1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২০২১ এক ভয়ংকর বছরের নাম

গৌতম হোড়
৩০ ডিসেম্বর ২০২১

কোনো বছরই অসম্ভব ভালো কাটেনা, আবার কোনো বছর একেবারে খারাপ যায় না৷ ভালোমন্দের মিশেল থাকে৷

https://p.dw.com/p/44zPm
করোনা মহামারির ভয়াবহ একটি বছর পার করেছে ভারতছবি: Samuel Rajkumar/REUTERS

কখনো ভালোর পাল্লা ভারি হয়, কখনো মন্দের৷ তবে সবসময়ই অন্ধকার সুরঙ্গের শেষে আলোর দেখা মেলে৷ ২০২১ সম্পর্কে একথাটা যেন খুবই বেশি করে সত্যি৷ বছরটা শুরু হয়েছিল করোনা-আতঙ্ক দিয়ে৷ চারপাশে শুধু আতঙ্ক, হতাশা, মৃত্যুর ছবি৷ মনে হচ্ছিল, এই অন্ধকার সময় যেন আর কাটবে না৷ লকডাউন, ঘরবন্দি মানুষ, অ্যাম্বুলেন্সের আতঙ্ক-জাগানিয়া সাইরেনের শব্দ মনকে বিবশ করে দিত৷ কিন্তু ওই যে খারাপের শেষে ভালোর ঝলক থাকে৷ দুঃখ, মৃত্যুর পরও থেকে যায় আশা, থেকে যায় প্রাণের নিত্য ধারা, তাই সব শেষ হয় না, হতে পারে না৷

করোনা, আতঙ্ক এবং মৃত্যুমিছিল

সে এক সময় গেছে ভারতে, বিশেষ করে দিল্লিতে৷ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ৷ বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা, আর পুলিশে ছুঁলে অসংখ্য, এটা শোনা ছিল৷ করোনায় ছুঁলে যে সোজা মৃত্যুর ঘা, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ তা দেখিয়ে দিয়েছে৷ দিল্লির বুকে এক চিলতে কলকাতা বলে পরিচিত চিত্তরঞ্জন পার্ক৷ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে শুধু এখানেই মারা গেছেন ৭৫০ জন৷ দিল্লিতে তখন অ্যাম্বুলেন্স নেই, হাসপাতাল খাট নেই, অক্সিজেন নেই৷ প্রাণদায়ী অক্সিজেন পাওয়া গেলেও রোগী বাঁচবে কি না সন্দেহ৷ মরেও শান্তি নেই৷ শ্মশান, কবরস্থানে দীর্ঘ লাইন৷ সৎকার করতে বেলা পার হয়ে যায়৷

আর গঙ্গা দিয়ে ভেসে আসে শয়ে শয়ে শব৷ গঙ্গার বালিতে পুঁতে দেয়া হয় লাশ৷ প্রশাসন বলে, ওটা নাকি কিছু জনগোষ্ঠীর প্রথা৷ তারপর যখন ভিডিওতে ভেসে ওঠে  সেই ভয়ংকর ছবি, অ্যাম্বুলেন্স থেকে মৃতদেহ ফেলে দেয়া হচ্ছে নদীতে৷ যা দেখে যাত্রাপালার বিবেকও লজ্জা পায়৷ দেশজুড়ে স্বাস্থ্যপরিকাঠামোর বেহাল ছবি সামনে ভেসে ওঠে৷

মানুষ ঘরবন্দি হয়ে থাকতে থাকতে অস্থির হয়ে পড়লেন৷ মানসিক চাপ বাড়তে লাগলো৷ চাকরি যেতে শুরু করলো৷ অনেকের কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেল৷ বহু মানুষের বেতন কমে গেল৷ উৎপাদন-ভিত্তিক শিল্পগুলি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকল৷ এই বিপর্যয়ের প্রভাবে বহু মানুষ মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেন৷ এ বড় সাংঘাতিক সময়৷ ২০২১ তাই এক ভয়ংকর বছরের নাম৷

