ভারতে দুর্নীতি
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ইটালির ফিনমেকানিকার নিয়ন্ত্রণাধীণ সংস্থা অগুস্তা-ওয়েস্টল্যান্ডের কাছ থেকে ভিভিআইপিদের জন্য ৩,৬০০ কোটি টাকায় ১২টি হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি হয় ভারতের৷ এই সওদায় ৩৬০ কোটি টাকার ঘুস কাণ্ড নিয়ে বুধবার সংসদে বিতর্ক শুরু হয়৷ প্রধান বিরোধীদল বিজেপির অভিযোগ, সরকার প্রথমদিকে বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেবার চেষ্টা করে৷
তাই সংসদে বিজেপি নেতার দাবি - এক, কথিত এই দুর্নীতির তদন্ত করতে হবে সময়-ভিত্তিকভাবে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে৷ দুই, ঘুসের টাকা কোন পথে এবং কার মাধ্যমে ভারতে আসে তা বের করা এবং তিন, প্রধান দুই অভিযুক্ত হাসকে এবং গেরোচাকে ভারতে এনে স্বীকারোক্তি আদায় করে জেনে নিতে হবে, কাদের ঘুস দেয়া হয়েছিল৷ সংসদীয় কমিটির তদন্ত অপ্রয়োজনীয় যেহেতু বর্তমান সংসদের মেয়াদ আর মাত্র এক বছর৷
ঘুসকাণ্ডের অপরাধ সংক্রান্ত দিকটি সুপ্রিমকোর্টের নজরদারিতে সিবিআই তদন্ত সমর্থন করে সিপিআই৷ পাশাপাশি, প্রতিরক্ষা সওদা নীতি পর্যালোচনা করা দরকার যাতে ভবিষ্যত প্রতিরক্ষা সওদা দুর্নীতিমুক্ত রাখা যায়৷
কংগ্রেস নেতা পাল্টা আঙুল তোলেন সাবেক বাজপেয়ী জমানার দিকে৷ বলেন, ভিভিআইপি কপ্টার কেনার চিন্তাভাবনা শুরু হয় ১৯৯৯ সালে বাজপেয়ীর আমলে৷ প্রাথমিকভাবে ৬,০০০ মিটার উঁচু দিয়ে উড়তে পারে এমন কপ্টার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ ২০০৩ সালে কপ্টারের গুণগত মাপকাঠি বদলে ৪,৫০০ মিটার করা হয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রজেশ মিশ্রের নির্দেশে এবং সেইভাবেই ডাকা হয় টেন্ডার৷ অর্থাৎ মনমোহন সিং সরকার দায় চাপাতে চাইছে সাবেক বাজপেয়ী সরকারের ঘাড়ে৷
এদিকে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো সিবিআই ইটালির কাছ থেকে পাওয়া নথিপত্রের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে এগারজনের বিরুদ্ধে৷ তারমধ্যে আছে বিমানবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান, তাঁর দুই আত্মীয়, অ্যারোমেট্রিক্স সংস্থার দুই এজেন্ট হাসকে ও গেরোচা এবং ভারতের দুটি জনসংযোগ কোম্পানি যার মাধ্যমে ঘুস দেয়া হয় বলে অভিযোগ৷ বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের জেরে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সিদ্ধান্ত, কপ্টার কেনার বাকি টাকা এখন মেটানো হবেনা৷ গোটা চুক্তিটাই আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে৷