সন্ত্রাসবাদ বিরোধী মিছিল
১৬ জুন ২০১৭হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ কট্টরপন্থি ইসলামি ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে হিংসার পথ বেছে নিলে বৃহত্তর মুসলিম সমাজের কি তা মেনে নেওয়া উচিত? নীরব থেকে পরোক্ষভাবে সেই কাজে কার্যত সমর্থন জানানো হচ্ছে কি? নাকি সংখ্যাগুরু সমাজের শান্তিপ্রিয় মানুষ হিসেবে তার সক্রিয় বিরোধিতা করা উচিত? বিশ্বের অন্য অনেক দেশের মতোজার্মানিতেও এ নিয়ে বিতর্ক চলছে৷ জার্মানির কেন্দ্রীয় মুসলিম পরিষদ শনিবার কোলন শহরে সন্ত্রাবসাদের বিরুদ্ধে মিছিল-সমাবেশের আহ্বান জানিয়েছে৷ কিন্তু তার বিরোধিতা করছে তুর্কি ইসলাম সংগঠন ডিটিব৷
কেন্দ্রীয় মুসলিম পরিষদের সভাপতি আইমান মাসিয়েক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমাদের পথে নামতে হবে, নিজেদের দেখাতে হবে, সমাজের ঐক্য বজায় রাখতে ও শান্তির জন্য সংগ্রাম করতে হবে এবং উগ্রপন্থার নিন্দা করতে হবে৷'' তিনি আরও বলেন, তথাকথিত ইসলামিক স্টেট ও অন্যান্য উগ্রপন্থিরা তাদের হত্যালীলার মাধ্যমে সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়৷ তাদের বিরোধিতা করতে জার্মানির কেন্দ্রীয় মুসলিম পরিষদ শনিবার কোলন ও এক সপ্তাহ পর রাজধানী বার্লিনে সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি মিছিলে অংশ নেবে৷
জার্মানিতে তুর্কি সম্প্রদায়ের শক্তিশালী মসজিদ সংগঠন ডিটিব অবশ্য এই মিছিলের বিরোধিতা করছে৷ নীতিগতভাবে তারা সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করার পক্ষে হলেও যেভাবে দুই ব্যক্তির ব্যক্তিগত উদ্যোগে কোলন ও বার্লিন শহরে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে, তা তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাছাড়া ‘মুসলিম সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল' বললে সামগ্রিকভাবে মুসলিম সমাজের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ পায়৷ উল্লেখ্য, এক বিকল্প কর্মসূচির আওতায় শুক্রবার ডিটিব তাদের মসজিদগুলিতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ও শান্তির পক্ষে প্রার্থনাসভার আয়োজন করছে৷
তাদের এই অবস্থানের সমালোচনা করেছেন জার্মানির সবুজ দলের নেতা ফল্কার বেক৷ তাঁর মতে, এর মাধ্যমে ডিটিব সুশিল সমাজের অংশ হিসেবে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করছে৷ যারা ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে জার্মানিতে লক্ষ লক্ষ মুসলিমের প্রতিনিধিত্ব করতে চায়, তাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করা উচিত৷ কিন্তু ডিটিবের কাঠামো সেই দায়িত্ব পালনের উপযুক্ত নয়৷
শনিবারের মিছিলে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশ নেবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ কেন্দ্রীয় মুসলিম পরিষদ ছাড়াও তুর্কি সমাজ তাতে অংশ নিচ্ছে৷ বেশ কিছু খ্রিষ্টীয় সংগঠন, জার্মানির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির নেতা সেখানে উপস্থিত থাকবেন৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)