২৮ অক্টোবরের পর কিছু আলোচিত ঘটনা
২৮ অক্টোবর বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশ করেছিল৷ কিন্তু শেষ করতে পারেনি৷ এরপর ঐদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধী অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ সরকারের পক্ষে যেতে রাজি হওয়ায় জামিন পান বিএনপির এক নেতা৷ বাকিরা এখনও জেলে৷
ইটপাটকেল নিক্ষেপের মামলায় কারাগারে মির্জা ফখরুল
২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ সমাপ্ত হতে পারেনি৷ এর পরদিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ফটক ভেঙে ইটপাটকেল নিক্ষেপের মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ মির্জা ফখরুলের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, মির্জা ফখরুল ছিলেন পল্টন থানাধীন মহাসমাবেশের মূল মঞ্চে৷ রমনা থানাধীন প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ফটক ভাঙচুর কিংবা ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় তিনি কোনোভাবে জড়িত নন৷
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার
২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও শামসুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ, বিএনপির মিডিয়া সেলের সমন্বয়ক জহির উদ্দিন স্বপন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকসহ অনেকে৷
জামিন পেয়ে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে শাহজাহান ওমর
২৮ অক্টোবরের পর গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপির অন্য শীর্ষ নেতারা জামিন না পেলেও বিএনপির তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর ২৯ নভেম্বর জামিন পান৷ এরপর ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও পেয়েছেন৷ এই ঘটনায় বিএনপি তাকে বহিষ্কার করেছে৷
সবকিছু দ্রুততার সাথে সম্পন্ন
শাহজাহান ওমর জামিনে কারাগার থেকে বের হওয়ার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে তার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, ক্ষমতাসীন দলের তাকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়৷ এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘‘শাহজাহান ওমরের ঘটনা প্রমাণ করেছে যে, সরকার কীভাবে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে৷’’
বিএনপি, জামায়াতের যত নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
২৮ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ৪৭৫টি মামলায় তাদের ১৮ হাজার ৯০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি৷ আর জামায়াত বলছে, ২৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১০৪টি মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীর সংখ্যা দুই হাজার ৮৪৫ জন৷
গুম হওয়া ব্যক্তির কারাদণ্ড
ঢাকার বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমন ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর গুম হন বলে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে৷ সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘মায়ের ডাক’ সংগঠন গড়ে তুলেছেন৷ ২০১৩ সালের ২৫ মে একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেওয়ার মামলায় গত ২০ নভেম্বর সুমনকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
মৃত ব্যক্তিকে পালিয়ে যেতে দেখেছে পুলিশ!
গাজীপুরের আমিন উদ্দিন মোল্লা দুই বছর ১০ মাস আগে মারা যান৷ অথচ তাকে ২৮ অক্টোবর রাতে পুলিশের একটি ‘টহল দলকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময়’ দেখতে পান কাপাসিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সালাউদ্দিন৷ মামলার এজাহার বলছে, ঘটনাটি ঘটেছিল রাতে সাড়ে ১১টার দিকে, তারগাঁও মেডিকেল মোড় এলাকায়৷ অন্ধকার রাতে ল্যাম্পপোস্টের আলোয় সন্দেহভাজনদের ‘স্পষ্ট’ দেখতে পেয়েছিলেন বলেও জানান সালাউদ্দিন৷
উপস্থিত না থেকেও মোটরসাইকেল ভেঙেছেন!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামায়াত সমর্থক আল আমিন সরকারসহ বিএনপি-জামায়াতের ৫৭ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৩০ অক্টোবর সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে কসবা পৌর এলাকায় ‘চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর, মারধর ও দুই লাখ ছিনিয়ে নেওয়ার’ অভিযোগে মামলা হয়৷ অথচ আল আমিনের ইমিগ্রেশনের কাগজপত্রে ডেইলি স্টার দেখতে পেয়েছে, তিনি ওমরাহ পালন শেষে ৩০ অক্টোবর সকাল ৬টায় ঢাকায় নামেন৷ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব সড়কপথে প্রায় ১২০ কিলোমিটার৷