ইউএস ওপেন
১১ সেপ্টেম্বর ২০১২২৫ বছর বয়সী স্কটসম্যান যখন জিতলেন, তখন জেমস বন্ড অভিনেতা শন কনারি স্বয়ং উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়েছেন, কেননা তিনিও স্কটল্যান্ডের লোক৷ আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে পাঁচ সেটের থ্রিলারে মারে জেতায় প্রতিদ্বন্দ্বী নোভাক জোকোভিচও খুশি, গতবারের ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন, বিশ্ব ব়্যাংকিং'এ দু'নম্বর জোকোভিচ৷ বলেছেন, অ্যান্ডির তো ক্ষমতা, প্রতিভা, সবই আছে৷ ফেডারার, নাদাল, মারে এবং জোকোভিচ নিজে, এরা হলেন টেনিসের বিগ ফোর৷ জোকোভিচের মতে এই চারজন খেলাটাকে একটা সম্পূর্ণ নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন৷
ন'মাস আগে ইভান লেন্ডল মারে'র কোচ হন, এককালের নাম-করা টেনিস খেলোয়াড়৷ সে যাবৎ মারে'র খেলার ধরণ ও মনোবৃত্তি পাল্টে গেছে৷ উইম্বলডনেই রজার ফেডারার'কে হারাতে পারতেন মারে, যদিও সেজন্য তাঁকে অলিম্পিক অবধি অপেক্ষা করতে হয়েছে৷ অলিম্পিকে জয়ই যেন তাকে সেই মানসিক স্থৈর্য এবং আত্মবিশ্বাস এনে দেয়৷ লেন্ডল অবশ্য তাঁর মন্ত্রশিষ্যের জয়ে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়েছেন কি ফোটাননি, বোঝা দায়৷ লেন্ডল'এর কাছে ওটাই হাসি, বলেছেন মারে৷ তিনিও নাকি গুরুর কাছ থেকেই উচ্ছ্বাস বর্জন করা শিখেছেন৷ লেন্ডল আর মারে'র জুটি শেষমেষ সফল হল কেন, তার আরো একটা কারণ এ'ও হতে পারে যে, লেন্ডলও তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনের সূচনায় পর পর চারটি ফাইনালে হারার পর পঞ্চমটিতে জেতেন৷ চেক না হয়ে ব্রিটিশ খেলোয়াড় হলে, তাঁরও নাম হতো ‘চোকার'!
ফেরা যাক মারে'র কথায়৷ যে ব্রিটিশ জাতি বস্তুত আধুনিক টেনিসের উদ্ভাবন করেছে, তাদের হয়ে পুরুষদের খেলায় শেষবার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছিলেন ফ্রেড পেরি, ১৯৩৬ সালে৷ আর এবার অ্যান্ডি মারে৷ কাঠের ব়্যাকেট হাতে লম্বা সাদা ট্রাউজার্স পরে খেলতেন পেরি৷ মারা যান ১৯৯৫ সালে, ৮৫ বছর বয়সে৷ কিন্তু আজ নিশ্চয় তিনি ওপর থেকে দেখছেন এবং হাসছেন - বলেছেন মারে৷ এবার মারে'র নিজের স্বপ্ন হবে: জীবদ্দশায় আরেকজন ব্রিটিশ প্লেয়ারকে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে দেখে যাওয়া৷
১৯৯৬ সালে স্কটল্যান্ডের ডানব্লেনের একটি প্রাইমারি স্কুলে ঢুকে এক আত্মঘাতী বন্দুকধারী ১৬ জন পড়ুয়া এবং একজন শিক্ষকের জীবন নেয়৷ আট বছর বয়সের অ্যান্ডি মারে তখন সেই স্কুলের ছাত্র - একটি বেঞ্চের তলায় লুকিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছিল৷ তার যে ইতিহাস রচনা করা বাকি৷
এসি / এসবি (রয়টার্স, এএফপি)