২০২১ এক ভয়ংকর বছরের নাম
৩০ ডিসেম্বর ২০২১কখনো ভালোর পাল্লা ভারি হয়, কখনো মন্দের৷ তবে সবসময়ই অন্ধকার সুরঙ্গের শেষে আলোর দেখা মেলে৷ ২০২১ সম্পর্কে একথাটা যেন খুবই বেশি করে সত্যি৷ বছরটা শুরু হয়েছিল করোনা-আতঙ্ক দিয়ে৷ চারপাশে শুধু আতঙ্ক, হতাশা, মৃত্যুর ছবি৷ মনে হচ্ছিল, এই অন্ধকার সময় যেন আর কাটবে না৷ লকডাউন, ঘরবন্দি মানুষ, অ্যাম্বুলেন্সের আতঙ্ক-জাগানিয়া সাইরেনের শব্দ মনকে বিবশ করে দিত৷ কিন্তু ওই যে খারাপের শেষে ভালোর ঝলক থাকে৷ দুঃখ, মৃত্যুর পরও থেকে যায় আশা, থেকে যায় প্রাণের নিত্য ধারা, তাই সব শেষ হয় না, হতে পারে না৷
করোনা, আতঙ্ক এবং মৃত্যুমিছিল
সে এক সময় গেছে ভারতে, বিশেষ করে দিল্লিতে৷ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ৷ বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা, আর পুলিশে ছুঁলে অসংখ্য, এটা শোনা ছিল৷ করোনায় ছুঁলে যে সোজা মৃত্যুর ঘা, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ তা দেখিয়ে দিয়েছে৷ দিল্লির বুকে এক চিলতে কলকাতা বলে পরিচিত চিত্তরঞ্জন পার্ক৷ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে শুধু এখানেই মারা গেছেন ৭৫০ জন৷ দিল্লিতে তখন অ্যাম্বুলেন্স নেই, হাসপাতাল খাট নেই, অক্সিজেন নেই৷ প্রাণদায়ী অক্সিজেন পাওয়া গেলেও রোগী বাঁচবে কি না সন্দেহ৷ মরেও শান্তি নেই৷ শ্মশান, কবরস্থানে দীর্ঘ লাইন৷ সৎকার করতে বেলা পার হয়ে যায়৷
আর গঙ্গা দিয়ে ভেসে আসে শয়ে শয়ে শব৷ গঙ্গার বালিতে পুঁতে দেয়া হয় লাশ৷ প্রশাসন বলে, ওটা নাকি কিছু জনগোষ্ঠীর প্রথা৷ তারপর যখন ভিডিওতে ভেসে ওঠে সেই ভয়ংকর ছবি, অ্যাম্বুলেন্স থেকে মৃতদেহ ফেলে দেয়া হচ্ছে নদীতে৷ যা দেখে যাত্রাপালার বিবেকও লজ্জা পায়৷ দেশজুড়ে স্বাস্থ্যপরিকাঠামোর বেহাল ছবি সামনে ভেসে ওঠে৷
মানুষ ঘরবন্দি হয়ে থাকতে থাকতে অস্থির হয়ে পড়লেন৷ মানসিক চাপ বাড়তে লাগলো৷ চাকরি যেতে শুরু করলো৷ অনেকের কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেল৷ বহু মানুষের বেতন কমে গেল৷ উৎপাদন-ভিত্তিক শিল্পগুলি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকল৷ এই বিপর্যয়ের প্রভাবে বহু মানুষ মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেন৷ এ বড় সাংঘাতিক সময়৷ ২০২১ তাই এক ভয়ংকর বছরের নাম৷
ভয়ংকর স্মৃতিও ক্ষণস্থায়ী
আবার সেই ২০২১-ই চোখে আঙুল দিয়ে আরেকবার দেখিয়ে দিয়েছে, যত ভয়ংকর ঘটনাই হোক না কেন, তার স্মৃতি দীর্ঘস্থায়ী হয় না৷ না হলে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন স্তিমিত হয়ে গেল, কড়াকড়ি কমে গেল, অফিস-কাছারি খুললো, স্কুলও খুলতে শুরু করলো, বাস, ট্রেন, মেট্রো চলাচল শুরু করলো, তখন অনেক মানুষ আবার মুখ থেকে মাস্ক খুলে ফেললেন৷ দূরত্ব বজায় রাখার পাট উঠে গেল৷
বাজারে মানুষের ভিড়, উৎসব এলেই করোনাকে আমল না দিয়ে মানুষ নেমে পড়ছেন রাস্তায়৷ বড়দিনের পর থেকে যেভাবে কলকাতায় হাজার হাজার মানুষ পার্ক স্ট্রিট সহ বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হয়ে আনন্দ করছেন, তা দেখে মনে হচ্ছে, সব ভুলে গিয়ে তারা আবার করোনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন৷ ২০২১ তাই চেতনাহীনতার বছর হয়েও থাকবে৷
বৃষ্টি, বন্যা, ঝড়, ধস, আগুনের বছর
একদিকে করোনা, অন্যদিকে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়৷ ফলে ২০২১ সুখের বছর ছিল না, বরং বছরের অনেকটা জুড়েই ছিল কষ্টের ঘটনা৷ বৃষ্টি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ধস, আগুনের ঘটনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে ভারতকে৷
