অনলাইন মাধ্যম বন্ধ, না নিয়ন্ত্রণ?
২৪ জুলাই ২০১৯অনলাইন মাধ্যমগুলো কীভাবে চলে; তাদের অবকাঠামো আর কর্মীর সংখ্যাই বা কেমন- এসব খুঁজে বের করাই ছিল আমার কাজের ক্ষেত্র৷ তবে, পত্রিকার অনলাইন ভার্সনকে রাখা হয়েছিল আওতার বাইরে৷
খোঁজখবর করতে গিয়ে ন্যুনতম অবকাঠামো আছে, ঢাকায় এমন অনলাইন সংবাদমাধ্যমের সংখ্যা ২০টিও খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ অথচ অনলাইন সংবাদপত্রের নিবন্ধনের জন্য চলতি জুলাই পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা পড়েছে আট হাজার৷ এর মধ্যে অর্ধেকও যদি রাজধানী থেকে ‘প্রকাশিত' হিসাবে ধরি, তাহলে ন্যুনতম অবকাঠামো নেই তিন হাজার ৯৮০টি অনলাইন নিউজ পোর্টালের৷
অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোকে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সরকার শুরু করে ২০১৫ সালে নভেম্বরে৷ তা নিয়ে অনেক কালক্ষেপণ হয়েছে, বারবার পেছানো হয়েছে সময় এবং যাচাই-বাছাই দ্রুত করার কথা বলা হলেও সেটার কাজ শুরু হয়নি৷
নিজেদের কাজটা শেষ না করে গুজব কিংবা মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করেছে৷ কিছু কিছু অনলাইন পুনরায় চালুর ঘটনাও আছে৷ সরকারের মন্ত্রী কিংবা আমলার ক্ষোভের কারণেও অবকাঠামো-লোকবল আছে, এমন নিউজ ওয়েবসাইট বন্ধ হতে দেখা গেছে৷
এর মধ্যে পদ্মাসেতুকে ঘিরে মাথা কাটার গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ৬০ টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ২৫ টি ইউটিউব লিংক এবং ১০ টি ওয়েব পোর্টাল বন্ধ করার কথা জানিয়েছে পুলিশ৷ তবে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সেভাবে জানানো হয়নি তাদের পক্ষ থেকে৷
কোনো একটি ঘটনা ঘটার পর সরকার কিংবা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর টনক নড়ে, তখন কিছু লোকদেখানো পদক্ষেপ নেওয়া হয়৷ কিন্তু সমস্যার মূলে হাত যায় না৷ কিন্তু গুজব আর ভুয়া খবরের উৎস বন্ধ করতে রেগুলেশনের যে কাজ সরকারের করা কথা, সে বিষয়ে কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না৷
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্তির সম্ভাবনা নিয়ে কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালকে খবর ছাপাতেও আমরা দেখেছি৷ নিজেদের মতো গল্প সাজানো হয়েছিল তাতে৷ পরবর্তীতে সেসব খবর ভুয়া হিসাবে প্রমাণিত হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি৷ তার মানে, অবস্থান ও পরিস্থিতিভেদে ভুয়া খবরের বিষয়ে সরকারের অবস্থান ভিন্ন হয়৷
এসব কারণে ভুয়া খবর কিংবা গুজবের উৎস বন্ধের জন্য আগেই লাগাম টানা উচিত৷ না হয় কোনো ঘটনা ঘটলে কয়েকটা বন্ধ হবে, এরপর অন্যগুলো করবে৷ কারণ এখানে আছে অজস্র সুযোগ৷ ভুয়া খবর আর গুজব ছড়ানোও থাকবে অব্যাহত৷