ভয়ংকর স্মৃতিও ক্ষণস্থায়ী

Indien Kolkata
বর্ষশেষের উৎসবে মেতে উঠেছেন কলকাতার মানুষছবি: Subrata Goswami/DW

আবার সেই ২০২১-ই চোখে আঙুল দিয়ে আরেকবার দেখিয়ে দিয়েছে, যত ভয়ংকর ঘটনাই হোক না কেন, তার স্মৃতি দীর্ঘস্থায়ী হয় না৷ না হলে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন স্তিমিত হয়ে গেল, কড়াকড়ি কমে গেল, অফিস-কাছারি খুললো, স্কুলও খুলতে শুরু করলো, বাস, ট্রেন, মেট্রো চলাচল শুরু করলো, তখন অনেক মানুষ আবার মুখ থেকে মাস্ক খুলে ফেললেন৷ দূরত্ব বজায় রাখার পাট উঠে গেল৷

বাজারে মানুষের ভিড়, উৎসব এলেই করোনাকে আমল না দিয়ে মানুষ নেমে পড়ছেন রাস্তায়৷ বড়দিনের পর থেকে যেভাবে কলকাতায় হাজার হাজার মানুষ পার্ক স্ট্রিট সহ বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হয়ে আনন্দ করছেন, তা দেখে মনে হচ্ছে, সব ভুলে গিয়ে তারা আবার করোনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন৷ ২০২১ তাই চেতনাহীনতার বছর হয়েও থাকবে৷

বৃষ্টি, বন্যা, ঝড়, ধস, আগুনের বছর

Indien | Wirbelsturm Yaas
মে মাসে সাইক্লোন ইয়াসের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় জনপদছবি: Rupak De Chowdhuri/REUTERS

একদিকে করোনা, অন্যদিকে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়৷ ফলে ২০২১ সুখের বছর ছিল না, বরং বছরের অনেকটা জুড়েই ছিল কষ্টের ঘটনা৷ বৃষ্টি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ধস, আগুনের ঘটনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে ভারতকে৷

২১ জানুয়ারি টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউটে আগুন লেগে পাঁচজনের মৃত্যু হয়৷ সেই শুরু৷ বেশ কয়েকটি রাজ্যে করোনা হাসপাতালে আগুন লেগে রোগী মারা গেছেন৷

পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা এই বছরই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডব দেখেছে৷ ঘূর্ণিঝড় জওয়াদ আছড়ে পড়েনি ঠিকই, কিন্তু তার জেরে প্রবল বৃষ্টিতে কলকাতা ডুবেছে৷ লাগাতার বৃষ্টির পর ডিভিসি জল ছাড়ায় পশ্চিমবঙ্গের বহু জেলায় ভয়ংকর বন্যা হয়েছে৷ উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির জেরে ধস নেমেছে৷ কেরালায় অন্তত দুইবার প্রবল বন্যা ও ধস হয়েছে৷ উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলে অসংখ্যবার মেঘফাটা বৃষ্টির পর চকিত বন্যা হয়েছে৷

জুন মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বাজ পড়ে মারা গেছেন ১৭৭ জন৷ কলকাতায় রাস্তার জমা জলে বিদ্যুতের তার পড়ে মারা গেছেন মানুষ৷ কিছুদিন আগেও বৃষ্টিতে ভেসেছে কলকাতা৷ মুম্বই, দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরুও প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে৷ দিল্লি আবার বেহাল হয়েছে দূষণে৷ দেওয়ালির পর দূষণের চাদরে আচ্ছাদিত থেকেছে দিল্লি৷

সবমিলিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি হাড়েহাড়ে বুঝেছে ভারত৷ বন্যা, ধস, বৃষ্টি, আগুন, ঝড়, বজ্রপাত ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বারবার বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ভারত৷ ২০২১ তাই কৃতকর্মের ফলভোগ করার বছর৷