২১ জানুয়ারি টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউটে আগুন লেগে পাঁচজনের মৃত্যু হয়৷ সেই শুরু৷ বেশ কয়েকটি রাজ্যে করোনা হাসপাতালে আগুন লেগে রোগী মারা গেছেন৷
পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা এই বছরই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডব দেখেছে৷ ঘূর্ণিঝড় জওয়াদ আছড়ে পড়েনি ঠিকই, কিন্তু তার জেরে প্রবল বৃষ্টিতে কলকাতা ডুবেছে৷ লাগাতার বৃষ্টির পর ডিভিসি জল ছাড়ায় পশ্চিমবঙ্গের বহু জেলায় ভয়ংকর বন্যা হয়েছে৷ উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির জেরে ধস নেমেছে৷ কেরালায় অন্তত দুইবার প্রবল বন্যা ও ধস হয়েছে৷ উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলে অসংখ্যবার মেঘফাটা বৃষ্টির পর চকিত বন্যা হয়েছে৷
জুন মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বাজ পড়ে মারা গেছেন ১৭৭ জন৷ কলকাতায় রাস্তার জমা জলে বিদ্যুতের তার পড়ে মারা গেছেন মানুষ৷ কিছুদিন আগেও বৃষ্টিতে ভেসেছে কলকাতা৷ মুম্বই, দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরুও প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে৷ দিল্লি আবার বেহাল হয়েছে দূষণে৷ দেওয়ালির পর দূষণের চাদরে আচ্ছাদিত থেকেছে দিল্লি৷
সবমিলিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি হাড়েহাড়ে বুঝেছে ভারত৷ বন্যা, ধস, বৃষ্টি, আগুন, ঝড়, বজ্রপাত ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বারবার বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ভারত৷ ২০২১ তাই কৃতকর্মের ফলভোগ করার বছর৷
মমতার জয় এবং ভোট সহিংসতা
২০২১-এ করোনার মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে৷ এই নির্বাচনে বিজেপি-র জয়রথ থামিয়ে দিতে পেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ পূর্ণশক্তি দিয়ে লড়েছেন, বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি নেতাদের নিয়ে এসেছেন, দিনের পর দিন প্রচার করেছেন৷ তা সত্ত্বেও জিততে পারেননি৷ পরপর তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা৷
২০২১ সালে ভারতীয় রাজনীতিতে এ এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা, সন্দেহ নেই৷ কিন্তু এই বিধানসভা ভোটের আগে ও পরে পশ্চিমবঙ্গে যে সহিংসতা হয়েছে, তা অভূতপূর্ব৷ একদা ভোটের সময় সহিংসতার জন্য বিখ্যাত ছিল বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য৷ কিন্তু সেখানে এখন ভোট শান্তিতে হয়৷ পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার মতো বাঙালিপ্রধান রাজ্যে ভোটে সহিংসতা মাত্রাছাড়া জায়গায় চলে যাচ্ছে৷ শুধু বিধানসভা ভোটই নয়, সদ্যসমাপ্ত কলকাতা পুরসভার ভোটেও একই ছবি দেখা গেছে৷ বিরোধী কর্মী, এজেন্ট, প্রার্থীকে মারধর, ভয় দেখানো, বুথ জ্যাম করে দেয়া, বুথদখল করে ছাপ্পা ভোট দেয়া, বোমাবাজি কী হয় না পশ্চিমবঙ্গের ভোটকে কেন্দ্র করে৷ ২০২১ সালেও এই প্রবণতার বাইরে যেতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ৷ সেইসঙ্গে প্রচারের ভাষা এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে তা কহতব্য নয়৷ ২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে সেই আমরা-ওরা, সেই বহিরাগতের মতো বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে, যা কোনো গণতন্ত্রে কাম্য হতে পারে না৷ ২০২১ তাই ভারতীয় রাজনীতিতেও সুখের বছর ছিল না৷
