হলিউডের ছবিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব!
২২ জানুয়ারি ২০১৩এ সব ছবিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে দেখানো হয় দেশপ্রেমিকের মতো করে৷ সেখানে অমানবিক কিছু করা হলেও সেটা দেশের স্বার্থে করা – এই যুক্তিতে ইতিবাচকভাবেই তুলে ধরা হয়৷ এতদিন এর খুব একটা সমালোচনা না হলেও হালে অনেকেই মুখ খুলছেন৷ বিশেষ করে বিন লাদেনকে হত্যা করার অভিযান নিয়ে তৈরি দুটি ছবি ‘জিরো ডার্ক থার্টি' এবং ‘সিল টিম সিক্স : দ্য রেড অন ওসামা বিন লাদেন'-এর কারণে মুখ খুলেছেন সমালোচকেরা৷ তাঁদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে ‘জিরো ডার্ক থার্টি' ছবির জন্য ক্যামেরার সামনে বসে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা কর্মকর্তারা৷ এভাবে পেন্টাগনের সহায়তায় ছবিটিতে জিজ্ঞাসাবাদের নামে কারো ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো, এমনকি মানুষ হত্যাকেও প্রকারান্তরে সমর্থন জানানো হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ৷
‘জিরো ডার্ক থার্টি'-র পরিচালক ক্যাথরিন বিগেলো অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷
অস্কারের জন্য মনোনীত তাঁর এ ছবি ইউরোপে মুক্তি পাবার আগে অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতিও দিতে হয়েছে তাঁকে৷ গত ১৯শে ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায় ‘জিরো ডার্ক থার্টি৷ এ সপ্তাহে মুক্তি পাবে ইউরোপের কিছু দেশে৷
পেন্টাগনের সঙ্গে হলিউডের সুসম্পর্ক অবশ্য নতুন কিছু নয়৷ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরের কাছ থেকে যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক ও অন্যান্য সমরাস্ত্র নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের চল দেখা যাচ্ছে অনেক আগে থেকে৷ অস্কারে প্রথমবারের মতো সেরা ছবিকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল ১৯২৯ সালে৷ পুরস্কারটি পেয়েছিল ‘উইংস'৷ ওই ছবিতেও ব্যবহার করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর বিমান থেকে শুরু করে অনেক কিছু৷
এমন ছবি অনেক হয়েছে৷ কিন্তু যখনই যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের পছন্দ নয় এমনভাবে কিছু করার চেষ্টা হয়েছে তখনই সহায়তার হাত সরিয়ে নিয়েছে পেন্টাগন৷ পরিচালক কেভিন কস্টনার তাঁর ‘থারটিন ডেজ' ছবিতে যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার বিমান বাহিনী প্রধান জেনারেল কার্টিস লেম্যা-কে দেখিয়েছেন এক যুদ্ধবাজ সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে৷ কিন্তু এ কারণে তাঁকে ছবির শুটিং করতে হয়েছিল ফিলিপাইন্স'এ গিয়ে৷ কী করবে অতি দেশপ্রেমিক হিসেবে লেম্যা-কে তুলে ধরতে রাজি না হওয়ায় পেন্টাগন তো বিমান, ট্যাঙ্ক এসব দিতেই রাজি হয়নি৷ এমন ঘটনা অনেক আছে৷ অলিভার স্টোনের ‘প্লাটুন', ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার অ্যাপোকেলিপস নাউ' সহ ভিয়েতনাম যু্দ্ধ নিয়ে নির্মিত অনেক ছবির পরিচালকই কথা না শোনায় পেন্টাগন তাঁদের কোনো সহায়তা করেনি৷
এসিবি/এসবি (এএফপি)