আসামে বন্যা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২একটানা বৃষ্টিতে আসামের উদ্বেগজনক বন্যা পরিস্থিতির এখনও উন্নতি হয়নি৷ অরুণাচল প্রদেশের পরিস্থিতিও বিপজ্জনক৷ আসামের ২৬টি জেলার মধ্যে ১৬টি জেলা বন্যার কবলে৷ সরকারি হিসেবে ১৪০০টি গ্রাম জলমগ্ন৷ প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা ঘরছাড়া৷ কয়েক হাজার একর জমির ফসল বরবাদ৷ রাস্তাঘাট, হাইওয়ে, সেতু বানভাসি৷
১০টি জেলায় ১৬৬টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় দুই লক্ষ বন্যার্ত মানুষ৷ জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সেনা ও বিমানবাহিনীর সাহায্যে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ ত্রাণ সাহায্য প্রসঙ্গে আসামের সাংবাদিক গৌতম চট্টোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বললেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ৫০০ কোটি টাকার ত্রাণ সাহায্য এখনও রাজ্য সরকারের হাতে আসেনি৷ কারণ, কেন্দ্রের দেয়া আগেকার ত্রাণ সাহায্যের খরচ সংক্রান্ত সার্টিফিকেট রাজ্য সরকার দাখিল করতে পারেনি৷ বন্যার কারণ অরুণাচল প্রদেশ ও আপার আসামে প্রবল বৃষ্টি হয়৷ সেই জলটা ব্রহ্মপুত্র দিয়ে নামছে, বলেন তিনি৷
সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের মাজুলি দ্বীপ৷ আসামের মন্ত্রী পৃথ্বি মাঝি এবং কৃষিমন্ত্রী নীলমনি সেন ডেকা আকাশপথে লোয়ার আসাম ও মাজুলি দ্বীপ পরিদর্শন করে বলেছেন, ওপর থেকে মনে হয়েছে পুরো মাজুলি দ্বীপই বানভাসি৷ বাড়ির ছাদ ছাড়া আর কিছু চোখে পড়েনি৷ বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন৷
অন্যদিকে বিখ্যাত কাজিরাঙা, পোবিতোরা অভয়ারণ্য এবং সাইখোয়া জাতীয় উদ্যানের প্রায় অর্ধেক জলমগ্ন৷ বন্যার জলে ভেসে গেছে কয়েক হাজার বন্য প্রাণী৷ অবশিষ্ট বন্যজন্তুর জীবন বিপন্ন চোরা শিকারিদের দৌরাত্মে৷ আসামের সাংবাদিক গৌতম চট্টোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে জানালেন, বানভাসি অভয়ারণ্য থেকে জীবজন্তু ওপরের দিকে উঠে আসায় চোরাশিকারিরা সেই সুযোগে গত ২৪ ঘণ্টায় চারটি একশৃঙ্গী গন্ডার মেরেছে৷ মৃত অবস্থায় দুটো গন্ডারের খড়গ কেটে নিয়েছে৷ এখনও ব্রহ্মপুত্র, ধানসিঁড়ি ও সুবনসিঁড়ি নদীর জল বিপদ সীমার ওপরে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