হিজাবী নারীদের মেটাল ব্যান্ড
বিশ্বের কিছু মুসলিম দেশে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক, আবার অনেক দেশে হিজাব নিষিদ্ধ৷ এবার সেই বিতর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার এক মেটাল ব্যান্ড দল৷ তিন নারী সদস্যের এই দলের সবাই হিজাব পরাসহ সব ইসলামি অনুশাসন মেনে চলেন৷
দলের নাম চিৎকার
ব্যান্ডের নাম ‘ভয়েস অফ বাচেপ্রট’৷ ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভার গারুত শহরে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই ব্যান্ড৷ শহরের আদিবাসীদের ভাষা সানডানিজ৷ এ ভাষায় ভয়েস অফ বাচেপ্রট অর্থ চিৎকার৷ দেশটির ১৫ ভাগ মানুষ কথা বলেন এই ভাষায়৷
দলের সদস্য কারা?
তিন নারী সদস্যের এই ব্যান্ডের দলনেতা ফির্দা কুর্নিয়া৷ গিটার যেমন ভালো বাজাতে পারেন, গানের গলাও তেমনি অসাধারণ৷ বাকি দুই সদস্য ইউয়িস সিতি আইসাহ এবং ভিডি রহমাওয়াতি৷ আইসাহ বাজান ড্রামস, ভিডি রহমাওয়াতি বেস৷ ছেলেদের কোনো দলের চেয়ে তাঁরা কোনো অংশে কম না৷
কেন মেটাল ব্যান্ড?
এখন ব্যান্ডের ম্যানেজার, একসময় স্কুলের মিউজিক শিক্ষক এরজা সাতিয়া৷ তার মিউজিক কালেকশন দেখেই অনুপ্রাণিত হন কুর্নিয়ারা৷ প্রথমবার মেটাল গান শুনেই এর প্রেমে পড়েন কুর্নিয়া৷ তাদের মনে মধ্যে জেগে ওঠে বিদ্রোহের মনোভাব৷
উঠতি বয়সিদের রোল মডেল
স্কুলে পড়ার সময়ই তিন সদস্য মিলে গড়ে তুলেন এই ব্যান্ড৷ ফলে টিনএজারদের মধ্যে এরই মধ্যে ব্যান্ডটি কুড়িয়েছে ব্যাপক প্রশংসা৷ জাভা তো বটেই, রাজধানী জাকার্তাতেও ছড়িয়ে পড়েছে ভয়েস অফ বাচেপ্রটের সুনাম৷ দেশটির জাতীয় টেলিভিশনেও পারফর্ম করেছে এই মেটাল ব্যান্ড৷
বিতর্ক, হুমকি
মুসলিমপ্রধান দেশের অপেক্ষাকৃত রক্ষণশীল পশ্চিম জাভায় লড়াইটাও কম করতে হচ্ছে না ভয়েস অফ বাচেপ্রটকে৷ ব্যান্ডের ম্যানেজার এরজা সাতিয়া ফোন কলে বেশ কয়েকবার হত্যার হুমকিও পেয়েছেন৷ ধর্মীয় নেতারা বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে ব্যান্ডের কনসার্ট বন্ধের চেষ্টা চালিয়েছেন৷ একবার এক কনসার্টে শব্দ বন্ধ করে বিদ্যুতের তার কেটে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে৷
ভবিষ্যত পরিকল্পনা
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভয়েস অফ বাচেপ্রটের ভক্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে অনেক আগেই৷ বিখ্যাত সব মেটাল ব্যান্ডের গান ছাড়াও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয় নিয়ে নিজেদের লেখা গানও আছে ব্যান্ডের৷ তাঁদের স্বপ্ন, স্কুল ছাড়ার আগেই নিজেদের গান নিয়ে একটি অ্যালবাম বের করা৷ দেশের বাইরে, যুক্তরাজ্য অথবা যুক্তরাষ্ট্রে পারফর্ম করা৷ অথবা, হয়ত কোনো এক আরব দেশে?