‘করোনার র্যাপিড কিট শতভাগ সফল হবে’
২২ মার্চ ২০২০আক্রান্ত ব্যক্তির এক ফোঁটা রক্ত দিয়ে ১৫ মিনিটেই করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা যাবে৷ তাই গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত করোনা টেস্ট কিটের নাম রাখা হয়েছে ‘গণস্বাস্থ্য র্যাপিড ডট ব্লট'৷ এর দাম রাখা হবে ২০০ টাকা৷
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, তিন সপ্তাহের মধ্যে তিনি বাজারে নতুন এই কিট সরবরাহ করতে পারবেন৷ সেগুলো সাধারণ মানুষের সংগ্রহের সুযোগ থাকবে না৷ শুধু হাতপাতাল ও ক্লিনিকগুলোই কিনতে পারবে৷ প্রাথমিকভাবে এক লাখ কিট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা তাদের৷
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, প্রচলিত পিসিআর পদ্ধতির কারণে পরীক্ষায় কমপক্ষে পাঁচ দিন লাগে যা, তুলনামূলক ব্যয় সাপেক্ষ৷ কিন্তু র্যাপিড কিটে সময় এবং অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে৷
এই কিটের উদ্ভাবক গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান গবেষক ডা. বিজন কুমার শীল৷ ২০০৩ সালে তিনি সার্স ভাইরাস পরীক্ষার কিট উদ্ভাবন করেছিলেন বলে জানান জাফরুল্লাহ৷ তখন তিনি সিংগাপুরে গবেষণার কাজ করতেন৷
করোনা পরীক্ষার নতুন এই কিটের কার্যকারিতা হার কতভাগ এমন প্রশ্নের জবাবে, জাফরুল্লাহ বলেন সার্সের ক্ষেত্রে এটি শতভাগ ফলাফল দিয়েছে৷ করোনার ক্ষেত্রেও তা শতভাগ না হওয়ার কোনো কারণ নেই৷ ‘‘এখনও আমরা যে পরীক্ষা করেছি তার নমুনা সংখ্যা ছোট৷ তৈরি করার পর যখন আমরা এক হাজার স্যাম্পল করব তখন বলতে পারব এর ব্যর্থতার হার কতভাগ হতে পারে৷ তবে সেটা খুব কম হবে,’’ বলেন তিনি৷
ওষুধ প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, গণস্বাস্থ্যকে উৎপাদনের নয়, কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে৷ এর জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘‘কাঁচামাল এনে কি আমি বসে বসে চেহারা দেখব? আমি কি পূজা করবো না ভারতে পাঠাবো? আমি উৎপাদন করব৷ তাদের বোঝার ভুল আছে৷ তবে বাজারজাত করতে আমার অনুমতি লাগবে৷ উৎপাদনের পর এর কার্যকারিতা দেখে তারপর সেই অনুমতি দেয়া হবে৷’’
এই কিটের কাঁচামাল আনা হচ্ছে যুক্তরাজ্য থেকে৷ শনিবার ছুটির দিনেও এনবিআর এলসির প্রয়োজনীয় কাজ করে দিয়েছে৷ বিশেষ ব্যবস্থায় বুধবারের মধ্যে কাঁচামাল বাংলাদেশে আসবে৷ জাফরুল্লাহ বলেন, ‘‘আমরা সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহের মধ্যে এটা উৎপাদন করে বাজারে দিতে পারবো৷’’
তার মতে করোনা শনাক্ত করা না গেলে এর প্রতিরোধ সম্ভব নয়৷ আর সেক্ষেত্রে দ্রুত এবং সহজে শনাক্তের জন্য তাদের কিটটি ভূমিকা রাখবে৷
করোনা নিয়ে এখন যা করা প্রয়োজন
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মনে করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সীমানা আগেই বন্ধ করে দেয়া উচিত ছিলো৷ সেটি করা না হলেও যত দ্রুত সম্ভব এখন ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সিল করে দেয়া উচিত৷ আক্রান্ত ১৭০ টি দেশে ভারতীয় নাগরিক আছে৷ অন্যদিকে দেশটির সবচেয়ে বড় সীমান্তই বাংলাদেশের সঙ্গে৷
তার দৃষ্টিতে দেশের কারাগারগুলো করোনার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে৷ সেখানে যারা আছেন তাদের মধ্যে দাগি দণ্ডপ্রাপ্ত ও ফাঁসির আসামি ছাড়া আর সবাইকে প্যারোল বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে ছেড়ে দেয়া উচিত৷ আদালতে আইনজীবী, আসামি, বাদী-বিবাদীর উপস্থিতিও বন্ধ করার পক্ষে তিনি৷
এছাড়া মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় উপাসানালয় এখনই বন্ধ না করলেও সেখানে স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি৷