ইনফ্লুয়েন্সরদের প্রভাব কমছে না
৯ সেপ্টেম্বর ২০২১আন্দ্রেয়া ফুংক একজন ইনফ্লুয়েন্সর৷ আট বছর আগে তিনি নিজের লাইফস্টাইল ব্লগ শুরু করেছিলেন৷ এভাবে তিনি নিজের শখ পেশায় রূপান্তরিত করেছেন৷ প্রশ্ন হলো, ব্লগিং করে কীভাবে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব? নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আন্দ্রেয়া বলেন, ‘‘বিজ্ঞাপন বাবদ কিছু আয় হয়৷ কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানির হয়ে প্রচার করলে অথবা ইনস্টাগ্রামে সে বিষয়ে পোস্ট করলে, কোনো স্টোরি তৈরি করলে উপার্জন হয়৷ আমার মতো কোনো কোম্পানির জন্য লেখালেখি করাও একটা উপায়৷''
একবিংশ শতাব্দী ইনফ্লুয়েন্সর-মার্কেটিং-এর যুগ হয়ে উঠেছে৷ আন্দ্রেয়া ফুংক-এর মতো ব্লগার নিজেদের ফলোয়ারদের আস্থার উপর নির্ভর করেন৷ বিভিন্ন ব্র্যান্ড সেই আস্থার ফায়দা তুলতে চায়৷ আন্দ্রেয়া বলেন, ‘‘কোনো কোম্পানির সঙ্গে সহযোগিতার পথে গেলে ব্রিফিং-এর সময়ে গোটা সেটিং বিশ্বাসযোগ্য রাখার বিষয়ে মনে করিয়ে দেওয়া হয়৷ অর্থাৎ কোনো বিউটি প্রোডাক্ট দেখাতে হলে বাথরুম বা কমপক্ষে ফ্ল্যাটের কোনো জায়গা বেছে নিতে হবে৷ বিশ্বাসযোগ্য নয়, এমন কোনো সেটিং চলবে না৷''
মোটকথা কোম্পানিগুলি তাদের টার্গেট গ্রুপ বা সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে আরও ভালোভাবে পৌঁছতে খাঁটিত্বের উপর জোর দিচ্ছে৷ ২০২১ সালে গোটা বিশ্বে শুধু সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও ব্লগে বিজ্ঞাপনের পেছনে নাকি প্রায় ১০,০০০ কোটি ইউরো ঢালা হবে৷
কাটারিনা প্যার্লবাখ অনেক বছর ধরে নিজের ভ্রমণ ও লাইফস্টাইল ব্লগ লিখছেন৷ তাঁর কাজের উপর মহামারির গভীর প্রভাব পড়েছে৷ কাটারিনা বলেন, ‘‘অবশ্যই আগে প্রচুর ভ্রমণ করেছি৷ বছরে ১৫ বার ঘুরতে বেরিয়েছি৷ স্বাভাবিকভাবেই খুব বেশি মানুষ এমনটা করে না৷ আর এখন কত মাস ধরে কোলন শহরে নিজের বাসায় বসে আছি৷''
তবে এমন কঠিন সময়েও তিনি নতুন গ্রাহক খুঁজে পাচ্ছেন৷ তিনি জার্মানির প্রচলিত নিয়ম মেনে নিজের ব্লগকে বিজ্ঞাপন হিসেবেই তুলে ধরেন৷ তা সত্ত্বেও তাঁর ফলোয়াররা বার বার জানতে চান, যে এত সুন্দর ভ্রমণ ও হোটেলের খরচ কীভাবে মেটান৷ কাটারিনা প্যার্লবাখ বলেন, ‘‘আমি নিজে কিছুই ‘ফেক' করি না, কারণ আমি সবকিছু বার বার বুঝিয়ে বলি৷ কিন্তু কখনো মনে হয় যে মানুষ আসলে নিজের মস্তিষ্ককেই ফাঁকি দিতে ভালোবাসে৷ তাদের মনে হয় ভ্রমণ মানেই ছুটি কাটানো, আরাম তো বটেই৷ মনে হয়, মানুষ এমন মায়াময় জগত পছন্দ করে৷''
ইনস্টাগ্রামে কি আদৌ ফিল্টার ছাড়া কিছু পোস্ট করা যায়? সেটা বোধহয় সত্যি কঠিন৷ আন্দ্রেয়া ফুংকের ফলোয়ারের সংখ্যা এরই মধ্যে ৭০ হাজার পেরিয়ে গেছে৷ তবে নিজের আয় সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে নারাজ৷ সপ্তাহে কমপক্ষে চার বার তিনি পোস্ট করেন৷ আন্দ্রেয়া বলেন, ‘‘অবশ্যই মানুষ তখনই নিজের ছবি তোলে, যখন মন ভালো থাকে, সময়টা ভালো যায়, অন্যদের কিছু জানাবার তাগিদ জন্মায়৷ কান্নাকাটি করে চোখ ফুলে গেলে তো কেউ ক্যামেরার সামনে যেতে চায় না! তবে অবশ্যই দ্রুত একটা ধারণা জন্মায় যে জীবনে সব কিছু সুন্দর৷ কারণ কেউ তো আর অন্য দিক বাকিদের দেখাতে চায় না৷''
একইসঙ্গে সুন্দর ও খাঁটি হলেই হলো৷ সেটা আসল না ‘ফেক' তা নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই৷
মার্টা গ্রুন্ডসিনস্কা/এসবি