২০২০ সালে আবার ফিরছেন ট্রাম্প?
১৯ জুন ২০১৯২০১৬ সালে মূলমন্ত্র ছিল ‘মেক অ্যামেরিকা গ্রেট এগেন'৷ প্রথম কার্যকালে সেই লক্ষ্য পূরণে নিজেকে সফল হিসেবে তুলে ধরেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ তাই ২০২০ সালে পুনর্নির্বাচনের প্রচার অভিযানের বুলি রেখেছেন ‘কিপ অ্যামেরিকা গ্রেট'৷ মঙ্গলবার ফ্লোরিডার বিশাল জনসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে সেই অভিযান শুরু করলেন ট্রাম্প৷ অরলান্ডো শহরে প্রায় ২০,০০০ সমর্থকদের সামনে তিনি প্রায় ৮০ মিনিট ধরে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন৷
২০২০ সালের নভেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ তার প্রায় দেড় বছর আগে ট্রাম্প কেন তাঁর পুনর্নির্বাচনের জন্য প্রচার শুরু করলেন? প্রথম কার্যকালের শুরু থেকেই তিনি ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছেন৷ সমালোচকদের বার বার ভুল প্রমাণ করে এখনো তিনি ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে পেরেছেন৷ নিজেকে রাজনীতি জগতের ‘বাইরের লোক' হিসেবে তুলে ধরে তিনি সমর্থকদের আস্থা মোটামুটি অটুট রাখতে পেরেছেন৷ কিন্তু বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী সার্বিকভাবে দেশের মানুষের সমর্থন তাঁর পক্ষে নেই৷ অন্যদিকে বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দলের ২০ জনেরও বেশি নেতা ২০২০ সালের নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন৷ প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এরই মধ্যে জনপ্রিয়তার বিচারে তাঁকে পেছনে ফেলে এগিয়ে রয়েছেন৷ তাই আর সময় নষ্ট না করে আসরে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প৷
প্রথম নির্বাচনি জনসভায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় কার্যকালের জন্য নতুন কোনো নীতি বা প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করেন নি৷ মানুষকে শুধু তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছেন৷ ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁরা সবাই দেশে ঢালাও অভিবাসনের সমর্থক৷ তিনি বলেন, বেআইনি অনুপ্রবেশ অ্যামেরিকার মধ্যবিত্ত শ্রেণির অবনতির জন্য দায়ী৷ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তিও দেশের স্বার্থ খর্ব করছে বলে তিনি দাবি করেন৷ ট্রাম্প এ প্রসঙ্গে ‘কিপ অ্যামেরিকা গ্রেট' স্লোগান তুলে ধরেন৷ তাঁর আমলেই ক্যানসার ও এইডসের ওষুধ আবিষ্কার হবে এবং মঙ্গলগ্রহে মার্কিন মহাকাশচারী পাঠানো হবে বলে ঘোষণা করেন৷
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে হোয়াইট হাউসে কাটানো সত্ত্বেও ট্রাম্প এখনো ওয়াশিংটনের ‘ইনসাইডার' বা ভেতরের লোকজন ও কলুষিত রাজনৈতিক কাঠামোর সমালোচনা করে চলেছেন৷ সেইসঙ্গে ‘ফেক নিউজ মিডিয়া' বা সংবাদ মাধ্যমে নিজের সমালোচকদের বিরুদ্ধে বিষাদগারও চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প৷ মঙ্গলবারের জনসভায়ও তাঁর সমর্থকরা সিএনএন-এর বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন৷
আগামী ১৭ মাসে একাধিক চ্যালেঞ্জ মার্কিন প্রেসিডেন্টের পুনর্নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে৷ বিভিন্ন তদন্তের মুখে এখনো পর্যন্ত রেহাই পেয়ে এলেও বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দল ট্রাম্প-কে অপদস্থ করার সুযোগ খুঁজছে৷ দলের একাংশ প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রক্রিয়া চালু করার পক্ষে৷ রিপাবলিকান দল সার্বিকভাবে তাঁকে সমর্থন করে এলেও প্রশাসন থেকে একের পর এক মন্ত্রী ও কর্মকর্তার বিদায় প্রেসিডেন্টের অবস্থান বেশ কিছুটা দুর্বল করে দিয়েছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)