উদ্বাস্তুদের জন্য কড়া আইন
২৮ এপ্রিল ২০১৬সরকারি জোটের সামাজিক গণতন্ত্রী ও রক্ষণশীল সাংসদরা সহ মোট ৯৮ জন সাংসদ নতুন আইনের সপক্ষে ভোট দেন, বিপক্ষে পড়ে ৬৭টি ভোট৷ নতুন আইন অনুযায়ী, উদ্বাস্তু বা শরণার্থীদের আগমন হঠাৎ বাড়ার ফলে বা অতিমাত্রায় বাড়ার ফলে যদি ‘‘জাতীয় নিরাপত্তা'' বিপন্ন হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষ সংসদের অনুমতি নিয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন৷ এই জরুরি অবস্থা প্রাথমিকভাবে জারি হবে ছ'মাসের জন্য ও পরে আরো তিনবার, অর্থাৎ মোট দেড় বছর বাড়ানো চলবে৷
গত গ্রীষ্ম যাবৎ অস্ট্রিয়ায় প্রায় এক লক্ষ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর আগমন ঘটেছে৷ পরে অস্ট্রিয়া সরকার ঘোষণা করেন যে, ২০১৬ সালে মোট ৩৭,৫০০০ রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ করা হবে৷ বছরের প্রথম চার মাসে জমা পড়েছে প্রায় ১৬ হাজার আবেদন৷ সরকারের সর্বাধুনিক পদক্ষেপের পিছনে চলতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কট্টর দক্ষিণপন্থি এফপিএ বা স্বাধীনতা দলের প্রার্থীর বিপুল সাফল্যের একটা ভূমিকা থাকতে পারে, বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷
দিন দশেক আগে ভিয়েনার রাজপথে নাগরিকদের বিক্ষোভের ছবি: তারা একটি নতুন উদ্বাস্তু আবাস তৈরির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন৷ এভাবেই অস্ট্রিয়ার জনমানস ও সরকারে উদ্বাস্তু সংক্রান্ত মনোভাবের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন অথবা হিউমান রাইটস ওয়াচ-এর মতো মানবাধিকার সংগঠনগুলি যে ব্যাপারে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন৷ এমনকি বুধবারের অপর একটি খবর হল এই যে, অস্ট্রিয়া সম্ভবত দক্ষিণ ইউরোপ থেকে উত্তর ইউরোপ অভিমুখে মাল ও যাত্রী চলাচলের মূল পথ ব্রেনার পাসেও নিয়ন্ত্রণ আরো বাড়াতে পারে৷
ব্রেনার পাসে নাকি সপ্তাহ দুয়েক আগেই কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু হয়েছে৷ এখানে নাকি একটি ৩৭০ মিটার লম্বা ‘সিকিওরিটি ফেন্স' বা নিরাপত্তা বেড়া সৃষ্টির পরিকল্পনা আছে৷ উদ্দেশ্য হলো, ইটালি থেকে আসা গাড়ি ইত্যাদি কন্ট্রোল করা, কেননা তথাকথিত বলকান রুট বন্ধ হওয়ার পর উদ্বাস্তুরা আরো বেশি করে উত্তর আফ্রিকা থেকে ভূমধ্যসাগর পার হয়ে ইটালিতে পৌঁছে, সেখান থেকে উত্তরে আসার চেষ্টা করবে, বলে ভিয়েনা কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা৷
নতুন আইন অনুযায়ী জরুরি অবস্থা ঘোষিত হলে, সিরীয় উদ্বাস্তুদেরও সীমান্ত থেকে ফেরৎ পাঠানো চলবে – তবুও শিশুসন্তান সহ নারী উদ্বাস্তু, ও অভিভাবকবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক উদ্বাস্তুদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ উদ্বাস্তুর স্রোত সম্পর্কে মতামত যাই হোক না কেন, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক উদ্বাস্তুদের ভাগ্য যে ইউরোপের বিবেককে বিশেষভাবে নাড়া দিয়েছে ও দিচ্ছে, তার প্রমাণ বুধবার ব্রিটিশ সংসদের একটি বিতর্ক৷
এসি/ডিজি (রয়টার্স, ডিপিএ)
উদ্বাস্তুদের জন্য এমন কঠর আইন করাকে কি আপনি সমর্থন করেন? লিখুন নীচের ঘরে৷