হত্যার রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
হাসছিলেন তাঁরা৷ গাইছিলেন শান্তির গান৷ তাঁদের ওপরই চলল বোমা হামলা৷ উচ্ছ্বল মানুষগুলো নিমিষেই লুটিয়ে পড়ল মাটিতে৷ আংকারার বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে এখনো চলছে প্রতিবাদ৷ প্রতিবাদ চলছে তুরস্কের বাইরেও৷
শোকের চাদরে তুরস্ক
শনিবারের হামলার ধাক্বা তুরস্ক এখনো সামলে উঠতে পারেনি৷ তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের দ্বিতীয় দিনেও আংকারার হাসপাতালগুলোতে ভিড় জমিয়েছেন শত মানুষ৷ আহতদের দেখতে এসে অনেক দর্শনার্থীই ভেঙে পড়ছেন কান্নায়, নতুন মৃত্যুর খবরেও মুষড়ে পড়ছেন অনেকে৷
ফুলেল শ্রদ্ধা
আংকারার কেন্দ্রীয় রেল স্টেশনের পাশের যে জায়গাটিতে শনিবার বোমা হামলায় ক্ষতবিক্ষত হলো শান্তিকামী মানুষ, সেখানে গিয়ে এখনো ফুল দিচ্ছেন সমমনা ও সমব্যথীরা৷ এভাবেই বোমা হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তাঁরা৷
বোমার আঘাতে মুছল হাসি
অথচ সমাবেশটি ছিল শান্তিপূর্ণ৷ আগতরা নাচে-গানে মুখর করে তুলেছিলেন সিহিয়ে স্কয়ার৷ হঠাৎ দু-দুটি বোমা বিস্ফোরণে থেমে গেল সব৷ সমাবেশস্থলেই লুটিয়ে পড়ে রক্তাক্ত শত দেহ৷
অসহায়ত্ব
ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে থাকা মৃতদেহ দেখে, আহতদের আর্তনাদ শুনে সেদিন অসহায় বোধ করেছেন অনেকে৷ মৃতদেহ ডিঙ্গিয়ে আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন কেউ কেউ৷ পুলিশ তখনো এগিয়ে আসেনি৷ সাধারণ মানুষদের তখন পুলিশের প্রতি হামলার শিকারদের সহায়তার এগিয়ে আসার আহ্বান জানাতে দেখা যায়৷
শান্তির বাণীতে ঢাকা মৃতদেহ
শান্তি সমাবেশে এসে মৃত্যু বরণ করা মানুষগুলোর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহগুলো ঢাকার মতো কাফনের কাপড় তখন ছিল না৷ তাই ব্যানার-ফেস্টুন দিয়েই ঢেকে দেয়া হয় তাঁদের দেহ৷
স্বজন এবং সমমনাদের কান্না
বোমা হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে শত শত মানুষ৷ কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে চিরবিদায় নেয়া স্বজন এবং সমমনাদের জন্য তখন অবশ্য কেঁদে ভাসানো ছাড়া কিছুই করার ছিল না৷
তদন্তের তৎপরতা
একটু দেরিতে হলেও শনিবারই ঘটনার তদন্তে সক্রিয় হতে দেখা যায় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে৷ ফরেনসিক বিভাগের কর্মীরা সেদিনই ঘটনাস্থলে ব্যস্ত সময় কাটান৷
পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
কিন্তু পুলিশের ভূমিকায় জনমনে দেখা দেয় ক্ষোভ৷ বোমা হামলার পর বিক্ষুব্ধ জনতার একাংশ পুলিশের ওপর হামলা চালায়৷ পুলিশের এই গাড়িটিও জনবিক্ষোভের শিকার৷
বিক্ষোভ চলছে
আত্মঘাতী বোমা হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ হামলার জন্য ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস-কে দায়ী করেছে তুরস্কের সরকার৷ তবে হামলার পর তুরস্কে প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ হয়েছে৷ আংকারা এবং ইস্তানবুলসহ কিছু শহরে বোমা হামলার বিক্ষোভ জানানোর সময় এর্দোয়ান-বিরোধী স্লোগানেও ফেটে পড়েছেন বিক্ষু্ব্ধরা৷
জার্মানিতেও বিক্ষোভ
তুরস্কে আত্মঘাতী বোমা হামলার প্রতিবাদে জার্মানিতেও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে৷ওপরের ছবিটি ক্রয়েসবার্গের বিক্ষোভ মিছিলের৷
ফ্রান্সের কুর্দিরাও ক্ষুব্ধ
শনিবারের হামলাটি হয়েছে তুরস্কের কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলে৷ নিহত এবং আহতরা মূলত কুর্দি এবং বামপন্থি দলের নেতা-কর্মী৷ তাই সারা বিশ্বের সব কুর্দির মাঝেই দানা বেঁধেছে ক্ষোভ৷ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কুর্দি ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল৷