মমতার জয় এবং ভোট সহিংসতা

Indien | Regionalwahlen | Ergebnisse Zwischenwahlen | Gewinn für Mamata Banerjee
পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ছবি: Satyajit Shaw/DW

২০২১-এ করোনার মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে৷ এই নির্বাচনে বিজেপি-র জয়রথ থামিয়ে দিতে পেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ পূর্ণশক্তি দিয়ে লড়েছেন, বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি নেতাদের নিয়ে এসেছেন, দিনের পর দিন প্রচার করেছেন৷ তা সত্ত্বেও জিততে পারেননি৷ পরপর তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা

২০২১ সালে ভারতীয় রাজনীতিতে এ এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা, সন্দেহ নেই৷ কিন্তু এই বিধানসভা ভোটের আগে ও পরে পশ্চিমবঙ্গে যে সহিংসতা হয়েছে, তা অভূতপূর্ব৷ একদা ভোটের সময় সহিংসতার জন্য বিখ্যাত ছিল বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য৷ কিন্তু সেখানে এখন ভোট শান্তিতে হয়৷ পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার মতো বাঙালিপ্রধান রাজ্যে ভোটে সহিংসতা মাত্রাছাড়া জায়গায় চলে যাচ্ছে৷ শুধু বিধানসভা ভোটই নয়, সদ্যসমাপ্ত কলকাতা পুরসভার ভোটেও একই ছবি দেখা গেছে৷ বিরোধী কর্মী, এজেন্ট, প্রার্থীকে মারধর, ভয় দেখানো, বুথ জ্যাম করে দেয়া, বুথদখল করে ছাপ্পা ভোট দেয়া, বোমাবাজি কী হয় না পশ্চিমবঙ্গের ভোটকে কেন্দ্র করে৷ ২০২১ সালেও এই প্রবণতার বাইরে যেতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ৷ সেইসঙ্গে প্রচারের ভাষা এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে তা কহতব্য নয়৷ ২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে সেই আমরা-ওরা, সেই বহিরাগতের মতো বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে, যা কোনো গণতন্ত্রে কাম্য হতে পারে না৷ ২০২১ তাই ভারতীয় রাজনীতিতেও সুখের বছর ছিল না৷

ডোলের রাজনীতি

ভারতে এখন ডোলের রাজনীতির রমরমা৷ ২০২১ সালে তা বেড়েছে বই কমেনি৷ যত দিন যাচ্ছে, ততই তা ভয়ংকর জায়গায় চলে যাচ্ছে৷ ডোলের রাজনীতি মানে, ভোটে জিততে প্রতিটি দল ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেয়৷ মমতা যেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি গৃহস্থ নারীদের মাসে পাঁচশ থেকে এক হাজার টাকা দেবেন৷ দলিত ও আদিবাসী নারীরা পাবেন এক হাজার টাকা৷ বাকিরা ৫০০ টাকা করে৷ ক্ষমতায় আসার পর সেই প্রকল্প কার্যকর হয়েছে৷ কোনো কাজ না করে গৃহস্থ নারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাচ্ছে৷

এর সাফল্যে উৎসাহী হয়ে তৃণমূল গোয়ায় জানিয়েছে, তারা ক্ষমতায় এলে মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে দেবে৷ আপ গোয়ায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা নারীদের এক হাজার টাকা করে দেবে৷ প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০১৯-এর আগে ক্ষুব্ধ কৃষকদের মন পেতে বছরে তিন কিস্তিতে ছয় হাজার টাকা দিয়েছেন৷ ছাত্রছাত্রীদের পশ্চিমবঙ্গে ট্যাব, উত্তরপ্রদেশে ল্যাপটপ দেয়া হয়েছে৷ ২০২১-এ দেখা গেছে, এইভাবে কোনো কাজ না করেই টাকা ও জিনিস দেয়ার প্রবণতা বেড়েছে৷ এই টাকা আসে করদাতাদের কাছ থেকে৷ ভোটে জিততে এইভাবে অর্থবিলির পর উন্নয়নের কাজে টাকা থাকে না৷ সেটাই বিভিন্ন রাজ্যে হচ্ছে৷ ২০২১ তাই ব্যতিক্রমী বছর হতে পারেনি৷

