়ায় সেই সংখ্যার নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে সংশয় রয়েছে৷
সংকসবি/এসিবি (এপি)