ডোলের রাজনীতি
ভারতে এখন ডোলের রাজনীতির রমরমা৷ ২০২১ সালে তা বেড়েছে বই কমেনি৷ যত দিন যাচ্ছে, ততই তা ভয়ংকর জায়গায় চলে যাচ্ছে৷ ডোলের রাজনীতি মানে, ভোটে জিততে প্রতিটি দল ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেয়৷ মমতা যেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি গৃহস্থ নারীদের মাসে পাঁচশ থেকে এক হাজার টাকা দেবেন৷ দলিত ও আদিবাসী নারীরা পাবেন এক হাজার টাকা৷ বাকিরা ৫০০ টাকা করে৷ ক্ষমতায় আসার পর সেই প্রকল্প কার্যকর হয়েছে৷ কোনো কাজ না করে গৃহস্থ নারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাচ্ছে৷
এর সাফল্যে উৎসাহী হয়ে তৃণমূল গোয়ায় জানিয়েছে, তারা ক্ষমতায় এলে মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে দেবে৷ আপ গোয়ায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা নারীদের এক হাজার টাকা করে দেবে৷ প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০১৯-এর আগে ক্ষুব্ধ কৃষকদের মন পেতে বছরে তিন কিস্তিতে ছয় হাজার টাকা দিয়েছেন৷ ছাত্রছাত্রীদের পশ্চিমবঙ্গে ট্যাব, উত্তরপ্রদেশে ল্যাপটপ দেয়া হয়েছে৷ ২০২১-এ দেখা গেছে, এইভাবে কোনো কাজ না করেই টাকা ও জিনিস দেয়ার প্রবণতা বেড়েছে৷ এই টাকা আসে করদাতাদের কাছ থেকে৷ ভোটে জিততে এইভাবে অর্থবিলির পর উন্নয়নের কাজে টাকা থাকে না৷ সেটাই বিভিন্ন রাজ্যে হচ্ছে৷ ২০২১ তাই ব্যতিক্রমী বছর হতে পারেনি৷
রাজনীতি ও সাম্প্রদায়িকতা
এই করোনাকালেও ভোট এলে দেখা গেছে, সাম্প্রদায়িক ভাবাবেগ উসকে দেয়ার কাজ হয়েছে ও হচ্ছে৷ পশ্চিমবঙ্গে এই ছবি দেখা গেছে৷ এখন উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আগেও হচ্ছে৷ কট্টর সংগঠন ও নেতারা এই কাজ নিয়ম করে করে যাচ্ছেন৷ এর ফলে কার লাভ, কার ক্ষতি হচ্ছে সেটা অন্য প্রশ্ন, তবে সামগ্রিকভাবে দেশের ক্ষতি হচ্ছে৷ এক সম্প্রদায়ের নেতা অন্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যে কথা খোলাখুলি বলছেন, তাতে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোর ক্ষতি হচ্ছে৷ আর রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সম্প্রদায় সেই কাজটাই করে যাচ্ছে৷ ২০২১ এই ক্ষেত্রে কোনো নতুন দিশা দেখাতে পারেনি, বরং এই প্রবণতার বাড়বাড়ন্ত হয়েছে৷
কৃষকদের জয়
তবে ২০২১-এর সবই খারাপ ছিল না৷ অন্ধকার সুড়ঙ্গের পর আলোর রেখা দেখার মতো ঘটনা হলো, কৃষক আন্দোলনের জয়৷ ১৮ মাস ধরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কৃষকরা৷ দিল্লির সীমানায় রাস্তার উপর৷ তাদের প্রথম ও প্রধান দাবি ছিল তিনটি বিতর্কিত কৃষক আইন বাতিল করতে হবে৷ প্রথমে সরকার মানেনি৷ কিন্তু শেষপর্যন্ত কৃষকদের ক্ষোভ দেখে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের কিছুদিন আগে দেশের কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনটি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন এবং সংসদে বিল এনে তা বাতিলও করেছেন নরেন্দ্র মোদী৷ দোর্দণ্ডপ্রতাপ প্রধানমন্ত্রীকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে বাধ্য করেছেন আন্দোলনরত কৃষকরা৷ আর ৩৫টি সংগঠনের নেতারা শত প্রলোভন সত্ত্বেও প্রমাণ করে দিয়েছেন, গণতন্ত্রের অন্যতম বেদবাক্য৷ ন্যায্য দাবিতে এক থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে জয় হবেই৷ দেরিতে হলেও হবে৷ ভবিষ্যৎ আন্দোলনকে তাই পথ দেখাতে পারে ২০২১৷
করোনা টিকা
১৩০ কোটির বিশাল দেশে সবাইকে করোনার টিকা দেয়া হিমালয়সদৃশ কাজ৷ বৃহস্পতিবারের হিসাব, ৮৪ কোটি ১৬ লাখের বেশি মানুষ করোনা টিকার একটি ডোজ পেয়েছেন৷ প্রায় ৬০ কোটি মানুষ দুইটি ডোজ পেয়েছেন৷ সরকারিভাবে বিনা পয়সায় টিকা দেয়া হয়েছে ও হচ্ছে৷ এখন টিকাদানপর্ব খুবই সুশৃঙ্খলভাবে চলছে৷ যে টিকা দেয়া হচ্ছে, তার মধ্যে দুইটি টিকা ভারতে উৎপাদন হচ্ছে৷ ২০২১-এ করোনার ভয়ংকর চেহারা যেমন দেখেছে ভারত, তেমনই দেখেছে টিকাদানের সাফল্যও৷
পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে
চীনের সঙ্গে লাদাখ বিতর্কের পর ২০২১ সালেও মাঝেমধ্যেই চীনা সেনা ভারতের সীমান্ত পার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ চীনের মোকাবিলায় অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপানের সঙ্গে কোয়াড মঞ্চে আছে ভারত৷ তবে ২০২১ সালে ভারতের মাথাব্যথার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তান৷ গত অগাস্টে আফগানিস্তানে তালেবান শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ তালেবানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আদৌ মধুর নয়৷ পাকিস্তানের সঙ্গে তালেবানের সম্পর্ক ভালো৷ ফলে গত ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের যে ভালো সম্পর্ক ছিল তা আর নেই৷
আফগানিস্তান নিয়ে ভারত দিল্লিতে সাত দেশের বৈঠক করেছে৷ সেখানে রাশিয়া যোগ দিয়েছিল৷ সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন ভারত সফর করেছেন৷ সেখানে সামরিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা নিয়ে কথা হয়েছে৷ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর যে সম্পর্ক ছিল, তা বাইডেনের সঙ্গে নেই৷ তবে বাইডেনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করছে ভারত৷ মোদীর পররাষ্ট্রনীতি অনেকটাই অ্যামেরিকার দিকে হেলে আছে৷ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাশিয়ার কাছে আসারও চেষ্টা করছে ভারত৷ ২০২১-এ এই প্রবণতা স্পষ্ট হয়েছে৷
২০২২-এর আশা
নতুন বছর তো নতুন আশা জাগায়৷ নতুন বছরের প্রধান আশা হলো, অর্থনীতি আবার চাঙ্গা হবে৷ করোনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে৷ মানুষ চাকরি পাবেন, কর্মসংস্থান হবে৷ দুবেলা খাবার ও মাথার উপরে ছাতের চিন্তা করতে হবে না৷
২০২২ হলো ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি৷ ফলে স্বাধীনতা পাওয়ার ৭৫ বছর পূর্তিতে এই আশা করা যায়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আরো জোরদার হবে৷ সাম্প্রদায়িকতা পিছনের সারিতে চলে যাবে৷ মন্দির-মসজিদ-গির্জার রাজনীতি হবে না৷ উন্নয়নের রাজনীতি হবে৷ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি আরো দৃঢ় ভিতের উপর দাঁড়াবে৷
গত প্রায় দুই বছর ধরে করোনার কারণে মানুষ একা হয়ে যাচ্ছে৷ খেলা হচ্ছে দর্শক ছাড়া, উৎসব হচ্ছে নিজেদের বাড়িতে সীমাবদ্ধ থেকে৷ ২০২২ এ এই পরিস্থিতি যেন না থাকে৷ সব উৎসবে সবাই সামিল হবেন৷ আনন্দ করবেন৷ এটাই যেন হয়৷
আশা করব, পশ্চিমবঙ্গে ভোট হবে, কিন্তু কোনো সহিংসতা হবে না৷ মানুষ মারা যাবেন না৷ ভয় দেখানো হবে না৷ নিজের পছন্দমতো ভোট নির্ভয়ে দিতে পারবেন মানুষ৷ বিরোধীরা তাদের রাজনীতির জায়গাটা পাবেন৷
২০২২ এর কাছে এই চাওয়া কি খুব বেশি হয়ে গেল?