আগ্নেয়গিরির ছবি তুলে বিখ্যাত হয়েছেন তিনি
২৯ জানুয়ারি ২০১৮তাঁর নাম ব়্যাগনার সিগুর্ডসন৷ তিনি বলেন, ‘‘যতটা সম্ভব অগ্ন্যুৎপাতের কাছে গিয়ে ছবি তোলার বিষয়টি বেশ উত্তেজনার৷ তবে এভাবে ছবি তুলতে আপনাকে খুবই সৃজনশীল হতে হবে, নিজের উপর আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে৷''
কোনো আগ্নেয়গিরির জীবন্ত হয়ে ওঠা পছন্দ করেন ব়্যাগনার৷ যতটা সম্ভব তার কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেন৷ সেটা গাড়ি নিয়ে হোক, কিংবা ছোট্ট প্লেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি অনেক কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছি৷ ছুটে আসা লাভার কয়েক সেন্টিমিটারের মধ্যে চলে গিয়েছিলাম৷ কারণ তখন লাভা খুব ধীরে সামনে এগোচ্ছিল৷ ফলে কাছে যাওয়াটা নিরাপদ মনে করেছিলাম৷ তারপরও অবশ্য ভয় পেয়েছিলাম৷ তাই বেশ জোরে দৌঁড় দিয়েছিলাম৷''
আইসল্যান্ডের সবচেয়ে বিখ্যাত এইয়াফিয়াদলা আগ্নেয়গিরির ছবি তুলে প্রথম পরিচিতি পান ব়্যাগনার৷ ২০১০ সালে ঐ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট ধোঁয়ায় ইউরোপে বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছিল৷ অনেক ধৈর্য নিয়ে ঐ আগ্নেয়গিরির প্রায় দশ হাজার ছবি তুলেছিলেন ব়্যাগনার৷ সেই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সিগুর্ডসন বলেন, ‘‘অপেক্ষা, অপেক্ষা, একটা কিছু ঘটবে তার জন্য অপেক্ষা৷ অগ্ন্যুৎপাত দেখার জন্য কয়েকদিন প্রতি মহূর্তেই অপেক্ষায় থাকতে হয়েছিল৷ কারণ আগ্নেয়গিরির মুখটি ছিল ১,৪০০ মিটার উঁচুতে, আর মেঘ ছিল এক হাজার মিটার উঁচুতে৷ তাছাড়া চারদিক ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল৷''
৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব়্যাগনার প্রকৃতির ছবি তুলছেন৷ গ্রিনল্যান্ড থেকে শুরু করে নরওয়ে, উত্তর মেরু – এ সব এলাকায় ছবি তোলেন তিনি৷
তবে আগুন আর বরফের দেশ বলে পরিচিত তাঁর মাতৃভূমি আইসল্যান্ডের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অন্যান্য এলাকায় খুব কমই আছে৷ ১৩০টির মতো আগ্নেয়গিরি ও উষ্ণ প্রসবণ আছে আইসল্যান্ডে৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা অনেকটা নেশার মতো৷ আমার মনে হয় আইসল্যান্ডের আমরা সবাই অগ্ন্যুৎপাত পছন্দ করি৷ তবে কখনও কখনও এটা বিপজ্জনক হতে পারে, প্রাণনাশকও হতে পারে৷ অবশ্য ভাগ্য ভালো যে, গত কয়েক দশকে আমাদের এখানে শুধু হালকা অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে, যা পর্যটকরা পছন্দ করে৷''
ছবি তুলতে সবসময় নতুন প্রযুক্তি ও কৌশল ব্যবহার করেন ব়্যাগনার৷ যেমন এখন ড্রোন দিয়ে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে ছবি তোলার চেষ্টা করছেন৷ তিনি বলেন, সবসময় ‘কিলার শট'-এর খোঁজে থাকেন তিনি৷
ব়্যাগনার সিগুর্ডসন সবসময় তাঁর প্রিয় কাজের অপেক্ষায় থাকেন৷ আইসল্যান্ডে পরবর্তী অগ্ন্যুৎপাত নিশ্চয় ঘটবে – হতে পারে সেটি মাত্র কয়েক মিনিটের নোটিশে৷
গ্যোনা কেটেল্স/জেডএইচ