1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগান নারী ক্রীড়াবিদ তহমিনা

৩০ জুলাই ২০১২

চলতি বছর গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে আফগানিস্তানের একমাত্র নারী প্রতিনিধি তহমিনা কোহিস্তানি৷ অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ের চেয়ে আফগান নারীদেরকে খেলাধুলায় উৎসাহী করায় আগ্রহ বেশি তহমিনার৷

https://p.dw.com/p/15gGr
ছবি: privat

খেলার মাঠে তহমিনা কোহিস্তানিকে খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়৷ সহ-দৌঁড়বিদদের মত স্পোর্টস ব্রা কিংবা শর্টস পরিধান করেন না তিনি৷ বরং ২২ বছর বয়সি এই ক্রীড়াবিদ মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকেই মাঠে নামেন৷ হেডস্কার্ফ আর দীর্ঘ-হাতা সোয়েটার পরিধান করে দৌঁড়ান তিনি৷ যদিও ১০০ মিটার দৌঁড়ে তাঁর স্বর্ণজয়ের সম্ভাবনা প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অত্যন্ত ক্ষীণ, তবুও লন্ডন অলিম্পিকে অংশ নিতে পেরেই সন্তুষ্ট তহমিনা৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে -- আমার নিজের জন্য, আমার সম্প্রদায়ের জন্য এবং আমার মাতৃভূমির জন্য অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করা৷''

খেলাধুলা বেছে নেওয়ায় অপমান

তহমিনা হচ্ছেন একমাত্র নারী যাকে তাঁর দেশের পক্ষ থেকে লন্ডন অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে৷ অথচ অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার স্বপ্ন তিনি দেখছেন গত আট বছর অবধি৷ এই সময়ে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন তহমিনা৷ মাত্র ছয়মাস আগে কাবুলের গাজি স্টেডিয়ামে নিবিড় প্রশিক্ষণ শুরু করেন তিনি৷ কিন্তু কারিগরী বিভিন্ন জটিলতা তাঁর অনুশীলনকে কঠিন করে তোলে৷ তাঁর প্রশিক্ষক করিম জানিয়েছেন, ‘‘উন্নত প্রশিক্ষণের সুযোগ পেলে সে স্বর্ণজয় করতে পারতো৷''

Tahmina Kohistani Olympia 2012 Afghanistan
তহমিনা কোহিস্তানিছবি: NOC Afghanistan

আফগানিস্তানের সামাজিক বিধিনিষেধ আর দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থাও তহমিনার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘সকালে আমি যখন স্টেডিয়ামে যেতাম, তখন আমাকে নিরাপত্তা দিতে তিনটি গাড়ি হাজির থাকতো৷'' তিনি বলেন, ‘‘আমি এই পথ বেছে নেওয়ায় অনেকে আমাকে অপমান করেছে৷''

তহমিনা অবশ্য নিজের দেশের মানুষ সম্পর্কে বিশেষ কোন মন্তব্য করতে রাজি নন৷ তিনি বোঝেন যে, তাঁর দেশে এখন নানামুখী সংস্কার চলছে এবং আধুনিক বিষয়াদির সঙ্গে মানিয়ে নিতে তাঁর দেশের নাগরিকদের আরো সময় প্রয়োজন৷

তবে নিজের পরিবারের প্রতি অত্যন্ত সন্তুষ্ট তহমিনা৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার বাবা সবসময় বলেন, আমি সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি৷ এবং আমার অবশ্যই সবার সামনে প্রমাণ করা উচিত আমি ভুল কিছু করিনি৷ সকল নারী যাতে বলেন, ‘আমি তহমিনার মতো হতে চাই', এটাই আমার বাবার প্রত্যাশা৷''

Tahmina Kohistani Olympia 2012 Afghanistan
খেলার মাঠে তহমিনা কোহিস্তানিকে খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়ছবি: NOC Afghanistan

নারী ক্রীড়াবিদদেরকে সমর্থনের প্রতিজ্ঞা

তহমিনা কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রীড়া শিক্ষক হিসেবে যোগ দিতে আগ্রহী৷ এজন্য তিনি এখন প্রয়োজনীয় অধ্যয়ন করছেন৷ অবসর সময়ে তিনি সমাজের অন্যায়, অসংগতি নিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আগে আমার অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণের তীব্র বাসনা ছিল৷ এজন্য আমি আট বছর চেষ্টা করেছি৷ এখন আমি চাই, আমার দেশের মানুষ খেলাধুলায় নারীর অংশগ্রহণকে সমর্থন করুক৷'' এজন্যই লন্ডন থেকে কাবুলে ফিরে সেখানে একটি স্পোর্টস একাডেমী গড়ে তুলতে চান তহমিনা৷ এটা শুধুমাত্র এজন্য নয় যে, নারীরা পদক জয়ের জন্য লড়বে, বরং তাদের স্বাস্থ্য এবং সর্বোপরি উন্নতির জন্যও খেলাধুলা প্রয়োজন৷

আফগান তরুণী এবং নারীদেরকে খেলাধুলায় উৎসাহিত করতে সবকিছু করতেই প্রস্তুত তহমিনা৷ অলিম্পিকে তাই একটি স্বর্ণপদক জয়ের চেয়ে সেদিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন এই আফগান ক্রীড়াবিদ৷

প্রতিবেদন: ওয়াসলাত হজরত-নিজামী / এআই

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য