1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরমাণু শক্তির ভবিষ্যৎ

১০ মার্চ ২০১২

ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর জার্মানি পরমাণু শক্তি বর্জন করলেও অ্যামেরিকা, ভারত ও চীনের মতো দেশ এখনো এই প্রযুক্তি ছাড়তে প্রস্তুত নয়৷ তা সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পরমাণু শক্তির ভবিষ্যৎ মোটেই উজ্জ্বল নয়৷

https://p.dw.com/p/14ITt
Hand out photo of Unit 3 of Fukushima Daiichi Nuclear Power Station pictured from a helicopter on March 16, 2011, Okumamachi, Japan. Plutonium has been found in soil at various points within Japan's stricken Fukushima Daiichi nuclear complex but does not present a risk to human health, operator Tokyo Electric Power Co (TEPCO) said on Monday. Skip related content TEPCO vice-president Sakae Muto told journalists at the company's latest briefing that test results showing the plutonium came from samples taken a week ago. It was the latest bad news from the plant, where evidence of radiation has been mounting and engineers face a protracted battle to control reactors damaged by an earthquake and tsunami on March 11. Photo via ABACAPRESS.COM
Fukushima Daiichi Atomkraftwerkছবি: picture alliance / abaca

পরমাণু শক্তির আপাত উত্থান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পরমাণু বিদ্যুতের ভক্ত৷ তিন দশক ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো নতুন পরমাণু বিদ্যুৎ চুল্লি তৈরির অনুমতি দেওয়া হয় নি৷ অথচ ওবামা'র আমলে জর্জিয়া রাজ্যের একটি পরমাণু কেন্দ্রে প্রায় ১,৪০০ কোটি ডলার মূল্যের নতুন দু'টি চুল্লি বসেছে৷ চার-পাঁচ বছরের মধ্যে সেগুলি বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে৷ সরকারের কাছে আরও কয়েকটি নতুন চুল্লির আবেদন জমা পড়েছে৷

শুধু অ্যামেরিকা নয়, বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে নতুন পরমাণু চুল্লি তৈরি হচ্ছে৷ বিশেষ করে এশিয়ায় এবিষয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ ভারত ও চীনে একঝাঁক নতুন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে৷ ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পরেও এশিয়ার বেশিরভাগ দেশ নীতিগতভাবে পরমাণু শক্তির পথ থেকে সরে আসতে প্রস্তুত নয়৷

Infografik Erneuerbare Energien übernehmen die Stromversorgung in Deutschland Englisch
জার্মানিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের প্রবণতা

প্রাথমিক চিন্তাভাবনা

এমনকি যেসব দেশ এখনো পর্যন্ত পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলে নি, তারাও নতুন করে এবিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে৷ যেমন পোল্যান্ড এতকাল কয়লার উপর নির্ভরশীল ছিল৷ এখন তারা দেশের প্রথম পরমাণু কেন্দ্র তৈরি করতে বদ্ধপরিকর৷ ফুকুশিমার ঘটনার পর প্রতিবেশী দেশ জার্মানি পরমাণু বিদ্যুতের পথ থেকে পুরোপুরি সরে যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেবিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টুস্ক বলেন, ‘‘কেউ যদি পরমাণু কেন্দ্র তৈরি করতে না চায়, সেটা তার সমস্যা৷ আমাদের বিশ্বাস, পরমাণু বিদ্যুৎ জ্বালানি উৎপাদনের অত্যন্ত উপযুক্ত বিকল্প পথ৷

কবে পোল্যান্ডে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে, তা স্পষ্ট নয়৷ সেদেশের পরমাণু লবি জানিয়েছে, এক দশকের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে৷ তবে বিশেষজ্ঞরা এতটা নিশ্চিত নন৷ কারণ এত বড় কর্মযজ্ঞ চালানোর জন্য সেদেশে উপযুক্ত কর্মীর অভাব রয়েছে৷ তাছাড়া রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও লাইসেন্সিং প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মীও পাওয়া কঠিন৷ এই ধরণের কাজের জন্য কর্তৃপক্ষ গড়ে তুলতেই কমপক্ষে ১৫ বছর লেগে যায়৷ ডয়চে ভেলে'র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বার্লিনের পরিবেশ বিজ্ঞানী লুৎস মেৎস আরও বলেন, যে ইচ্ছা, স্বপ্ন ও পরিকল্পনা থাকা মানেই এই নয়, যে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে৷

Intelligentes Stromnetz DW-Grafik: Olof Pock
নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার

পরমাণু শক্তির সমস্যা ও ব্যয়ভার

বেশ কিছু দেশ পরমাণু শক্তির পথে এগোতে চাইলেও সারা বিশ্বে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা কমে যাবে বলে মনে করেন পরমাণু নীতি সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ রেবেকা হার্মস৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সবুজ দলের এই সদস্য ডয়চে ভেলে'কে বলেন, পরমাণু শক্তি থেকে সরে আসার প্রক্রিয়া চলছে৷ তবে ২০৩০ বা ২০৩৫ সালের মধ্যে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা কমে যাবে৷

পরমাণু কেন্দ্রের সংখ্যার বিচারে ইউরোপে সবার শীর্ষে ফ্রান্সের অবস্থান৷ সেখানেও চিত্তশুদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ পরমাণু চুল্লি দ্রুত চালু করা বা বন্ধ করা সম্ভব নয়৷ ফলে চুল্লিগুলি ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে চলে৷ অথচ দিনের তুলনায় রাতে চাহিদা কমে যায়৷ তাই বেশিদিন এই মডেল চলতে পারে না বলে মনে করেন লুৎস মেৎস৷

চীন ও ভারতের মতো উদীয়মান শক্তিধর দেশগুলিতে জ্বালানির চাহিদা হু হু করে বাড়ছে৷ সেখানকার পরিস্থিতি একেবারে আলাদা৷ চীন তার বিশাল চাহিদা মেটাতে কয়লার উপরই বেশি নির্ভর করছে৷ নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতিও তাদের আগ্রহ বাড়ছে৷ এখনো পরমাণু বিদ্যুতের অংশ মাত্র ২ শতাংশের মতো৷ ভারতেও পরিস্থিতি একই রকম৷ অথচ ফ্রান্সে ৮০ শতাংশ বিদ্যুতই উৎপাদিত হয় পরমাণু কেন্দ্রে৷ অ্যামেরিকার ক্ষেত্রেও পরমাণু বিদ্যুতের ভবিষ্যৎ তেমন উল্লেখযোগ্য নয়৷

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আদর্শগত অবস্থান যাই হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক কারণেই পরমাণু বিদ্যুতের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হতে পারে না৷ বিনিয়োগ থেকে শুরু করে চালু রাখার ব্যয় – পরমাণু কেন্দ্র নানা কারণে আকর্ষণীয় হতে পারে না৷ তার উপর এমন কেন্দ্র বন্ধ করার পরও বিশাল ব্যয় হয়৷ পরমাণু আবর্জনাও মাথাব্যথার বড় কারণ৷

প্রতিবেদন: ক্লাউস ইয়ানসেন / সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য