তারেককে দেশে ফেরানোর চেষ্টা
২৭ মে ২০১৩অর্থ পাচার মামলায় আদালত দুদকের আবেদনে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করে৷ দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ডয়চে ভেলেকে জানান, প্যারোলে মুক্তি নিয়ে দেশের বাইরে চিকিত্সার জন্য গেলেও তারেক রহমান প্যারোলের শর্ত মানেননি৷ শর্ত হলো তিনি যে দেশে অবস্থান করবেন, সে দেশের বাংলাদেশি দূতাবাসে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন এবং প্রতি তিন মাস পর পর তাঁর স্বাস্থ্যগত অবস্থার রিপোর্ট পাঠাবেন৷ কিন্তু তিনি সে শর্ত মানেননি৷ তাই তাঁর প্যারোল আগেই বাতিল হয়৷ তাঁকে এর আগে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য বারবার পত্রিকার মাধ্যমে নোটিশ দেয়া হলেও তিনি হাজির হননি৷
সম্প্রতি জানা যায় তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন৷ তাই আদালতে দুদক গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারির আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে৷ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেছেন, তারেককে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফেরত আনার চেষ্টা করা হবে৷ দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, সরকার চাইলে নিয়ম মেনে এই গ্রেপ্তারি পরওয়ানা ইন্টারপোলে পাঠিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তারে সহায়তা চাইতে পারে৷
এর এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি-র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আইনগত বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি ডয়চে ভেলের কাছে৷ তবে তিনি বলেন, তারেক রহমান একজন রাজনীতিবিদ এবং বিএনপি-র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান৷ তাই তিনি চিকিত্সা শেষে দেশে ফিরে আসবেন এটাই স্বাভাবিক৷
তারেক রহমানের আইনজীবী এবং বিএনপি-র ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সরকার আদালত এবং দুদককে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে৷ তারেক রহমান যে উচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে দেশের বাইরে চিকিত্সার জন্য আছেন, তা বিচারিক আদালতকে জানানো সরকারের দায়িত্ব৷ তা না করে যখন তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাচ্ছেন তখন তাঁর প্যারোল বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করা হলো৷''
তিনি দাবি করেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তাঁর অনুপস্থিতিতে অর্থ পাচারের যে মামলা দায়ের করা হয়েছে, তারও কোনো ভিত্তি নেই৷ এই মামলাও তাঁকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির জন্য করা হয়েছে৷ তিনি আরও বলেন, সরকার যতই চেষ্টা করুক না কেন ইন্টারপোল কখনোই কোনো সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের কাজ করেনা৷ তাই তারেক রহমানকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফেরত আনার আশা সফল হবেনা বলে মনে করেন তিনি৷
২০০৯ সালের ২৬শে অক্টোবর দুদক তারেক রহমান এবং তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলা করে৷ সেই মামলায় মামুন গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন৷ দুদকের আইনজীবী মোশররফ হোসেন কাজল দাবি করেন, তারেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি এবং ইন্টারেপালের মাধ্যমে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার আবেদনের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই৷
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে লন্ডনে একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে তারেক রহমান প্রকাশ্যে সরকারের কড়া সমালোচনা করেন৷ এরপরই নভেম্বরে তিনি দেশে আসবেন বলে ঢাকায় জানান বিএনপি-র নেতারা৷ আর সরকার তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে আনার কথা বলছে৷