২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় শোক দিবস?
২৫ এপ্রিল ২০১৪সামহয়্যার ইন ব্লগে মেহরাব হাসান লিখেছেন, ‘‘এতদিন ভুলে ছিলাম, ভুলে থাকতে হয়, পরিবেশ পরিস্থিতি ভুলে রাখতে বাধ্য করে৷ হয়ত একদিন রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির কথা মনেও থাকবে না৷ রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি ভুলিয়ে দেয়া হবে, চাপা ক্ষোভ, অভিমান সব হারিয়ে যাবে৷ মনে করিয়ে দেবে না নিজের ভিতরে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত মানবিকতাকে৷ আমরা শোক ভুলতে চাই না৷ তাই, ২৪ শে এপ্রিল রাষ্ট্রীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হোক৷''
আমার ব্লগে নাইমূল ইসলাম লিখেছেন,‘‘রানা প্লাজা ট্রাজেডির এক বছর হলো৷ এখনো থামেনি হাজারো স্বজনের কান্না৷'' তিনি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ‘‘হাজার হাজার লাশ লুকালেন, কেবল কয়েকটা টাকার জন্য৷'' প্রশ্ন তুলেছেন, এখন কেন তাঁদের ক্ষতিপূরণ, তাঁদের হক, তাঁদের পাওনা, তাঁদের আমানত, তাঁদের অধিকার স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছেন না৷'''
সামহয়্যার ইন ব্লগে মাহদী হাসান শিহাব লিখেছেন, ‘‘রানা প্লাজা ধ্বসের অনুভূতি যে কত ভয়াবহ এবং বেদনাদায়ক তা হয়ত এই দুর্ঘটনা থেকে যাঁরা জীবন ফিরে পেয়েছে তারা জানে আর জানে যারা নিখোঁজ হয়েছে তাদের পরিবার৷ ১১২৯ জন মারা গেল, ২৫১৫ জন আহত হলো, অনেকেই থেকে গেল নিখোঁজ৷ কোনোদিন তাদের আর খোঁজ পাওয়া যাবে না৷''
তাঁর অভিযোগ, ‘‘রানা অন্যায়ভাবে সরকারি দলের মদদপুষ্ট হয়ে ভবন তৈরির স্ট্যান্ডার্ড না মেনেই এ ভবন তৈরি করেছিল৷ সামান্য খামখেয়ালিপনা ও সামান্য লোভের জন্যই সহস্রাধিক মানুষের জীবন গেল৷ আর বিশ্বদরবারে আমাদের মাথা যে কত উঁচু হলো, তা নাই বা বললাম! যা হয়েছে তা অপূরণীয় ক্ষতি৷ কিন্তু ভবিষ্যতে যেন সামন্য খামখেয়ালিপনা ও সামান্য লোভের কারণে এ ধরনের আর কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য আমরা এবং আমাদের সরকার কতটুকু সচেতন, কতটুকু দৃঢ়প্রতিজ্ঞ?''
মোরতাজা লিখেছেন, ‘‘শোকাহত নই আমি, ক্ষুব্ধ! রানা প্লাজায় ডেকে নিয়ে মানুষ খুনের বিচার হলো না, হবে বলেও মনে হয় না৷ বছর গড়িয়ে গেলো, আরো যাবে৷ রাজনীতির চোরা গলি – বাজার রক্ষার জন্য অনবরত মিথ্যাচার, অ্যাডভোকেসির নামে মানুষের জীবনের মূল্য কমিয়ে আনা, মালিকদের চোয়ালের তলে লুকিয়ে থাকা পশুত্ব – আমরা অসহায়৷''
মোহাম্মদ মোজ্জামেল হক লিখেছেন, ‘‘ডিএনএ-৯৮, কবর ২৪/বি, লেন-১০৷ এটি একটি পরিচয়৷ একজন মানুষের পরিচয়৷ অথচ এক বছর আগেও নাম ছিল৷ অথচ মানুষটি এখন শুধুই নম্বর৷ রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন এমন ১০৫ হতভাগ্য৷ তারা সবাই সাভারে ধসেপড়া রানা প্লাজার ‘হত্যার' শিকার৷''
তিনি লিখেছেন, ‘‘জুরাইন কবরস্থানে বৃহস্পতিবার সকালে এসেছিলেন রানা প্লাজা ধসে নিহত ও নিখোঁজের পরিবারের সদস্যরা৷ যাঁদের স্বজন এখনও অশনাক্ত, তাঁরা কবরে-কবরে ঘুরে ফিরলেন৷ মেয়ে হারানোর শোকে বিহ্বল ধামরাইয়ের নিজাম উদ্দিন৷ মেয়ে হাফসা কাজ করতেন রানা প্লাজার গার্মেন্টে৷ মেয়ের লাশটা খুঁজে পাননি৷ শুধু জানেন, জুরাইনের ১০৫টি কবরের যে কোনো একটি৷''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