রাজনীতি ও সাম্প্রদায়িকতা

এই করোনাকালেও ভোট এলে দেখা গেছে, সাম্প্রদায়িক ভাবাবেগ উসকে দেয়ার কাজ হয়েছে ও হচ্ছে৷ পশ্চিমবঙ্গে এই ছবি দেখা গেছে৷ এখন উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আগেও হচ্ছে৷ কট্টর সংগঠন ও নেতারা এই কাজ নিয়ম করে করে যাচ্ছেন৷ এর ফলে কার লাভ, কার ক্ষতি হচ্ছে সেটা অন্য প্রশ্ন, তবে সামগ্রিকভাবে দেশের ক্ষতি হচ্ছে৷ এক সম্প্রদায়ের নেতা অন্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যে কথা খোলাখুলি বলছেন, তাতে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোর ক্ষতি হচ্ছে৷ আর রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সম্প্রদায় সেই কাজটাই করে যাচ্ছে৷ ২০২১ এই ক্ষেত্রে কোনো নতুন দিশা দেখাতে পারেনি, বরং এই প্রবণতার বাড়বাড়ন্ত হয়েছে৷

কৃষকদের জয়

Indien | Agrarreform - Protest der Landwirte
কৃষকদের ১৮ মাসের টানা বিক্ষোভের পর বিতর্কিত তিনটি আইন প্রত্যাহার করে নেয় নরেন্দ্র মোদী সরকারছবি: Yawar Nazir/Getty Images

তবে ২০২১-এর সবই খারাপ ছিল না৷ অন্ধকার সুড়ঙ্গের পর আলোর রেখা দেখার মতো ঘটনা হলো, কৃষক আন্দোলনের জয়৷ ১৮ মাস ধরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কৃষকরা৷ দিল্লির সীমানায় রাস্তার উপর৷ তাদের প্রথম ও প্রধান দাবি ছিল তিনটি বিতর্কিত কৃষক আইন বাতিল করতে হবে৷ প্রথমে সরকার মানেনি৷ কিন্তু শেষপর্যন্ত কৃষকদের ক্ষোভ দেখে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের কিছুদিন আগে দেশের কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনটি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন এবং সংসদে  বিল এনে তা বাতিলও করেছেন নরেন্দ্র মোদী৷ দোর্দণ্ডপ্রতাপ প্রধানমন্ত্রীকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে বাধ্য করেছেন আন্দোলনরত কৃষকরা৷ আর ৩৫টি সংগঠনের নেতারা শত প্রলোভন সত্ত্বেও প্রমাণ করে দিয়েছেন, গণতন্ত্রের অন্যতম বেদবাক্য৷ ন্যায্য দাবিতে এক থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে জয় হবেই৷ দেরিতে হলেও হবে৷ ভবিষ্যৎ আন্দোলনকে তাই পথ দেখাতে পারে ২০২১৷

করোনা টিকা

Indien Corona Hilfslieferungen Impfung
৮৪ কোটি ১৬ লাখের বেশি মানুষ করোনা টিকার একটি ডোজ পেয়েছেনছবি: NIHARIKA KULKARNI/dpa/picture alliance

১৩০ কোটির বিশাল দেশে সবাইকে করোনার টিকা দেয়া হিমালয়সদৃশ কাজ৷ বৃহস্পতিবারের হিসাব, ৮৪ কোটি ১৬ লাখের বেশি মানুষ করোনা টিকার একটি ডোজ পেয়েছেন৷ প্রায় ৬০ কোটি মানুষ দুইটি ডোজ পেয়েছেন৷ সরকারিভাবে বিনা পয়সায় টিকা দেয়া হয়েছে ও হচ্ছে৷ এখন টিকাদানপর্ব খুবই সুশৃঙ্খলভাবে চলছে৷ যে টিকা দেয়া হচ্ছে, তার মধ্যে দুইটি টিকা ভারতে উৎপাদন হচ্ছে৷ ২০২১-এ করোনার ভয়ংকর চেহারা যেমন দেখেছে ভারত, তেমনই দেখেছে টিকাদানের সাফল্যও৷

পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে

চীনের সঙ্গে লাদাখ বিতর্কের পর ২০২১ সালেও মাঝেমধ্যেই চীনা সেনা ভারতের সীমান্ত পার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ চীনের মোকাবিলায় অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপানের সঙ্গে কোয়াড মঞ্চে আছে ভারত৷ তবে ২০২১ সালে ভারতের মাথাব্যথার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তান৷ গত অগাস্টে আফগানিস্তানে তালেবান শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ তালেবানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আদৌ মধুর নয়৷  পাকিস্তানের সঙ্গে তালেবানের সম্পর্ক ভালো৷ ফলে গত ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের যে ভালো সম্পর্ক ছিল তা আর নেই৷

Indien Neu Dehli Afghanistan-Konferenz
আফগানিস্তান ইস্যুতে দিল্লিতে সাত দেশের বৈঠকের আয়োজন করে ভারতছবি: Ministry of External Affairs/AP/picture alliance

আফগানিস্তান নিয়ে ভারত দিল্লিতে সাত দেশের বৈঠক করেছে৷ সেখানে রাশিয়া যোগ দিয়েছিল৷ সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন ভারত সফর করেছেন৷ সেখানে সামরিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা নিয়ে কথা হয়েছে৷ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর যে সম্পর্ক ছিল, তা বাইডেনের সঙ্গে নেই৷ তবে বাইডেনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করছে ভারত৷ মোদীর পররাষ্ট্রনীতি অনেকটাই অ্যামেরিকার দিকে হেলে আছে৷ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাশিয়ার কাছে আসারও চেষ্টা করছে ভারত৷ ২০২১-এ এই প্রবণতা স্পষ্ট হয়েছে৷

২০২২-এর আশা

নতুন বছর তো নতুন আশা জাগায়৷ নতুন বছরের প্রধান আশা হলো, অর্থনীতি আবার চাঙ্গা হবে৷ করোনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে৷ মানুষ চাকরি পাবেন, কর্মসংস্থান হবে৷ দুবেলা খাবার ও মাথার উপরে ছাতের চিন্তা করতে হবে না৷

Goutam Hore
গৌতম হোড়, ডয়চে ভেলেছবি: privat

২০২২ হলো ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি৷ ফলে স্বাধীনতা পাওয়ার ৭৫ বছর পূর্তিতে এই আশা করা যায়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আরো জোরদার হবে৷ সাম্প্রদায়িকতা পিছনের সারিতে চলে যাবে৷ মন্দির-মসজিদ-গির্জার রাজনীতি হবে না৷ উন্নয়নের রাজনীতি হবে৷ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি আরো দৃঢ় ভিতের উপর দাঁড়াবে৷

গত প্রায় দুই বছর ধরে করোনার কারণে মানুষ একা হয়ে যাচ্ছে৷ খেলা হচ্ছে দর্শক ছাড়া, উৎসব হচ্ছে নিজেদের বাড়িতে সীমাবদ্ধ থেকে৷ ২০২২ এ এই পরিস্থিতি যেন না থাকে৷ সব উৎসবে সবাই সামিল হবেন৷ আনন্দ করবেন৷ এটাই যেন হয়৷

আশা করব, পশ্চিমবঙ্গে ভোট হবে, কিন্তু কোনো সহিংসতা হবে না৷ মানুষ মারা যাবেন না৷ ভয় দেখানো হবে না৷ নিজের পছন্দমতো ভোট নির্ভয়ে দিতে পারবেন মানুষ৷ বিরোধীরা তাদের রাজনীতির জায়গাটা পাবেন৷

২০২২ এর কাছে এই চাওয়া কি খুব বেশি হয়ে গেল?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য