আগ্নেয়গিরি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে
১৯ জুলাই ২০১৪ভলক্যানিজম বা আগ্নেয়গিরি সংক্রান্ত গতিবিধির ফলে ভূত্বকের পরিবর্তন ঘটে; বিভিন্ন মহাদেশের আকার বদলে যায় ও পৃথিবীর উত্তপ্ত অভ্যন্তরের সম্প্রসারণ ঘটে৷ বিজ্ঞানীরা ধীরে ধীরে ভলক্যানিজমের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে শিখেছেন৷
আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণে ভারি পদার্থ পৃথিবীর ‘ইনার কোর'-এর দিকে নেমে যায় এবং অপেক্ষাকৃত হালকা পদার্থ উপরে উঠে আসে বলে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস৷ জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিও-সায়েন্সেস-এর ডক্টর ব্রিগার ল্যুয়র বলেন, ‘‘পৃথিবীর ‘ইনার কোর' বা মর্মবস্তু বেড়ে চলেছে, ভূগোলকের ঘূর্ণনের উপর যার প্রভাব পড়ছে৷ একদিকে পৃথিবীর আবর্তনের উপর চন্দ্রসূর্যের প্রভাব – জোয়ারভাটার মতো৷ ‘ইনার কোর'-এর গঠন পৃথিবীর আবর্তনের গতিবেগ বৃদ্ধি করছে; অপরদিকে চন্দ্রসূর্যের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সেই গতিবেগ রুখছে৷''
পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র
৫,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস-এর বেশি তাপমাত্রায় পৃথিবীর অভ্যন্তরে সব কিছু গলে যায়, যার ফলে একটি ডায়নামো এফেক্ট সৃষ্টি হয়৷ এই এফেক্ট পৃথিবীর চারপাশে ম্যাগনেটিক ফিল্ড সৃষ্টি করে বিশ্বকে সূর্যের বিকিরণ থেকে বাঁচিয়ে রাখে৷ কালে কালে এই ম্যাগনেটিক ফিল্ডগুলি পারস্পরিকভাবে দিক পরিবর্তন করে৷ বর্তমানে উত্তরমেরু বছরে পঞ্চাশ কিলোমিটার গতিতে দক্ষিণ দিকে চলেছে৷
পটসডাম-এর জিএফজেড-এর প্রফেসর ডক্টর হ্যারমান ল্যুয়র বলেন, ‘‘আমরা আজও ঠিক বুঝতে পারি না, এই ডায়নামো কী ভাবে কাজ করছে৷ অতীতে আমরা দেখেছি, কখনো-সখনো ম্যাগনেটিক ফিল্ডের পরিবর্তন ঘটেছে: উত্তর মেরু দক্ষিণে চলে গেছে, দক্ষিণ মেরু উত্তরে এসেছে৷ কিন্তু পৃথিবীর চৌম্বক মেরু শেষবার এইভাবে বদলেছে আজ থেকে ৭৮০ বছর আগে৷ কাজেই সেটা আবার ঘটার সময় বস্তুত পার হয়ে গেছে৷''
গোল নয়, গোলালু
চ্যাম্প এবং সোয়ার্ম, এই দু'টি সর্বাধুনিক স্যাটেলাইট দেখিয়েছে যে, আমাদের গ্রহটি আকারে ঠিক গোলাকৃতি নয়, বরং একটা আলুর মতো৷ আবার তার আকারও বদলায় প্রতিদিন৷ কিন্তু কেন? জিএফজেড, পটসডাম-এর ড. ক্রিস্টফ ফ্যোয়রস্টে বলেন, ‘‘ভূত্বক, অর্থাৎ পৃথিবীর মাটি প্রতিদিন চল্লিশ সেন্টিমিটার ওঠে-নামে, তাও আবার দিনে দু'বার৷ এটা হল চন্দ্রসূর্যের মাধ্যাকর্ষণগত প্রভাবের ফলে, যেমন জোয়ারভাটা৷''
আধুনিক বিজ্ঞান ও যন্ত্রপাতি আমাদের দৃষ্টি খুলে দিয়েছে৷ স্যাটেলাইটের কল্যাণে আমরা আজ জানি, এই সব বিপজ্জনক আগ্নেয়গিরি আছে বলেই পৃথিবীতে জীবনও আছে৷