সিওটু-র নির্গমন চরমে
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪২০১৩ সালে যে গ্রিনহাউস গ্যাসটি সত্যিই বেড়েছে, সেটি হলো কার্বন ডাই অক্সাইড৷ অপরদিকে সিওটু-র মাত্রা যেভাবে বাড়ছে, তা কিন্তু কয়লা গোত্রীয় তথাকথিত অশ্মীভূত জ্বালানির ব্যবহারের চেয়েও বেশি – যার অর্থ, আমাদের পৃথিবীর সিওটু শুষে নেবার যে স্বাভাবিক ক্ষমতা আছে, তা দৃশ্যত কমে যাচ্ছে৷
ডাব্লিউএমও-র মহাসচিব মিশেল জারো গত মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে, বিশ্বের বায়োস্ফিয়ার, অর্থাৎ উদ্ভিদ ও মাটি, হয়ত আগের মতো সিওটু শুষে নিতে পারছে না৷ তা যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তাহলে সেটা হবে একটা উদ্বেগের বিষয়৷
মানুষ ও তার গতিবিধি থেকে যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়, বায়োস্ফিয়ার ও সাগরের জল তার প্রায় ২৫ শতাংশ করে শুষে নেয়৷ গ্যাস শুষে নেওয়া কমে গেলে, বায়ুমণ্ডলে সিওটু-র পরিমাণ বাড়তে থাকবে – এবং বায়ুমণ্ডলে সেই কার্বন ডাই অক্সাইড শত শত বছর ধরে থাকতে পারে৷
সাগরের অম্লতাও দ্রুত বাড়ছে, যার ফলে সাগরের জলও সিওটু শুষে নেবার ক্ষমতা হারাচ্ছে৷ কী হারে বাড়ছে সাগরের অম্লতা? ডাব্লিউএমও বলছে, প্রাক-শিল্পায়ন যুগ থেকে সাগরের অম্লতা বেড়েছে ২৫ শতাংশ, তার মধ্যে ছয় শতাংশ শুধুমাত্র গত দশ বছরে৷
কার্বন নির্গমন যদি এভাবে বাড়তে থাকে...
২০৫০ সালের মধ্যে যদি মানুষের গতিবিধি থেকে সৃষ্ট কার্বন নির্গমন ৮০ শতাংশ কমেও যায়, তা-তেও শতাব্দীর শেষ অবধি বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিশেষ কোনো হেরফের হবে না৷ বলতে কি, অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সিওটু নির্গমন, এই তিন মিলিয়েই বিশ্বের উষ্ণায়ন ও সাগরের অম্লতা কতটা বাড়বে, তা নির্ধারিত হবে৷
২০১৩ সালে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ছিল প্রতি দশ লাখ ভাগে ৩৯৬ ভাগ, যা কিনা ২০১২ সালের তুলনায় দুই দশমিক নয় ভাগ বেশি৷ গ্রিনহাইস গ্যাসগুলির নির্গমন বাড়ছে মূলত চীন, ভারত ও অন্যান্য দ্রুত উন্নয়নশীল দেশে ব্যাপক শিল্পায়নের ফলে৷ তা সত্ত্বেও ডাব্লিউএমও-র ভবিষ্যদ্বাণী হলো: বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস-এর নীচে রাখার মতো জ্ঞান ও পন্থা, দুই-ই আমাদের হাতে আছে৷
এসি/ডিজি (রয়টার্স)