‘নতুন বছরে দল গোছাবে বিএনপি'
২৮ ডিসেম্বর ২০১৫৫ই জানুয়ারিকে ঘিরে এখনও কোনো কৌশল নির্ধারণ না করলেও, আন্দোলনের কৌশল হিসেবেই আসন্ন পৌর নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি৷ বক্তব্য দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের৷ শুধু তাই নয়, আসন্ন নির্বাচন, দল পুনর্গঠন, আগামীর আন্দোলন কর্মসূচিসহ নানা বিষয় নিয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি৷
ডিডাব্লিউ: এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা আপনার দৃষ্টিতে কেমন?
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক যে অবস্থা, সেটা গণতন্ত্রের জন্য উপযোগী নয়৷ এই মুহূর্তে আমরা যাঁরা বিরোধী দল করছি বা ভিন্ন মত পোষন করছি, আমরা আমাদের কথা বলতে পারছি না৷ আমাদের সভা, সমিতি, সমাবেশ – এ সব করতে দেয়া হয় না৷ যদিও এখন একটি পৌরসভার নির্বাচন দেয়া হয়েছে, সারা দেশে সেটা দলীয় প্রতীকে করতে বলা হয়েছে৷ আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি৷ কিন্তু আমাদের প্রার্থীরা ও কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দেয়া হয়েছে৷ সেই মামলাগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিনিয়ত তাড়া করছে, গ্রেপ্তার করছে৷ গত তিন মাসে ৬ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ আমাদের বিরোধী দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা এখনও জেলে রয়েছেন৷ আমাদের চেয়ারপার্সন থেকে শুরু করে সকলের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে৷ একটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ বিরাজ করছে, যা গণতন্ত্রের জন্য একবারেই উপযোগী নয়৷
দেশের পরিবেশ-পরিস্থিতি বা রাজনৈতিক অবস্থা যদি এতটাই খারাপ হয়, তাহলে এ মুহূর্তে পৌর নির্বাচনে গিয়ে কি ফল পক্ষে আনা সম্ভব?
আমাদের তো ফল পক্ষে আনার বিষয় নেই৷ অতীতে যে ক'টা নির্বাচন এই সরকারের অধিনে হয়েছে, তা থেকে তো আমরা দেখেছি যে এতে করে নির্বাচনের ফলাফল কী হবে৷ কিন্তু আমরা যেহেতু একটি উদারপন্থি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, তাই আমরা মনে করেছি যে, এই মুহূর্তে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটাই সবচাইতে উপযুক্ত কাজ৷ আর সে কারণেই আমরা নির্বাচনে গেছি৷
আচ্ছা আগামী বছরে বিএনপির রাজনৈতিক পরিকল্পনা কী?
আমরা আমাদের সংগঠনকে আরো সুসংগঠিত করার জন্য কাউন্সিলের কাজ শুরু করেছি৷ জেলাগুলোতে কাউন্সিলের মাধ্যমে আমরা দল পুর্নগঠন করছি৷ কেন্দ্রতেও দল পুর্নগঠনের কাজ চলবে৷ আমরা জনগণের আরো কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছি৷
আলোচিত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর আবারও ৫ই জানুয়ারি আসছে৷ বর্তমান সরকার দুই বছর পূর্ণ করছে৷ এক্ষেত্রে আপনাদের কোনো কর্মসূচি বা ভাবনা আছে কি?
এর ব্যাপারে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি৷ তবে দ্রুতই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে৷
আপনাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের অনেকেই তো এই মুহূর্তে কারাগারে আছেন? তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে নতুন করে কোনো পরিকল্পনা বা ভাবনা আছে কি?
আমরা তো সব সময়ই কথাগুলো বলছি, কাজ করছি৷ আমরা সরকারের কাছে বলেছি যে, একটা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলোর সমাধান করা হোক৷ কিন্তু সরকার এতে কোনো সাড়া দিচ্ছে না৷ আজকে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি৷ তবে সেটাও আন্দোলনেরই অংশ হিসেবে৷
ঢাকার দু'টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আমরা যেভাবে দেখেছি, পৌর নির্বাচনও যদি একইভাবে হয়, সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে আপনাদের ভাবনার জায়গাটা কী?
সেটা আমরা দলীয় পর্যায়ে ও জোট পর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব৷
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ৷
আপনাকেও ধন্যবাদ৷
প্রিয় পাঠক, বছর ঘুরে আবার আসছে ৫ জানুয়ারি৷ আপনার মধ্যে কি কোনো শঙ্কা কাজ করছে? মন্তব্য জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে...