হিমবাহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আইসল্যান্ডের অকহিয়াক্যুডল হিমবাহ তার গ্লেসিয়ার স্ট্যাটাস হারিয়েছে৷ সম্প্রতি তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন৷
পার্থক্য
বাঁয়ের ছবিটি ১৯৮৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তোলা৷ ডানেরটি গত ১৬ আগস্টের৷ ছবিতে আইসল্যান্ডের সাবেক অকহিয়াক্যুডল হিমবাহ দেখতে পাচ্ছেন৷ সাবেক বলা হচ্ছে, কারণ, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নিয়মিত বরফ গলায় হিমবাহের সংজ্ঞা অনুযায়ী যে পরিমাণ বরফ থাকার কথা, সেটি অকহিয়াক্যুডলে আর নেই৷ তাই বিজ্ঞানীরা ২০১৪ সালে অকহিয়াক্যুডল হিমবাহকে মৃত ঘোষণা করেন৷
শেষকৃত্য
মৃত্যুর প্রায় পাঁচ বছর পর গত ১৮ আগস্ট অকহিয়াক্যুডল হিমবাহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করা হয়েছিল৷ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই শেষকৃত্যের আয়োজন করা হয়৷ এতে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কাটরিন ইয়াকবসডটিয়ের উপস্থিত ছিলেন৷ বিশ্বে কোনো হিমবাহের জন্য অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজনের এটিই প্রথম ঘটনা৷ এছাড়া অকহিয়াক্যুডলই আইসল্যান্ডের প্রথম হিমবাহ, যাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে৷
ফলক স্থাপন
অকহিয়াক্যুডল হিমবাহের স্মরণে সেখানে একটি ফলক স্থাপন করা হয়েছে৷ ‘ভবিষ্যৎকে লেখা একটি চিঠি’ শিরোনাম দিয়ে ঐ ফলকে লেখা হয়েছে, ‘‘আগামী ২০০ বছরের মধ্যে আমাদের সব হিমবাহের একই পরিণতি হতে পারে৷ আমরা যে এই বিষয়টি এবং এজন্য কী কী করা উচিত, তা জানি, সেটা এই ফলকের মাধ্যমে স্বীকার করে নেয়া হলো৷’’ আইসল্যান্ডে চারশ’র বেশি হিমবাহ রয়েছে৷
এত বরফ গলছে!
যুক্তরাষ্ট্রের রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সিমেন হোভে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷ তিনি জানান, প্রতিবছর আইসল্যান্ডের প্রায় ১১ বিলিয়ন টন বরফ গলে যাচ্ছে৷ ছবিতে অকহিয়াক্যুডল হিমবাহের আগের কোনো এক সময়ের ছবি দেখা যাচ্ছে৷
যেন স্বজনের মৃত্যু
ছবি দেখে কি মনে হচ্ছে যে, এই নারী কোনো স্বজনের শেষকৃত্যে গিয়েছেন? না, আসলে তিনি একটি গ্লেসিয়ারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় গিয়েছেন৷ শুধু এই নারী নন, শিশুসহ প্রায় আড়াইশ’ মানুষ দুই ঘণ্টা পাহাড়ি পথ বেয়ে সুইজারল্যান্ডের পিৎসল পাহাড়ে গিয়েছিলেন পিৎসল হিমবাহের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ নিতে৷ ছবিটি গত ২২ সেপ্টেম্বর তোলা৷ অর্থাৎ, আইসল্যান্ডের পরের ঘটনা এটি৷
তবে এটিই প্রথম নয়
আইসল্যান্ডে এখন পর্যন্ত শুধু একটি হিমবাহের মৃত্যু হলেও ১৮৫০ সাল থেকে সুইজারল্যান্ডের ৫০০-র বেশি গ্লেসিয়ার হারিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন গ্লেসিয়োলজিস্ট মাটিয়াস হুস৷ এর মধ্যে অন্তত ৫০টি গ্লেসিয়ারের নামকরণ করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি৷
ইশ্বরের সহায়তা কামনা
পিৎসল হিমবাহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে স্থানীয় যাজক জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইশ্বরের সহায়তা কামনা করেন৷
বরফ গলায় শীর্ষস্থানচ্যুত!
১৩৯ বছর ধরে সুইডেনের সবচেয়ে উঁচু চূড়া ছিল কেবনেকাইসে পর্বতের দক্ষিণ চূড়া৷ তবে নিয়মিত বরফ গলায় সম্প্রতি সে তার আসন হারিয়েছে৷ বরফ গলার কারণে গত ৫০ বছরে ২৪ মিটার উচ্চতা হারিয়েছে দক্ষিণ চূড়া৷ ফলে এখন থেকে সুইডেনের শীর্ষ চূড়া হচ্ছে কেবনেকাইসের উত্তর চূড়া৷